কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
আয়কর দপ্তর সূত্রের খবর, রাজ্যের ইনভেস্টিগেশন বিভাগের বেশ কয়েকজন অফিসারের সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করেছে পুলিস। তাঁদের ঘনিষ্ঠ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা সিএ’দের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। চাওয়া হয়েছে কাগজপত্র। উদ্দেশ্য একটাই, কান টানলে যাতে মাথা আসে। অর্থাৎ আয়কর দপ্তরের অফিসারদের একাংশ ওই সিএ’দের মাধ্যমে হাওলায় ঘুষের টাকা খাটান কি না, সেটা খতিয়ে দেখা। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলের একটা বড় অংশ এটাও মনে করছে, আয়কর দপ্তর ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট বিভাগ যেভাবে রাজ্যের একাধিক জায়গায় হানা দিচ্ছে, ধরপাকড় চালাচ্ছে, তার মোকাবিলায় রাজ্য পুলিসের এই সক্রিয়তা।
আয়কর দপ্তরে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের যাতায়াত থাকে। মূলত দু’টি কারণে তাঁদের এই যাতায়াত। এক, কর ফাঁকিতে অভিযুক্তদের মক্কেল হিসেবে ধরতে। দুই, মক্কেলদের নামে আয়কর দপ্তর থেকে পাঠানো নোটিসের মীমাংসা করতে। সেই সুবাদে সরকারি কর্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে সিএ’দের। দপ্তরের ভিতরের খবর, কোটি কোটি টাকা কর ফাঁকির মামলায় অসৎ অফিসাররা মোটা উৎকোচ নিয়ে থাকেন। সেই টাকা তাঁরা হাওলায় খাটান ওই সিএ’দের মাধ্যমেই। কারণ কোথায়, কীভাবে টাকা খাটালে সমস্যায় পড়তে হবে না, অথচ চুটিয়ে সেই লেনদেনের সুফল ভোগ করা যাবে, তার হালহদিশ দিতে পারেন সিএ’রাই। আয়কর দপ্তরের দেওয়ালে কান পাতলেই এই বেআইনি কারবারের অভিযোগ শোনা যায়। বিষয়টি নিয়ে তিতিবিরক্ত কেন্দ্রীয় সরকারও। ইনভেস্টিগেশন বিভাগে এই ‘ঘুঘুর বাসা’ ভাঙতে মাস কয়েক আগে চালু হয়েছে ‘ফেসলেস অ্যাসেসমেন্ট’। অর্থাৎ আয়করদাতা এবং কর নির্ধারক অফিসার কেউ কাউকে চিনবেন না। তাঁরা মুখোমুখি হবেন না। নোটিস পাঠানো, তার উত্তর বা জিজ্ঞাসাবাদ—সবই হবে অনলাইনে, ই-পেপারে।
সূত্রের খবর, এরাজ্যের শাসকদলের এক অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতার আইনজীবী পুলিসকে তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন, কোন কোন সিএ’র মাধ্যমে আয়কর দপ্তরের অফিসারদের টাকা হাওলায় খাটে। সেই সূত্র ধরেই মোট ১০ জন সিএ’কে গত সপ্তাহে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিস। সেই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, বছর কয়েক আগে যখন নামজাদা পুজো কমিটিগুলির কাছে আয়করের নোটিস পাঠানো হয়েছিল। তারপর এভাবেই চারজন সিএ’কে ডেকে জেরা করেছিল পুলিস। একুশের ভোটে বাংলা পাখির চোখ বিজেপির। কিন্তু শাসকদলের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে মোকাবিলা করে কুর্সি দখল খুব সহজ নয়। সেটা এখন হাড়েহাড়ে বুঝতে পারছে গেরুয়া শিবির। তাই দিল্লির সরকার নানা এনফোর্সমেন্ট এজেন্সিকে দিয়ে রাজ্যকে বিব্রত করতে চায় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে প্রায়ই উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়লা পাচার কাণ্ডেও নিজের অসন্তোষের কথা গোপন রাখেননি তিনি। একই সঙ্গে ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’র প্রবক্তার নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারের আয়কর দপ্তর যে ধোয়া তুলসিপাতা নয়, সেটাও সমঝে দিতে চায় রাজ্য। এখন দেখার, সিএ’দের জিজ্ঞাসাবাদের সুদূরপ্রসারী ফল কী হয়।