পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
দীপাবলি মানে আলোর উৎসব। এবার বাজি নেই। তবে মোমবাতি বা প্রদীপ তো আছে। দুধের সাধ ঘোলে মেটানোর প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। বাড়াবাড়ি রকমের চাহিদা না-থাকলেও মোমনির্ভর শিল্প যে বাজার দখল করতে কোমর বাঁধবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে মোমবাতি ও প্রদীপ নির্মাণকারী এবং ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বাজি নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে অনেকেই মোমবাতি কেনার উপর জোর দিচ্ছেন।
কোভিড আবহে সমস্ত শিল্পে অর্থনৈতিক ধাক্কা চরমে। মোমবাতি তৈরি করতে প্রচুর পরিমাণ সুতোর প্রয়োজন হয়। পশ্চিমবঙ্গ মোমনির্ভর শিল্পের কোষাধ্যক্ষ রঞ্জন মণ্ডল জানিয়েছেন, আগের চেয়ে সুতোর দাম অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। তবে সেই অনুযায়ী মোমবাতির দাম বাড়ানো সম্ভব নয়। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে সমস্ত সামগ্রীর চাহিদা কমে গিয়েছে। বাদ যায়নি মোমবাতি, প্রদীপ। তাই মোমবাতির দাম বৃদ্ধি করলে চাহিদা আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রঞ্জনবাবু বলেন, এই পরিস্থিতিতে বাজারে মোমবাতির যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে তাতে নির্মাণকারীরা আশ্বস্ত। তবে অত্যধিক মুনাফার কথা চিন্তা করছেন না প্রস্তুতকারকরা। ন্যূনতম দামেই বাজার দখলের চেষ্টা তাঁদের। মোমবাতির দাম শুরু হয়েছে পাঁচ টাকা থেকে। বড় ডিজাইনার মোমবাতিও রয়েছে বাজারে। ৫০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে ভিন্ন ধরনের মোমবাতি।
বাজিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার ফলে নিত্যনতুন মোমবাতি এবং প্রদীপে ছেয়ে আছে শহরের বিভিন্ন বাজার। চাঁদনি বাজার ঘুরে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন রঙের সুগন্ধী মোমবাতি বিক্রি হচ্ছে। ৫০-৬০ টাকা প্যাকেট। তাতে রয়েছে ১০টি মোমবাতি। বিক্রি চলছে দেদার। মোমবাতি বিক্রেতা সোহেল বলেন, রবিবারে বিক্রি-বাটা ভালোই হয়েছে। ক্রেতাদের মধ্যে যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। ফুলঝুরি, রংমশাল, তুবড়ি নেই তো কী হয়েছে। হরেক রকমের মোমবাতি ক্রেতাদের চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে।
উত্তর কলকাতা রবীন্দ্র সরণির দু'ধারে পসরা সাজিয়ে বসেছেন মোমবাতি, প্রদীপ বিক্রেতারা। প্রত্যেকের ডালায় রয়েছে রঙিন, নকশাযুক্ত প্রদীপ। প্রায় ৫০-৬০ রকমের প্রদীপ বিক্রি চলছে। ২ টাকা থেকে শুরু হয়েছে প্রদীপের দাম। নকশা এবং রং অনুযায়ী ২৫ টাকা পর্যন্ত রয়েছে এক-একটি প্রদীপ। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কালীপুজোর আগে পর্যন্ত ভালো ব্যবসার আশা রাখছেন তাঁরা। এক বিক্রেতা বুলটি মাঝি জানিয়েছেন, ‘চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ রকমের প্রদীপ নিয়ে বসেছি। এখনও পর্যন্ত চাহিদা সর্বোচ্চ সীমায় না উঠলেও আগামী কয়েকদিনে মোমবাতি, প্রদীপের ব্যবসা ভালোই জমতে পারে।’ রবিবারের বাজারে চাঁদনি বাজার এবং রবীন্দ্র সরণী এলাকার বহু মানুষকে কেনাকাটা করতে দেখা গিয়েছে। ক্রেতা অরুণাংশু দাস জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে ঘটা করে কালীপুজোর আয়োজন করা হয়। প্রায় ৬০০-৮০০ প্রদীপ প্রয়োজন হয়। তবে এ বছর সংখ্যাটা প্রায় অর্ধেক করে দিতে হয়েছে। ৩০০ পিস প্রদীপ কিনতে খরচ পড়েছে ৬০০ টাকা। সব মিলিয়ে কালীপুজোর প্রাক্কালে বাজার জমাতে মোমবাতি, প্রদীপ একেবারে প্রস্তুত।