গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
গত ৭ আগস্ট কলকাতা সহ গোটা দেশেই রেকর্ড গড়েছিল সোনার দাম। ওই দিন শহরে ২৪ ক্যারেট সোনার ১০ গ্রামের দর পৌঁছে যায় ৫৬ হাজার ৯৬০ টাকায়। লাগাতার দামবৃদ্ধির এই প্রবণতা শুরু হয়েছিল গত মার্চ মাস থেকেই। লকডাউন-আনলকের ক’মাসের তফাতে ১০ হাজার টাকারও বেশি দাম বেড়ে যায় সোনার। রুপোর দরও ঊর্ধ্বমুখী ছিল তখন থেকেই। ৭ আগস্ট তার দর ছিল কেজি পিছু ৭৫ হাজার টাকা। কিন্তু শেষ ২০ দিনে ছবিটা উল্টে গিয়েছে। বিগত কয়েক দিনের মধ্যে গত ২৬ আগস্ট সবচেয়ে নীচে নামে সোনার দর। ওই দিন ২৪ ক্যারেট হলুদ ধাতুর ১০ গ্রামের দর ছিল ৫১ হাজার ৭৬০ টাকা। কেজি প্রতি ৬৪ হাজার টাকায় নামে রুপো।
মার্চ মাস থেকে এই দুই ধাতুর লাগাতার দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা দায়ী করেছিলেন করোনাকেই। গোটা বিশ্বের আর্থিক অবস্থা টালমাটাল। শেয়ারবাজারেও দোলাচল ছিল অব্যাহত। ফলে বিনিয়োগকারীরা তুলনামূলক কম ঝুঁকির লগ্নি হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন সোনাকে। সোনা ও রুপোয় যত বেশি বিনিয়োগ হয়েছে, ততই দাম চড়েছে। তাতে আরও ইন্ধন জোগায় আমেরিকা ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক সংঘাত।
এদেশে অবশ্য সোনার দাম আরও খানিকটা বেড়ে যাওয়ার কারণ জিএসটি এবং আমদানি শুল্ক। সোনায় তিন শতাংশ হারে জিএসটি চালু আছে। পাশাপাশি শুল্কের হার ১২.৫ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোনা লেনদেন বেশি হয়, এমন দেশগুলির মধ্যে এত চড়া আমদানি শুল্ক আর কোথাও নেই। তাই সোনা কিনতে বেশি দাম চোকাতে হয় ভারতকে। সেই সঙ্গে টাকার দাম কমার বিষয়টিও রয়েছে। ডলার পিছু বেশি টাকায় সোনা কিনতে হয় এদেশকে। তারও প্রভাব পড়ে খুচরো ও পাইকারি বাজারে।
সেই পরিস্থিতি তো এখনও বদলায়নি। তাহলে কেন কমল সোনার দাম? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর কারণও সেই বাজারের অস্থিরতা। তাই দাম কমলেও তা বজায় থাকবে কি না, হলফ করে বলতে পারছেন না কেউ। বরং তাঁদের আশঙ্কা, ক’দিন রেহাই দিয়ে ফের উপর দিকে উঠতে পারে সোনার দর। কারণ প্রথমত, মার্কিন ডলারের দাম কিছুটা কমতির দিকে। বিশ্ববাজারে সেই সুযোগ নেবে বিনিয়োগকারীরা। সোনায় বিনিয়োগ ফের বাড়বে। দ্বিতীয়ত, আমেরিকায় সুদের হার আপাতত কম থাকার ইঙ্গিত মিলেছে। তাই বিকল্প হিসেবে ফের সোনায় লগ্নি বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রেও দাম বাড়া স্বাভাবিক। তৃতীয়ত, চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই বিশ্ববাজারে সোনার যা দর উঠেছে, তা গত দু’সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সেই ঢেউ এসে পড়বে দেশীয় বাজারেও। এমনকী, ফিউচার মার্কেট, অর্থাৎ যেখানে ভবিষ্যতে পণ্য কেনার জন্য আগাম দাম ঠিক করা হয়, সেখানেও একটু একটু করে বাড়ছে সোনার দর। সেটাও সেই দর বৃদ্ধিরই ইঙ্গিত, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
একই মত সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের সিইও শুভঙ্কর সেনের। তিনি বলেন, পরিস্থিতি যা চলছে, তাতে সোনার দামের এই দোলাচল আপাতত বজায় থাকবে। তাই সাধারণ মানুষের কাছে সোনায় বিনিয়োগ করার জন্য এটা ভালো সময়। এই সুযোগকে কাজে লাগালে ভবিষ্যতে লাভ হবে। কয়েক মাস আগেও যাঁরা বিনিয়োগ করেছেন, তাঁরা এখন সুফল পাচ্ছেন।