রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, ওই এলাকার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে ময়ূরাক্ষী নদী। এছাড়াও কুয়ে নদী চলে গিয়েছে ভরতপুর থানার উপর দিয়ে। এলাকায় বৈধ ও অবৈধ মিলিয়ে শতাধিক বালিঘাট রয়েছে। বালি ঘাটগুলির উপর রুজি রোজগার নির্ভর করে এলাকার কয়েক হাজার শ্রমিকের। কিন্তু লকডাউনের জেরে সবকটি বালিঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ফলে কর্মচ্যুত হয়েছেন এলাকার কয়েক হাজার শ্রমিক। সুন্দরপুর গ্রামের জাফর আলি বলেন, বালিঘাটে কাজ করে দিনে ৪০০টাকা পর্যন্ত প্রতিদিন রোজগার হতো। কিন্তু এখন বেকার হয়ে বসে আছি।
জাফর আলির মতো অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। এখন কয়েকজন অবশ্য বাজারে সব্জি বিক্রি করছেন। তাঁরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বালিঘাটে কাজ করার দাবি জানিয়েছেন। বড়ঞার ঝিকরহাটি গ্রামে স্বপন ভল্লা বলেন, বালিঘাটের কাছে আমার হোটেল রয়েছে। বালির গাড়ির চালক ও শ্রমিকরা দোকানে খেতে আসেন। কিন্তু লকডাউনের জেরে প্রায় দেড় মাস দোকান খুলতে পারিনি। এখন সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। ডাকবাংলা গ্রামের সামসুল হক বলেন, দেড় মাস ধরে বালিঘাট বন্ধ থাকায় এলাকার কয়েক হাজার শ্রমিক ঘরে বসে রয়েছেন। রোজগার না থাকায় তাঁরা চরম সমস্যায় পড়েছেন। সরকার তথা প্রশাসন তাঁদের কথা ভেবে দ্রুত বালিঘাট চালু করুক। প্রয়োজনে পুলিসি নজরদারি থাকুক। বৈধ বালিঘাট থেকে সরকার রাজস্বও পাবে।
আবার বালির অভাবে এলাকার কয়েক হাজার রাজমিস্ত্রি কাজ করতে পারছেন না। রাজমিস্ত্রিদের একাংশ জানান, অনেক গৃহস্থের ঘরে রড, সিমেন্ট, পাথর মজুত রয়েছে। কিন্তু বালির অভাবে কাজ করতে পারছেন না। বালি থাকলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে পারতেন। এদিকে বালির অভাবে সরকারি কাজগুলিও অসমাপ্ত হয়ে রয়েছে। কান্দি মহকুমা ঠিকাদার সংস্থার সূত্রে জানানো হয়েছে, লকডাউন চলাকালীন বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর সরকারি নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওয়ার্কঅর্ডার মোতাবেক আমরা কাজ শেষ করতে পারলে পেমেন্ট পেতে পারি। কিন্তু বালির অভাবে কাজ করা যাচ্ছে না। বড়ঞার ঠিকাদার সবুজ ইসলাম বলেন, লকডাউন উঠলেও বালির অভাবে কাজ শুরু করতে পারব না। কারণ এখন বালিঘাট বন্ধ। এরপর বর্ষা নামলে বালিও তোলা যাবে না। বালির অভাবে যেমন কাজ করা যাচ্ছে না তেমনই মজুত করে রাখা অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী পড়ে নষ্ট হচ্ছে।
এব্যাপারে বড়ঞা ব্লক তৃণমূল সভাপতি গোলাম মুর্শিদ বলেন, বালিঘাট বন্ধ থাকার কারণে প্রচুর মানুষ কাজ হারিয়েছেন। কিন্তু প্রাণে বাঁচার তাগিদে তাঁদের এই সমস্যা মানিয়ে চলতে হবে। রাজ্য সরকারের প্রতি ভরসা থাকা প্রয়োজন। নিশ্চয়ই সরকার এই সমস্যা সম্পর্কে অবগত আছে। ভরতপুর-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি নুর আলম বলেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে বৈধ বালিঘাটগুলিতে কাজ করা যেতে পারে। তবে এজন্য সরকারি নির্দেশ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এটা ঠিক যে, বালির অভাবে নির্মাণ কাজ একেবারে বন্ধ হয়ে রয়েছে। অনেকে কর্মচ্যুত হয়েছেন।