কর্মলাভের যোগ আছে। ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা জুটবে। ... বিশদ
এদেশে তিন চাকার গাড়িতে পরিবেশবান্ধব ব্যাটারি লাগিয়ে চালানোর পেটেন্ট ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর পান কণিষ্ক সিনহা। ফলে এমন গাড়িতে অন্য সব গুণমান বজায় থাকলেও, পেটেন্ট-ফি না দেওয়া থাকলে তা বেআইনি বলে বিবেচিত হবে। তিনি ২০১৪ সালে পেটেন্টের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি হাইকোর্ট তার ভিত্তিতে প্রশাসনকে বলেছিল, বেআইনি ই-রিকশ বা টোটোর চলাচল বন্ধ করতে হবে। কিন্তু, তা কার্যকর হয়নি। অন্যদিকে পেটেন্ট-ফি না দেওয়া টোটোর রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল। সেই প্রক্রিয়াকে সামনে রেখে কণিষ্কবাবু আলিপুর আদালতে ভারত সরকার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সহ দেশের সব অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পক্ষভুক্ত করে বিশেষ মামলা করেন।
সেই মামলার বয়ান অনুযায়ী, প্রতিটি টোটোর পেটেন্ট-ফি বাবদ তাঁর সংস্থার পাঁচ হাজার টাকা প্রাপ্য। কিন্তু, তা না দিয়ে এবং হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসরণ না করে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১১,১৪২টি টোটোর রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। ফলে তাঁর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা। এভাবে রেজিস্ট্রেশন চলতে থাকলে সেই ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। তিনি চান, নথিভুক্ত টোটোর হিসেব ও তথ্য দেওয়া হোক। একইসঙ্গে টোটো রেজিস্ট্রেশনে সাময়িক ও বাধ্যতামূলক স্থগিতাদেশ জারি করা হোক। কিন্তু, তাঁর এই আবেদন নিম্ন আদালতে খারিজ হওয়ায় তিনি হাইকোর্টে যান।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট জানায়, নিম্ন আদালতে রাজ্য সরকার কোনও লিখিত আপত্তি জানায়নি। তাও বিচারক সেখানে বলেছেন, পেটেন্ট স্বার্থ লঙ্ঘিত হওয়া নিয়ে কোনও লিখিত বক্তব্য আবেদনে নেই। অথচ পেটেন্ট স্বার্থে নির্দিষ্টভাবে হস্তক্ষেপ হওয়ার স্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তাই বিচারকের অভিমত সঠিক নয়। বেঞ্চ আরও জানায়, কোনও পক্ষের হয়ে নয়া মামলা রুজু করা আদালতের কাজ নয়। বিস্মিত হাইকোর্ট এও বলেছে, সাময়িক স্থগিতাদেশ চেয়ে হওয়া মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে নিম্ন আদালত নিজেই কী করে প্রশ্ন তোলে। এই প্রেক্ষাপটে নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্ত খারিজ করে বেঞ্চ বলেছে, হাইকোর্টের রায় হাতে পাওয়ার এক মাসের মধ্যে কণিষ্কবাবুর সাময়িক স্থগিতাদেশ চেয়ে করা আবেদনের নতুন করে শুনানি করতে হবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এর পরিপ্রেক্ষিতে আলিপুরের অতিরিক্ত জেলা বিচারক তাঁর রায়ে বলেছেন, রাজ্য সরকার শুনানিতে অনুপস্থিত। শুনানি স্থগিত রাখার জন্য রাজ্যের তরফে কোনও লিখিত আবেদনও নেই। তাই এই বিশেষ মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আবেদনকারীর পেটেন্ট স্বার্থ কোনওভাবে ক্ষুন্ন করা যাবে না। সেইসঙ্গে ব্যাটারিচালিত ই-রিকশ’র রেজিস্ট্রেশনও করা যাবে না।