দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, আর্থিক মন্দা এড়াতে গ্রামীণ শিল্পের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ জরুরি। সেটা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা অত্যন্ত উপযোগী। এদিন মমতা বলেন, বাংলায় তাঁতজাত সামগ্রীর উৎপাদন ১৭ শতাংশ এবং খাদি সামগ্রীর উৎপাদন ৩০ গুণ বেড়েছে। তাঁর কথায়, আর্থিক সঙ্কট ও মন্দায় ভুগছে দেশ। তার মধ্যে থেকেও বাংলা বেঁচেছে, কারণ ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপর আমরা বেশি জোর দিয়েছিলাম। ৫২৮টি কর্মতীর্থের মাধ্যমে বাংলার গ্রামীণ শিল্পীদের কাজের সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে (এমএসএমই সেক্টর) বাংলা এখন দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে।
এমএসএমই সেক্টর যে এখন অগ্রাধিকারের তালিকায়, তার প্রতিফলন ঘটেছে কনক্লেভের শেষ দিনে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মেটিয়াবুরুজ, রবীন্দ্রনগর, চট্টা ও মহেশতলা সহ সন্নিহিত অংশে পোশাক তৈরি ও তা রপ্তানির কারবার বড়মাত্রায় চলে। এই কারবারকে আরও সুসংহত করতে এবং বিশ্বের বাজারে তা তুলে ধরতে নুঙ্গিতে তৈরি হচ্ছে ‘অ্যাপারেল হাব’। এদিন মুখ্যমন্ত্রী সেই হাবের শিলান্যাস করেন। অর্থমন্ত্রী ডঃ অমিত মিত্র বলেন, ১১ লক্ষ বর্গ ফুট এলাকা নিয়ে ওখানে তৈরি হবে পোশাক তৈরির ১৫০টি ইউনিট। থাকবে এক হাজার ট্রেডিং হাব ও বিভিন্ন সংস্থার তৈরি পোশাকের ৩৫০টি ডিসপ্লে সেন্টার। অর্থমন্ত্রীর দাবি, সেখানে প্রায় ১৬ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এদিনই আবার বীরভূমের বোলপুরের স্থানীয় হস্তশিল্পীদের উৎপাদিত সামগ্রীর বিপণন কেন্দ্র ‘বিশ্ব ক্ষুদ্র বাজার’-এর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তৈরি হওয়া ৫০টি স্টলের অধিকাংশই মহিলা উদ্যোগীদের। মঞ্চে তাঁদের কয়েকজন প্রতিনিধিকে ডেকে বাহবাও দেন মমতা।
এসবের সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী এদিন উদ্বোধন করেছেন পূর্ব বর্ধমানের ভেদিয়াতে কাঁথাস্টিচ ম্যানুফ্যাকচারিং ক্লাস্টার, নদীয়ার বীরনগরে মৃৎশিল্পের কমন প্রোডাকশন সেন্টার, বাঁকুড়ার শুশুনিয়ায় পাথর থেকে তৈরি সামগ্রীর কমন প্রোডাকশন সেন্টার এবং শিলিগুড়িতে রিজিওনাল ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোগীদের ‘ফেসিলাইজেশন সেন্টার’। মমতার উপস্থিতিতে এদিন কেন্দ্রীয় সংস্থা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফরেন ট্রেডের সঙ্গে মউতে আবদ্ধ হয়েছে রাজ্যের এমএসএমই দপ্তর। বাংলার গ্রামীণ শিল্পীদের উৎপাদিত সামগ্রীকে বিশ্বের বাজারে তুলে ধরতে এই মউ সহায়ক হবে বলে বিজনেস এনক্লেভ উদ্যোক্তাদের বিশ্বাস।
দেশ-বিদেশের উদ্যোগীদের সামনে এদিন ফের বাংলায় বিনিয়োগ করার প্রস্তাব উত্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন ব্যবসা করতে গেলে কী ঝঞ্ঝাট! কত হুমকি, কত ধমক, কত ট্যাক্স! ইনকাম ট্যাক্স, কাস্টমস ট্যাক্স তো ছিলই, এখন আবার ভয় দেখাতে সিবিআই ট্যাক্স! এর থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে। তবেই ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। যেখানে ভয়, ধমক আর হুমকি নেই, শান্তি রয়েছে, সেখানেই বিনিয়োগ করুন। মমতা বলেন, বাংলাই সেই জায়গা। এখানে কোনও সমস্যা নেই। পরিবারে সবাই একসঙ্গে থাকলে, মাঝেমধ্যে ঝামেলা হয়, আবার মিটেও যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এখানে দরজায় কড়া নেড়ে কেউ বলবে না—গেট আউট, গেট আউট।