সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধা-বিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
গত ২২ জুলাই সন্ধ্যায় সল্টলেকে বিএসএনএলের যে অফিসে আগুন লাগে, তা ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের প্রচেষ্টায় আয়ত্তে এসেছিল। ওই অফিসটি পূর্ব ভারতের সব ক’টি রাজ্যের মোবাইল ডেটা সেন্টার হিসেবে কাজ করত। সেখানে আগুন লাগার ফলে লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প ব্যবস্থায় পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও, তাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। বহু জায়গাতেই বিএসএনএল গ্রাহকদের মোবাইল ফোনের সংযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীকালে সংযোগ ফিরলেও, স্বাভাবিক পরিষেবা ঠিকমতো দেওয়া যায়নি।
যাঁরা ওই আগুন লাগার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে উদ্যোগী হয় বিএসএনএলের কলকাতা সার্কেল। তারা এই সংক্রান্ত একটি ফাইল দিল্লিতে পাঠায়। সম্প্রতি সেই বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত এসেছে। এখানকার কলকাতা সার্কেলের প্রিন্সিপাল জেনারেল ম্যানেজার (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) সৌমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের জানানো হয়েছে, যাঁরা ২২ জুলাই থেকে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে বিএসএনএলের রিচার্জ করিয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণ মিলবে তিনদিনের জন্য। ওই তিন দিন যে কোনও মোবাইলে আনলিমিটেড, অর্থাৎ যত খুশি কথা বলতে পারবেন গ্রাহক। তিনদিনে ৫০০ এসএমএস করতে পারবেন তিনি। প্রতিদিন এক জিবি করে, তিন জিবি ডেটা খরচ করতে পারবেন তিন দিন। তবে কত জনকে ওই সুবিধা দেওয়া হবে, তার তালিকা আমাদের কাছে নেই। নোডাল অফিস, অর্থাৎ ডেটা রাখা হয় যে অফিসে, সেখানে জানতে চাওয়া হয়েছে, কত জন ওই সময়ের মধ্যে মোবাইল ফোন রিচার্জ করেছেন। সেই তালিকা পেলেই আমরা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করব। তবে দপ্তরেরই এক কর্তা বলেন, কলকাতা সার্কেলের আওতায় দিনে গড়ে প্রায় ২৫ হাজার মোবাইল রিচার্জ হয়। সেক্ষেত্রে পাঁচ দিনের হিসেবে প্রায় ১ লক্ষ গ্রাহক ওই সুবিধার আওতায় আসতে পারেন বলে দাবি করেছেন তিনি। কিন্তু যাঁরা রিচার্জ করেছেন, তাঁদেরই কেন শুধু ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে? যে লক্ষ লক্ষ গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ওই আগুনের জেরে, তাঁরা কেন সুবিধা পাবেন না? ওই কর্তার দাবি, যাঁরা সেই সময় কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে যে যে দাবি করেছেন ও আর্থিক পরিষেবা নিয়ে সমস্যার কথা বলেছেন, তাঁদের যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে সেই সমস্যার সামধান করার। সেই জন্যই আপাতত রিচার্জ করে যাঁরা ভুক্তভোগী হয়েছেন, তাঁদের জন্যই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিএসএনএলের এখন ঘোটি ডোবে না, নামে তালপুকুর অবস্থা। ১০০ শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির আর্থিক অবস্থা এতই খারাপ, স্থায়ী কর্মীদেরই মাইনে হওয়ার দিনক্ষণের ঠিক-ঠিকানা নেই। সাতমাসের উপর বেতন নেই ঠিকাদারি সংস্থার আওতায় থাকা কর্মীদের। তাঁদের কর্মবিরতির জেরে লাটে উঠেছে পরিষেবা। এই পরিস্থিতিতে গ্রাহকের ক্ষোভের আঁচে জল ঢালতে নাস্তানাবুদ হচ্ছেন কর্তারা। তারই মধ্যে এই ক্ষতিপূরণের উদ্যোগ গ্রাহকের মুখে কতটা হাসি ফোটায়, সেটাই দেখার।