হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
সম্প্রতি শহরের বুকে একটি পর্যটন উৎসবে বেশ কয়েকটি পর্যটন সংস্থা ইলিশ পার্বণের জন্য বুকিং শুরু করেছে। সেখানেই প্রচার চলছিল, স্পট বুকিংয়ে ২০ শতাংশ ছাড়। বছরভর পাটায়া-ব্যাংকক-গ্রিস-বা কুয়ালালামপুর ট্যুর করা সংস্থাও প্রচার চালাচ্ছিল, তারাও এবার সুন্দরবনে পাড়ি দেবে ইলিশের স্বাদ দিতে। ধরা যাক, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের একটি ট্যুর অপারেটর সংস্থার কথাই। আগামী আগস্টে দু’দফায় তিনদিনের ইলিশ উৎসবের বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করেছে তারা। জিভে জল আনা মেনু কার্ড। তিনদিনের উৎসবে আছে ইলিশের ভাপা, বেগুন ইলিশ, ইলিশের মাথা দিয়ে কচুশাক, সরষে ইলিশ, দই ইলিশ আর ইলিশের টক। সঙ্গে আছে চিকেন পকোড়া, চিলি চিকেন, খাসির মাংস, চিংড়ির মালাইকারি সহ হরেক আয়োজন। নন-এসি ঘরে ওই উৎসবে শামিল হওয়ার দক্ষিণা চার হাজার টাকা। এসি ঘর হলে, তার খরচ পাঁচ হাজার টাকা। ট্যুর প্যাকেজে আছে সুন্দরবন লঞ্চে ভ্রমণ। দক্ষিণ কলকাতার বাবুবাগান এলাকার একটি পর্যটন সংস্থা সুন্দরবন নিয়ে যাচ্ছে ইলিশ খাওয়াতে। দক্ষিণা সাড়ে চার হাজার টাকা থেকে সাড়ে ছ’হাজার টাকা। খাওয়াদাওয়া, জল-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো তো আছেই, সঙ্গে থাকছে নাচগানের আসর। দীঘা-তাজপুর-মন্দারমণিজুড়েও চলছে বেশ কয়েকটি ইলিশ পার্বণ। স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতেই বুকিং বেশি হচ্ছে।
পর্যটন সংস্থার কর্তারা বলছেন, বর্ষা পড়লে পর্যটনের দফারফা। সেই মন্দা কাটাতেই তাঁরা কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে ইলিশ উৎসবের আয়োজন করছেন। কিন্তু ইলিশ মিলবে কি? ট্যুর অপারেটরদের অন্যতম সংগঠন ট্রাভেল এজন্টেস অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জন বসু বলেন, যেখানে উৎসবের শিরোনামে ইলিশ, সেখানে অন্তত প্রমাণ সাইজের মাছ থাকবে, এটা তো পর্যটক আশা করতেই পারেন। যে অপারেটররা প্যাকেজ করছেন, তাঁরাও চাইবেন সেরার সেরা জিনিস দিয়েই পর্যটককে আপ্যায়ন করতে। অন্তত সাত-আটশো গ্রামের ইলিশ না হলে মান থাকে না। তবে বৃষ্টি ফের পড়তে শুরু করেছে। আগস্টেই যেহেতু বেশিরভাগ প্যাকেজ ঘোষিত হয়, আমাদের আশা, এর মধ্যে ভালো ইলিশ উঠবে। সবাই সেদিকেই তাকিয়ে।
সাধারণ ট্যুর প্যাকেজের সঙ্গে ইলিশ উৎসবের মতো ‘ভ্যালু অ্যাডিশন’ এখন নতুন ট্রেন্ড। কিন্তু সেই উৎসবের ভোল বদলে দিচ্ছে প্রকৃতি নিজেই। সুন্দরবন হোটেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সিনহা রায়ের কথায়, বাজারে তো খোকা ইলিশও নেই। প্রায় সবটুকুই হিমঘরের ইলিশ। এদিকে, পর্যটকরা টাটকা ইলিশ চান। আমরা যে উৎসব করছি, তাকে তাই ফুড ফেস্টিভ্যাল নাম দিয়েছি। ইলিশ পেলে ভালো। না হলে অন্য নানা রকমের মাছ খাওয়াব পর্যটকদের। ইলিশ বাড়ন্ত হলে কী আর করা যাবে!