কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
কেন্দ্রে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় বসেই রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণে তৎপর হয়ে উঠেছে মোদি সরকার। সম্প্রতি, ধর্মতলায় শহিদ দিবসের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন। এদিন আর এক ধাপ এগিয়ে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে মোদিকে চিঠি দিলেন। ব্রিটিশ আমলে ১৭৭৫ সালে ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণে এই সংস্থা গঠিত হয়। দেশের সামরিক ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় এই বোর্ডের ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টারি বোর্ডের সেই ঐতিহ্যের পাশাপাশি বর্তমানের গুরুত্বের কথাও তাঁর চিঠিতে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গোটা দেশে এই বোর্ডর অধীনে মোট ৪১টি অস্ত্র নির্মাণ কারখানা রয়েছে। তাছাড়া রয়েছে ৯টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আধিকারিক ও কর্মী মিলিয়ে প্রায় এক লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ কর্মরত এই বোর্ডের অধীনে। দেশের সীমান্ত রক্ষা থেকে সামরিক বাহিনীর জন্য আগ্নেয়াস্ত্র সহ নানাবিধ সরঞ্জাম তৈরিতে নিযুক্ত এই সংস্থা।
মমতা তাঁর চিঠিতে বলেছেন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে তিনি বিস্মিত। দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত এই বোর্ডের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে। এহেন প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার মতো স্পর্শকাতর সিদ্ধান্ত বস্তুত চুপিসাড়ে নিয়েছে মোদি সরকার। মমতার মতে, এই বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনকে কিছু জানানোর প্রয়োজনও বোধ করেনি কেন্দ্র।
মমতার আর্জি, প্রধানমন্ত্রী যেন এই উদ্যোগ থেকে সরে আসেন। জাতীয় স্বার্থের কথা ভেবেই অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া থেকে বিরত থাকার আবেদন জানান মমতা। ঘটনাচক্রে, এর আগে কলকাতা থেকে ইন্ডিয়া কপারের সদর দপ্তর সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে কেন্দ্রকে বাধ্য করেছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা। তবে গুরুত্বের বিচারে দেশের সামরিক, প্রতিরক্ষা এবং পুলিসের অস্ত্র সরঞ্জাম তৈরির সঙ্গে যুক্ত সংস্থাকে বেসরকারি পুঁজির নিয়ন্ত্রণাধীন করার উদ্যোগ অনেক বেশি সুদূরপ্রসারী। তাই এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে এটা নিছকই কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত নয়, এর রাজনৈতিক তাৎপর্য যথেষ্ট। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বাম শ্রমিক সংগঠনগুলির পক্ষে বোর্ড বেসরকারিকরণের উদ্যোগের বিরুদ্ধে সদর দপ্তর আয়ুধ ভবনে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়েছে।
এদিকে আরেক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেঙ্গল কেমিক্যালস বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। গত কয়েক বছরে লাভের মুখ দেখা এই সংস্থার শেয়ার বেসরকারি সংস্থাকে বেচে দেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্যসভার সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বাংলার ভাবাবেগের সঙ্গে জড়িত আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের স্মৃতি বিজড়িত সংস্থা সম্পর্কে গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।