উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা এফএসএসএআই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আওতায় থাকা সংস্থাটি সেই নির্দেশিকায় জানিয়েছে, স্বাদু বা মিষ্টি জলের মাছে কেজি পিছু চার মিলিগ্রাম ফর্মালিন থাকতেই পারে। সামুদ্রিক মাছে সেই সংখ্যা ১০০ মিলিগ্রাম। তারা বলেছে, গোয়ায় মুম্বই হাইকোর্টের নির্দেশিকাকে মান্যতা দিয়েই আপাতত এই সীমারেখা রাখা হল। কিন্তু তা ভবিষ্যতে নাও থাকতে পারে বলে জানিয়েছে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাদের বক্তব্য, মাছে আদৌ কত ফর্মালিন থাকা উচিত, তা নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের কাজও প্রায় চূড়ান্ত। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী যে সুপারিশ করা হবে, তাকেই মাছে ফর্মালিনের মাত্রা হিসেবে মেনে নেওয়া হবে।
চিকিৎসকরা বলেন, ফর্মালিন এমন একটি রাসায়নিক, যা থেকে পেট খারাপের মতো ছোট রোগবালাই থেকে রেচন প্রক্রিয়ায় সমস্যা, এমনকী ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। যেখানে এতটা ক্ষতিকর হিসেবে ফর্মালিনকে দেখা হয়, সেখানে তা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ না করে, তার মাপকাঠি রাখা হল কেন? রাজ্য প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর বি কে চাঁদ বলেন, মাছ মারা গেলে, তার শরীরে ফর্মালিন উৎপন্ন হয়। সেটি স্বাভাবিক ফর্মালিন। তা শরীরে পক্ষে ততটা ক্ষতিকর নয়। কিন্তু মাছ তাজা রাখতে বাইরে থেকে যে ফর্মালিন দেওয়া হয়, তা ক্ষতিকর। তাই তা নিষিদ্ধ। বাইরে থেকে ফর্মালিন দেওয়া হলে, তা মাছের আঁশ বা ত্বকে লেগে থাকে। স্বাভাবিক ফর্মালিন থাকে মাংসে। তাঁর দাবি, কোচিতে সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব ফিশারিজ টেকনোলজি একটি প্রযুক্তি বার করেছে, যেখানে ভালোভাবে চিহ্নিত করা যায় ফর্মালিন। এ রাজ্যে সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটও ফর্মালিন চিহ্নিত করার কাজ করছে, জানিয়েছেন বি কে চাঁদ।
তবে স্বাভাবিক ফর্মালিন এবং বাইরে থেকে দেওয়া সেই রাসায়নিককে সুনিপুণভাবে চিহ্নিত করা যে সত্যিই কঠিন, তা মেনে নিয়েছেন এই শহরের কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরির অন্যতম এক শীর্ষকর্তা। তিনি বলেন, মাছের ত্বক ও মাংস থেকে ওই দুই রাসায়নিকের প্রকারভেদ করা যায় ঠিকই। কিন্তু তা একেবারে সঠিক, তা বলা সম্ভব নয়। কোনটি স্বাভাবিক ও কোনটি নয়, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে এখনও গবেষণা চলছে, জানিয়েছেন ওই কর্তা।
যাঁরা বাজারে যান, তাঁরা জানেন, ‘পচা’ মাছ বিক্রি এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে। কবে মারা গিয়েছে সেই মাছ, তার হদিশ না থাকলেও, তাকে টাটকা রাখার জাদু যে ওই ফর্মালিনেই নিহিত, তা বোঝেন অনেকেই। জেনেশুনে ‘বিষ’ খাওয়া ছাড়া উপায়ও থাকে না হয়তো। ফর্মালিনের মাত্রার পরিবর্তন হলেও, বিষাক্ত মাছ খাওয়া রোখা যাবে কী করে, সেটাই বড় চিন্তা মানুষের।