বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি আর্থিক বছরে আয়কর আদায় কমেছে রাজ্যে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে, রাজ্যে আয়কর আদায় হয়েছে ৩০ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার আয়কর বৃদ্ধির হার বেড়েছে মাত্র ৭.৭ শতাংশ। অথচ গোটা দেশে সেই বৃদ্ধির হার ১৩.৩ শতাংশ। আয়কর আদায়ে কোপ পড়ায় চোখ কপালে উঠেছে দিল্লির। পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে বিশেষ চিন্তিত দিল্লির সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস বা সিবিডিটি। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ, পশ্চিমবঙ্গের থেকে আয়কর আদায় বৃদ্ধির হারে ঢের এগিয়ে গিয়েছে বিহার, ওড়িশা এমনকী অসমও। সেই তালিকায় আছে উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি, কর্ণাটক বা চণ্ডীগড়ের মতো অনেক রাজ্য। ভিন পথে আদায় বাড়াতে শেষে হাত বাড়াতে হয় কলকাতার বড় বড় পুজোগুলির দিকেও।
ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিদেশ থেকে কালো টাকা ফেরত আনবেন। সেই কাজ শুরু করতে চালু হয় কালো টাকা সংক্রান্ত আইন। সেই আইনকে কাজে লগিয়ে ব্ল্যাক মানি উদ্ধারে ইতিমধ্যেই কলকাতার দিকে হাত বাড়িয়েছে দিল্লি। আয়কর দপ্তরের কাছে অন্তত ৪০টি কেস পাঠানো হয়েছে, যেখানে কালো টাকার গন্ধ আছে। আয়কর দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কেসগুলির সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি কালো টাকা।
কিন্তু এতেও ক্ষান্ত নয় আয়কর দপ্তর। সঠিকভাবে আয়ের হিসেব দেয়নি, নানা সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে এমন সব সংস্থাকেই আতস কাচের নীচে রেখেছে দপ্তর। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আয়কর হানা হয়েছে ট্রেডিং নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলিতে। দেড়শোর বেশি এমন সংস্থায় হানা দিয়েছেন কর্তারা। উৎপাদন ভিত্তিক সংস্থা, হেলথ কেয়ার এবং কনস্ট্রাকশন ব্যবসা রয়েছে এর পরের ধাপে। আয়কর হানায় বাদ যায়নি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মাইনিং সংস্থাও। তবে বড় ধরনের খানাতল্লাশি হয়নি সোনা ব্যবসায়। সূত্রের খবর, এরই মধ্যে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানেও হানা দিয়েছেন আয়কর কর্তারা।
আর্থিক বছরের গোড়ায় এরার ইনকাম ট্যাক্স বিভাগ কোমর বেঁধে খানাতল্লাশিতে নামেনি। এর অন্যতম কারণ ছিল দপ্তরের অফিসারদের নিরাপত্তা। এই দপ্তরের হাতে কোনও পুলিস নেই। নিয়ম হল, যেখানে আয়কর হানা হবে, সেখানে পুলিসি নিরাপত্তা দেবে রাজ্য সরকার। দপ্তরের অন্দরের অভিযোগ, রাজ্য প্রশাসনের তরফে সেই সহযোগিতা সব সময় পাওয়া যায় না। ইতিমধ্যেই এ রাজ্যে একাধিক জায়গায় তল্লাশিতে গিয়ে হেনস্তার মুখে পড়তে হয়েছে অফিসারদের। সেই কারণেই তাঁরা আয়কর আদায় অভিযানে পিছিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু রাজকোষে টান পড়ায়, ফের রাজ্যকে সক্রিয় হতে বলেছে দিল্লি। তাই আর গাছাড়া দিতে রাজি নয় দপ্তর।