বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
সম্মেলনের প্রথম দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখোমুখি হয়েছিলেন শিল্পমহলের। মুকেশ আম্বানি, সজ্জন জিন্দালদের মতো ব্যক্তিদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি নিজেকে কার্যত দেশের নেত্রী হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। লোকসভা ভোটের পর নতুন সরকার আসবে। তৈরি হবে নতুন শিল্পনীতি। যাঁরা দেশ ছেড়ে পুঁজি নিয়ে বাইরে চলে গিয়েছেন, তাঁরা ফিরুন, আর্জি রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্মেলনের শেষ দিনেও সেই ‘টিম ইন্ডিয়া’র সুর জিইয়ে রইল তাঁর ভাষণে। বললেন, বিনিয়োগ আনতে গেলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সবাই মিলে তা করলেই সুন্দর টিম তৈরি হবে। আমরা ভালোটুকু উজাড় করে দেব। বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে আমরা একযোগে কাজ করব। যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বাংলার শিল্পের জন্য দিশা দেখাচ্ছেন, সেই আলো দেশের সর্বত্র ছড়াবে, এমনই বার্তা পেল শিল্পমহল। মুখ্যমন্ত্রী দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করলেন, দেশকে পথ দেখাবে বাংলাই।
মুখ্যমন্ত্রীর অঙ্গীকারের মধ্যে মিশে রইল খোঁচাও। কারও নাম করলেন না ঠিকই, কিন্তু প্রত্যয়ী কণ্ঠে বললেন, প্রথমে কাজ করুন, তারপর প্রতিক্রিয়া দিন। যদি কাজ না করতে পারেন, তাহলে প্রতিক্রিয়াও দেবেন না। ভাষণে তার একটু আগেই মমতা বলেছেন, নোট বাতিল এবং জিএসটি দেশে দু’কোটি কর্মসংস্থান কেড়ে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে এদিনও তাঁর নিশানায়, তা টের পেল শিল্পমহল। পাঁচ বছর ক্ষমতায় থেকেই কাজ না করে শুধু বুলি আওড়ানোর অভিযোগে বহুবার প্রধানমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি। সেই মনোভাবই এদিন প্রচ্ছন্ন হয়ে রইল তাঁর ভাষণে।
শিল্প সম্মেলন থেকে রাজ্যের প্রাপ্তি কী? মুখ্যমন্ত্রী নিজের মুখেই বিনিয়োগ প্রস্তাবের অঙ্ক ঘোষণা করলেন ঠিকই, কিন্তু তিনিই স্পষ্ট করলেন তাঁর প্রাপ্তির কথা। বললেন, সম্মেলন থেকে উঠে আসা মূল মন্ত্রটি হল ‘অ্যাটিটিউট’। অর্থাৎ পুঁজির থেকেও বড় কথা দৃষ্টিভঙ্গি। দূরদৃষ্টি থাকা, কাজের উদ্যোগ নেওয়া আর সেই কাজটি দক্ষতার সঙ্গে করাটাই বড় কথা। এ রাজ্যে বিনিয়োগের জন্য সেই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগচ্ছে তাঁর সরকার, বোঝালেন তিনি। বললেন, বিনিয়োগের জন্য পশ্চিমবঙ্গ শুধু যে ‘নিরাপদ’, তা নয়। এখানে আন্তরিকতার উষ্ণতাও অটুট। দেশের আর কোনও রাজ্য এর ধারেকাছে আসতে পারবে না, দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বললেন, আমরা প্রমাণ করে ছাড়ব, বিনিয়োগের জন্য সেরা জায়গা বাংলাই। তথ্যপ্রযুক্তি, উৎপাদন, বিদ্যুৎ, পরিবহণ, শিক্ষা, নতুন ব্যবসা বা স্টার্ট আপ—সব ক্ষেত্রেই তাঁরা নয়া দিগন্ত খুলবেন, আশ্বাস দিলেন তিনি। তাই এবারের বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটের ট্যাগলাইনও বেঁধে দিলেন তিনি। বললেন, এবারের সম্মেলন ‘রিমার্কেল’। মনে রাখার মতো।