বিকাশ পাঁজি: মোহন বাগানের জার্সিতে জীবনের প্রথম তিনটি ডুরান্ড কাপের মধ্যে দু’টিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে সংখ্যাটা তিন। লাল-হলুদের কোচ হিসেবেও ঐতিহ্যবাহী এই ট্রফি স্পর্শ করেছি ২০০৪ সালে। সত্যি বলতে কী, ডুরান্ড কাপ আমার কাছে অত্যন্ত নস্টালজিক এক টুর্নামেন্ট। তবে সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি পেয়েছিলাম ১৯৮৯ সালে। সেবার ইস্ট বেঙ্গল অধিনায়ক রন্টুকে (কৃশানু দে) কথা দিয়েছিলাম, দলকে চ্যাম্পিয়ন করব। কথা রাখার আনন্দই আলাদা। সহকারী কোচ হিসেবেও পাঁচবার ইস্ট বেঙ্গল টিম নিয়ে ডুরান্ড কাপে গিয়েছিলাম। ২০০৪ সালে সুভাষদা (ভৌমিক) না যাওয়ায় আমিই ছিলাম চিফ কোচের ভূমিকায়। সুব্রত ভট্টাচার্যর প্রশিক্ষণাধীন মোহন বাগানের বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি ফাইনালে দশ জনে খেলেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দল। চন্দন দাসের জয়সূচক গোলটি এখনও চোখে ভাসে! আরও অনেক ঘটনা আজও মনে রয়েছে। যেমন ১৯৯২ সালে ইস্ট বেঙ্গল থেকে মোহন বাগানে ফেরায় ডুরান্ড চলাকালীন এক লাল-হলুদ কর্তার কটূক্তিতে মেজাজ হারিয়ে তাঁর সঙ্গে হাতাহাতি। আবার ১৯৮৮’র ডুরান্ডে বান্ধবী ক্যাথিকে ইস্ট বেঙ্গল হোটেলে রাখা নিয়ে বিতর্কের জেরে চিমার কান্নাও কখনও ভোলার নয়। আসলে চিমা গোপনে ক্যাথিকে নিয়ে ডুরান্ড কাপে গিয়েছিল। ‘কালো চিতা’ ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের নয়নের মণি। তাই অসন্তুষ্ট হলেও ম্যানেজার স্বপনদা কিছু বলতে পারছিলেন না। এদিকে, বাংলা সংবাদপত্রগুলিতে তা নিয়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। এসব দেখে কোচ প্রদীপদা রেগে ফায়ার। তিনি ক্যাথিকে হোটেল থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিতেই চিমা কান্নাকাটি জুড়ে দেয়।
তখন কলকাতার শর্ট স্ট্রিটে থাকত চিমা। ক্যাথির সঙ্গে ওই অঞ্চলেই পরিচয়। ১৯৮৮’র লিগের সময়ে আমরা চিমা-ক্যাথির প্রেম কাহিনী শুনেছিলাম। তিন তলায় আমাদের পাশের ঘরেই ছিল দু’জনে! শেষ পর্যন্ত বাংলার প্রচারমাধ্যমের সামনে প্রদীপদার পাশে বসে চিমা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিল, কলকাতায় ফিরেই ক্যাথিকে বিয়ে করবে। শেষ পর্যন্ত ওরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল। তবে ক্যাথিকে নিয়ে ডামাডোলের জেরে ফাইনালে ফেভারিট হিসেবে নেমেও হেরে গিয়েছিলাম বিএসএফের কাছে।