অপরাজিত ১৭৫। তাও আবার মাত্র ৬৬ বলে। প্রত্যাশা মতোই দল জিতেছে বড় ব্যবধানে। ম্যাচের সেরা পুরস্কারও তাঁর ঝুলিতে। স্বাভাবিকভাবেই প্রচারের পুরো আলো তাঁরই শুষে নেওয়ার কথা। কিন্তু তিনি নির্লিপ্ত। দানবীয় চেহারাটা চুপ করে দাঁড়িয়ে। কী ভাবছেন তিনি? ঘোর কাটল সতীর্থের অভিনন্দনে। পরবর্তী সময়ে ক্রিস গেইলের সাক্ষাৎকারে সেই রহস্য ফাঁস হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘ডাবল-সেঞ্চুরিও করতে পারতাম।’২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল। ষষ্ঠ পর্বের আইপিএলে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন পুনে ওয়ারিয়র্সের ক্যাপ্টেন অ্যারন ফিনচ। ম্যাচ সবে দু’ওভার গড়িয়েছে। হঠাৎ ঝিরঝিরে বৃষ্টি। সাময়িক খেলা বন্ধের পর দর্শকদের ফ্যাকাসে মুখে হাসি ফিরল। কিন্তু উপচে পড়া গ্যালারি তখনও আন্দাজও করতে পারেনি, এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত অপেক্ষা করছে তাঁদের জন্য।কুড়ির ক্রিকেটে অনেক ধ্বংসাত্মক ইনিংস রয়েছে। তবে গেইলের ১৭৫ আজও অমলিন ক্রিকেটপ্রেমীদের স্মৃতিতে। ১০২ মিনিট ক্রিজে ছিলেন তিনি। তাঁর ব্যাট থেকে বেরিয়েছিল ১৩টি বাউন্ডারি ও ১৭টি ওভার বাউন্ডারি। স্ট্রাইক রেট ২৬৫.১৫। ভুবনেশ্বর কুমার ছাড়া পুনের বাকি সব বোলারাই কার্যত গেইলের সামনে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
গেইল ঝড়ের সুবাদে ৫ উইকেটে ২৬৩ রানের বিশাল স্কোর করেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। পুনে ওয়ারিয়র্সের পক্ষে রানের সেই পাহাড় টপকানো সম্ভব হয়নি। ১৩৩ রানেই থেমে গিয়েছিল তাদের লড়াই। আরসিবি জিতেছিল ১৩০ রানে। সারা বছর বিদেশ ঘুরে বিশের ক্রিকেট খেলাই তাঁর নেশা ও পেশা। উপার্জনের অন্যতম মাধ্যমও। চরিত্রের মতোই ক্যারিবিয়ান তারকাটির ব্যাটিংও বর্ণময়। নিজের দিনে কাউকেই রেয়াত করেন না। তাঁর বহু স্মরণীয় ইনিংসের মধ্যে চিন্নাস্বামীর সেই রাত সর্বাগ্রে স্থান পাবে। একের পর এক ছক্কা স্টেডিয়ামের সীমা অতিক্রম করে সেদিন পড়েছিল মাঠের বাইরে। শটের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, গ্যালারির টিনের আচ্ছাদনও খসে যায়। ২০০৯ সাল থেকে তিনি আইপিএলে খেলছেন। অনেক কীর্তি যোগ হয়েছে তাঁর নামের সঙ্গে। ৩১টি অর্ধশতরানের পাশাপাশি ছ’টি আইপিএল সেঞ্চুরির মালিক।