কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
চার বছর আগে রিও ওলিম্পিকসে রুপো পেয়েছিলেন হায়দরাবাদের এই তারকা। এবারও বিশ্বের বৃহত্তম ক্রীড়া মহোৎসবের পোডিয়ামে দাঁড়ালেন ২৬ বর্ষীয়া হায়দরাবাদি কন্যা। দেশের একমাত্র মহিলা ক্রীড়াবিদ হিসেবে পরপর দু’টি ওলিম্পিকসে পদক জয়ের ইতিহাস গড়লেন তিনি। পুরুষদের মধ্যে একই বন্ধনীতে রয়েছেন কুস্তিগির সুশীল কুমার। তিনিও পরপর দু’টি ওলিম্পিকসে পদক জিতেছেন। ২০০৮ বেজিংয়ে ব্রোঞ্জের পর ২০১২ লন্ডন গেমসে রুপো জিতেছিলেন হরিয়ানার কুস্তিগির। এবার সেই পথে হাঁটলেন সিন্ধু। সবমিলিয়ে টোকিও গেমসে ভারতের পদক এখন দু’টি। সিন্ধুর আগে ভারোত্তোলনে মীরাবাঈ চানু জিতেছিলেন রুপো।
রবিবার সবার নজর ছিল ব্যাডমিন্টন কোর্টে সিন্ধুর উপর। দেশের সেরা মহিলা শাটলারের থেকে প্রত্যাশা ছিল সোনা। কিন্তু শনিবার চাইনিজ তাইপের তাই জু’র কাছে হেরে সিন্ধুর সোনা বা রুপোর জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। সেই ব্যর্থতা থেকে নিঃসারিত জেদই রবিবার ব্রোঞ্জ প্লে-অফ ম্যাচে উগরে দিলেন তিনি। বিশ্বের ন’নম্বর বিং জিয়াওকে হারিয়ে সিন্ধু প্রমাণ করলেন তিনি বড় রেসের ঘোড়া। গত পাঁচ বছরে বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের প্রায় সব বড় মঞ্চেই তাঁর সাফল্য রয়েছে। কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান গেমস কিংবা বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ থেকে খালি হাতে ফেরেননি তিনি। এদিন তাঁর পারফরম্যান্স দেখে সোশ্যাল সাইটে ক্রীড়াপ্রেমীরা আপশোস করছেন, ‘ইস! এই খেলাটা যদি সেমি-ফাইনালে সিন্ধুর র্যাকেট থেকে পাওয়া যেত!’ আসলে পেশাদার সিন্ধু অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে রবিবার একদম নতুন মেজাজে কোর্টে নামেন। বড় কোনও ভুল করেননি। নিজের সেরা অস্ত্রগুলি যথাযথ প্রয়োগ করেছেন প্রতিপক্ষের উপর। আবার বিপক্ষের ভুলের সুযোগও দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন। ১৫ বারের সাক্ষাতে হি বিং জিয়াওকে ৯ বার হারালেন বিশ্বের ছ’নম্বর সিন্ধু। জয়ের পর আনন্দে ফেটে পড়েন ভারতীয় তারকা। মুষ্টিবদ্ধ হাত শূন্যে ছুঁড়ে দিয়ে প্রস্ফুটিত করলেন অদ্ভুত প্রশান্তি। ২০২৪ প্যারিস গেমসে সোনার লক্ষ্যে ছুটবেন সিন্ধু। তখন অবশ্য তাঁর বয়স হবে ২৯। ব্রোঞ্জ জিতে ভারতীয় প্লেয়ার বলেন, ‘যাবতীয় আবেগকে দূরে সরিয়ে রেখে ম্যাচটি খেলতে নেমেছিলাম। সেমি-ফাইনালের হার মনে রাখিনি। ব্রোঞ্জকে ফোকাস করে পুরো ম্যাচটা খেলেছি। আমার বাবা ও কোচ কোর্টে নামার আগে বারবার সাহস জুগিয়েছেন। এই সাফল্য সত্যিই মধুর। তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য আমার একটাই বার্তা, আমি যদি পারি, তোমরাও দেশকে পদক এনে দিতে পারবে।’
রবিবার ছোটখাটো চেহারার চীনের প্লেয়ারকে কোর্টের চারদিকে র্যালি করিয়ে ক্লান্ত করে দেন দীর্ঘকায় সিন্ধু। প্রথম গেমের শুরুতে ৪-০ পয়েন্টে লিড নেন গোপীচাঁদের আবিষ্কার। কিন্তু চীনের খেলোয়াড় অ্যাঙ্গেল রিটার্ন ও ফ্ল্যাট পুশে ৫-৫ করেন। এরপর ভারতীয় তারকা ১১-৮ পয়েন্টে এগিয়ে যান। তারপর টানা তিনটি পয়েন্ট নিয়ে গেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন সিন্ধু। ক্রমাগত ব্যবধান বাড়িয়ে গেম পকেটে পুরে নিতে কোনও অসুবিধা হয়নি পিভি’র। দ্বিতীয় গেমেও সিন্ধু আক্রমণাত্মক খেলা অব্যাহত রাখেন। প্রতিটি পয়েন্ট জেতার পর চিৎকার করতে থাকেন তিনি। কিন্তু সাইডলাইন থেকে ভারতীয় দলের কোরিয়ান কোচ তাঁকে মাথা ঠাণ্ডা রাখার পরামর্শ দেন। একাধিক ক্রসকোর্ট রিটার্নে ৪-১ পয়েন্টে এগিয়ে যান প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। হাফ স্ম্যাশ, স্লাইস মেরে আরও তিন পয়েন্টের ব্যবধান বাড়ান। অসাধারণ ব্যাক কন্ট্রোল করে ক্রস কোর্ট ড্রপ শটে আরও এগিয়ে যান সিন্ধু। ট্রেডমার্ক স্ম্যাশে তিনি এদিন বাজিমাত করেন।