গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
আসলে শনিবার রুপো জিতে ভারতীয় শিবিরের স্বপ্ন উস্কে দিয়েছিলেন মণিপুরের মহিলা ভারোত্তোলক মীরাবাঈ চানু। তাঁরই রাজ্যের চার সন্তানের জননী মেরিও রবিবার দারুণ উজ্জীবিত পারফরম্যান্স মেলে ধরলেন। ৫১ কেজি ফ্লাইওয়েটে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন ছ’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ৩৮ বছর বয়সি এই বক্সার তাঁর চেয়ে ১৫ বছরের ছোট মিগুইলিনা গার্সিয়াকে হারালেন ৪-১ পয়েন্টে। মেরির অভিজ্ঞতা ও কৌশলের সামনে থই পাননি ডমিনিকান রিপাবলিকের বক্সারটি। বাউটের প্রথম দুই রাউন্ডে মেরি কিছুটা সাবধানী ছিলেন। তবে প্রতিপক্ষকে বুঝে নেওয়ার পর তৃতীয় রাউন্ডে পূর্ণ আক্রমণের পথে যান বর্ষীয়ান পাহাড়ি কন্যা। প্রথম ও দ্বিতীয় রাউন্ডে পাঁচজন বিচারকের মধ্যে তিনজন এগিয়ে রাখেন মেরিকে। আর তৃতীয় রাউন্ডে পাঁচ বিচারকই রায় দেন তাঁর পক্ষে। দাপটে জিতে ভারতীয় তারকা বলেন, ‘চানুর পদক জয়ে আমি গর্বিত। মণিপুরের ক্রীড়াবিদরা এমনই হয়। লক্ষ্যে না পৌঁছনো পর্যন্ত হাল ছাড়ে না। আমিও সোনা জয়ের লক্ষ্যেই টোকিওতে এসেছি। আমার বাড়ির ক্যাবিনেটে ওলিম্পিক সোনা নেই। সেই মহামূল্যবান পদক যে কোনও মূল্যে জিততে চাই।’ শেষ ষোলোয় মেরির সামনে ইংগ্রিট লরেনা ভ্যালেন্সিয়া ভিক্টোরিয়া। ২০১৬ রিও গেমসে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন এই কলম্বিয়ান বক্সার। তবে তাঁকে দু’বার হারিয়েছেন ২০১২ লন্ডন গেমসে ব্রোঞ্জ জয়ী মেরি।
টেবিল টেনিসে মেয়েদের সিঙ্গলসে দারুণ নজর কেড়েছেন মণিকা বাত্রা। প্রথম দু’টি গেমে পিছিয়ে পড়েও রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়েছেন তিনি। বিশ্বের ৬২ নম্বর মণিকা ৪-৩ ব্যবধানে হারান র্যাঙ্কিংয়ে তাঁর চেয়ে ৩০ ধাপ উপরে থাকা মার্গারিটা পেসোটস্কাকে (ইউক্রেন)। সাত গেমের লড়াইয়ে ভারতীয় তারকার পক্ষে ম্যাচের ফল ৪-১১, ৪-১১, ১১-৭, ১২-১০, ৮-১১, ১১-৫, ১১-৭। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে সোমবার তিনি মুখোমুখি হবেন অস্ট্রিয়ার সোফিয়া পলকানোভার। প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে জাতীয় কোচ সৌম্যদীপ রায়কে অগ্রাহ্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মণিকা বাত্রা। এদিন তাঁকে গ্যালারি থেকেই পরামর্শ দেন ব্যক্তিগত কোচ সন্ময় পরাঞ্জপে।
এদিকে, রিও ওলিম্পিকসের ব্যাডমিন্টনে রুপো জয়ী পিভি সিন্ধু দাপটে শুরু করলেন টোকিওতে। জে গ্রুপের প্রথম ম্যাচে হায়দরাবাদী তারকা ২১-৭, ২১-১০ স্ট্রেট গেমে হারালেন ইজরায়েলের সেনিয়া পলিকারপোভাকে। র্যাঙ্কিংয়ে ৫৮ নম্বরে থাকা প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারাতে ২৫ মিনিটের বেশি সময় লাগেনি সিন্ধুর। বিশ্বের সাত নম্বর ভারতীয় তারকা গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে খেলবেন হংকংয়ের চিউন গান ই’র বিরুদ্ধে। এই বাধা টপকালেই তিনি পৌঁছে যাবেন শেষ ষোলোয়। এদিন জয়ের পর সিন্ধু বলেন, ‘প্রথম ম্যাচে আমি সব রকম স্ট্রোক পরখ করে নিতে চেয়েছিলাম। সেই লক্ষ্যে আমি অনেকটাই সফল। পরিস্থিতি অনুযায়ী শট নির্বাচন করাটাই জয়ের আসল চাবিকাঠি।’ সত্যিই তাই। সিন্ধুর ট্রেডমার্ক স্ট্রেট ও ক্রস কোর্ট স্ম্যাশের কোনও জবাবই ছিল না ইজরায়েলি প্লেয়ারটির কাছে।
মেয়েদের ডাবলস টেনিসের প্রথম রাউন্ড থেকেই ছিটকে গিয়েছেন সানিয়া মির্জা ও অঙ্কিতা রায়না জুটি। ইউক্রেনের যমজ বোন নাদিলা কিচেনক ও লিউডমিলা কিচেনকের কাছে ৬-০, ৬-৭ (০-৭), ৮-১০ সেটে হারলেন তাঁরা। অথচ এদিন শুরুটা দুর্দান্ত করেছিলেন সানিয়া-অঙ্কিতা। প্রথম সেটে প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতেই দেননি সানিয়া-অঙ্কিতা। ৬-০ ব্যবধানে প্রথম সেট জিতে নেন ভারতীয় জুটি। তবে এরপরেই নাটকীয় ছন্দপতন। দ্বিতীয় সেটে ৫-৩ গেমে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত টাই-ব্রেকারে হেরে যান সানিয়ারা। তৃতীয় সেটও গড়ায় সুপার টাই-ব্রেকারে। চাপে পড়ে শেষরক্ষা করতে পারেননি সানিয়া-অঙ্কিতা। প্রথম রাউন্ডেই শেষ হয়ে যায় তাঁদের ওলিম্পিকস দৌড়।