ব্রিসবেন: দলে সিনিয়র পেসারদের অনুপস্থিতিই দায়িত্ববোধ বাড়িয়ে দিয়েছে মহম্মদ সিরাজের। টেস্ট কেরিয়ারে প্রথমবার ইনিংসে পাঁচ উইকেট দখলের পর এমনটাই জানিয়েছেন ভারতের ডানহাতি পেসারটি। আর এক্ষেত্রে তাঁকে সাহায্য করেছে ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে প্রচুর ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা।
ব্রিসবেন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৩ রানের বিনিময়ে ৫টি উইকেট তুলে নিয়েছেন সিরাজ। সেই সঙ্গে পঞ্চম ভারতীয় বোলার হিসেবে গাব্বায় ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়ে এরাপল্লী প্রসন্ন, বিষেণ সিং বেদি, মদন লাল ও জাহির খানের পাশে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। কেরিয়ারের তৃতীয় টেস্টে এমন কৃতিত্ব অর্জন করে দারুণ রোমাঞ্চিত ২৬ বছর বয়সি হায়দরাবাদি ক্রিকেটারটি। চতুর্থ দিনের খেলার শেষে ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে সিরাজ বলেন, ‘প্রথমবার ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেয়ে ভীষণ ভালো লাগছে। এই পারফরম্যান্স দলে কাজে আসায় বাড়তি আনন্দ পেয়েছি। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানরা দ্রুত রান তুলে আমাদের সামনে বেশ বড়সড় টার্গেট ছুঁড়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এগচ্ছিল। তাই ওদের দ্বিতীয় ইনিংসকে তিনশোর মধ্যে আটকে রাখাই ছিল প্রধান চ্যালেঞ্জ। সেই লক্ষ্যে আমরা সফল।’ সেই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘এই সিরিজে চোট-আঘাত সমস্যা আমাদের বারবার ভুগিয়েছে। বিশেষ করে বুমরাহর মতো স্ট্রাইক বোলার ছিটকে যাওয়ায় বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। পেস বোলিং আক্রমণকে গাইড করার মতো কেউ মাথার উপর না থাকায়, নিজেদেরই বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। আমি সিনিয়র বোলার নই। এটা আমার তৃতীয় টেস্ট মাত্র। তবে ভারতীয়-এ দলের হয়ে অনেক ম্যাচ খেলেছি। সেই অভিজ্ঞতাই কাজে লেগেছে।’
মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে অভিষেক হয় সিরাজের। সেই ম্যাচে মোট পাঁচ উইকেট নিয়ে যথেষ্ট নজর কেড়েছিলেন তিনি। তবে সিডনিতে পরের টেস্টে পেয়েছিলেন মাত্র দু’টি উইকেট। এবার ব্রিসবেনে জ্বলে উঠলেন সিরাজ। প্রথম ইনংসে মাত্র এক উইকেট পাওয়ার আক্ষেপ কাটালেন দ্বিতীয় ইনিংসে। আগুন ঝরানো বোলিংয়ে লড়াইয়ে ফেরালেন ভারতকে। কেরিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে প্রয়াত বাবার আশীর্বাদ হিসেবে বর্ণনা করেছেন সিরাজ। তাঁর কথায়, ‘বাবা সবসময় চাইতেন, আমি যেন দেশের হয়ে খেলি। তাঁর সেই স্বপ্ন সত্যি করতে পেরেছি।’ উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ শুরুর প্রাক্কালে পিতৃহারা হন টিম ইন্ডিয়ার এই তরুণ পেসার। তবে দেশের প্রতি কর্তব্যের কথা মাথায় রেখে ভারতে ফেরেননি সিরাজ। বিফলে যায়নি তাঁর সেই আত্মত্যাগ। সিরাজ বলছেন, প্রকৃত পরিতৃপ্তি মিলবে দল সিরিজ জিতলে। মঙ্গলবারই হয়ে যাবে চূড়ান্ত ফয়সালা। সামনে ৩২৮ রানের কঠিন টার্গেট। দলের ব্যাটসম্যানদের সতর্ক করে সিরাজ জানিয়েছেন, ‘উইকেটে অল্পবিস্তর ফাটল চোখে পড়ছে। ওই জায়গাগুলিতে বল পড়ে অসমান বাউন্স করতে পারে। আমাদের সজাগ থাকতে হবে। তবে পিচে রান রয়েছে। আশা করি, আমাদের ব্যাটসম্যানরা লক্ষ্য পূরণে সমর্থ হবে।’