গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
সুভাষ ভৌমিক: আগেই বলেছিলাম, প্লে-অফের লড়াইয়ে থাকবে না ইস্ট বেঙ্গল। খুব বেশি হলে পাঁচ কিংবা ছ’নম্বরে শেষ করবে। রবি ফাউলার দায়িত্ব নিয়ে নিজের পছন্দের বিদেশি চয়ন করেছিলেন। ভেবেছিলাম, বিদেশিরা হয়তো পার্থক্য গড়ে দেবে। কিন্তু দলের প্রথম দু’ম্যাচের পরই আমি খুব হতাশ। তার উপর মঙ্গলবার হারের পর কোচ যেভাবে স্বদেশি ফুটবলারদের নিয়ে মন্তব্য করেছেন, তা সত্যিই অপ্রত্যাশিত। অপমানজনকও বটে। যে ফুটবলারদের নিয়ে আগামী পাঁচ মাস কাজ করতে হবে, তাদের সম্পর্কে কীভাবে একজন কোচ এরকম মন্তব্য করতে পারেন! এতে খেলোয়াড়দের মনোবল ভাঙতে বাধ্য। অথচ অক্টোবর মাসে দায়িত্ব নেওয়ার সময় ফাউলার বলেছিলেন, সব জেনেশুনেই ভারতে কোচিং করাতে এসেছেন। এখন তাহলে দু’ম্যাচ হারতেই এরকম বেফাঁস মন্তব্য কেন? তাঁর এই বক্তব্যের পর ফের একবার প্রমাণ হল, সফল ও বিখ্যাত ফুটবলার হলেই বড় কোচ হওয়া যায় না। এই প্রসঙ্গে আমার একটা কথা মনে পড়ছে। ১৯৭২ সালে পিকে ব্যানার্জি ও চুনী গোস্বামী কোচিং ডিগ্রি নিতে জাপানে গিয়েছিলেন। সেখানে জার্মানির কিংবদন্তি কোচ ডেটমার ক্র্যামারের অধীনে কোচিং ডিপ্লোমা পাশ করেছিলেন। পরবর্তীকালে চুনীদা মোহন বাগান দলের দায়িত্ব নিয়ে তিন ম্যাচ পরেই আর মাঠে আসেননি। কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। চুনীদার মতো বড় মাপের ফুটবলার বুঝতে পেরেছিলেন যে, কোচিং তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা সকলেই জানি, কোচ হিসেবে পেলে-মারাদোনাও সফল হননি। রবি ফাউলারের সব থেকে বড় অসুবিধা হল, তিনি ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এই এসসি ইস্ট বেঙ্গল দলের পক্ষে ভালো কিছু করা সম্ভব নয়। একজন প্রাক্তন হিসেবে খুব খারাপ লাগছে, দল পয়েন্ট টেবিলে সবার শেষে রয়েছে। এখান থেকে সাত-আট নম্বরে শেষ করতে পারলেই যথেষ্ট।
মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য: বিদেশিদের উপরেই নির্ভর করতে হবে ইস্ট বেঙ্গলকে। কারণ স্বদেশি ফুটবলার চয়নের জন্য খুব বেশি সময় পায়নি ক্লাব। মে-জুন মাস থেকেই বাকি দলগুলি ঘর গোছাতে শুরু করেছিল। সেখানে ইস্ট বেঙ্গল কোথায় খেলবে, তা পরিষ্কার ছিল না। এই দলে যারা রয়েছে, তাদের মধ্যে কেউই ভারতীয় ফুটবলে প্রথম ২৮-৩০ জনের মধ্যে পড়ে না। ফলে পরবর্তী সময়ে আইএসএলে খেলা নিশ্চিত হওয়ার পর যাদেরকে হাতের কাছে পাওয়া গিয়েছে, তাদেরকেই ক্লাব সই করিয়েছে। তাই আমি বিদেশি ফুটবলারদের নিয়ে অনেক বেশি আশাবাদী ছিলাম। হয়তো প্রথম দু’ম্যাচ পর কোনওরকম মন্তব্য করাটা ঠিক হবে না, তবুও বিদেশিদের দেখে খুব একটা ভালো লাগেনি। এই দল নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী নই। দ্রুত একজন ভালো বিদেশি স্ট্রাইকার না আনলে দলের পারফরম্যান্সের খুব একটা উন্নতি হবে না।
দীপেন্দু বিশ্বাস: প্রথম দু’টি ম্যাচ দেখে সবার প্রথমে মনে হয়েছে, ফিটনেসের দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে এসসি ইস্ট বেঙ্গল। তার উপর খুব বেশি সময় প্রস্তুতির সুযোগ না মেলায় দল পুরোপুরি সেট হতে পারেনি। তবে কোচ যেভাবে স্বদেশি ফুটবলারদের নিয়ে মন্তব্য করেছেন, তা কাঙ্ক্ষিত নয়। এই ফুটবলারদের নিয়েই তাঁকে কাজ করতে হবে। ফলে, কোচ যদি ফুটবলারদের উপর ভরসা না রাখেন, তাহলে মাঠে তার প্রভাব পড়বেই। এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলতে চাই, গত মরশুমে কলকাতা লিগে একটা সময় মহমেডান স্পোর্টিংও প্রথম দু’ম্যাচে হারের পরও ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। আমি নিশ্চিত, এই ইস্ট বেঙ্গলও ঘুরে দাঁড়াবে।