পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কোহলিদের এই বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে ব্যস্ত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। কেউ বলছেন, দুর্বল বোলিং ডুবিয়েছে মেন ইন ব্লু’কে। কারও মতে, অপরিকল্পিত ক্যাপ্টেন্সি ভারতীয় দলকে ঠেলে দিয়েছে ব্যর্থতার কানাগলিতে। সেইসঙ্গে ব্যাটিংয়েও ধরা পড়েছে অনেক ভুলত্রুটি। তবে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, রোহিত শর্মার মতো সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের অনুপস্থিতিও ভারতীয় দলকে ভুগিয়েছে। অনেকে বলতে পারেন, একজনের অভাব কী এতটাই প্রভাব ফেলতে পারে? অবশ্যই পারে। তার জন্য ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরে যেতে হবে ২০১৮-১৯ মরশুমে। ভারতীয় দলের অস্ট্রেলিয়া সফর। বিরাট কোহলিরা সেবার ডনের দেশে অভিযান শুরু করেছিলেন টি-২০ সিরিজ দিয়ে। তিন ম্যাচের সিরিজের ফল ১-১। টেস্ট সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে ইতিহাস গড়েছিল ভারত। আর টিম ইন্ডিয়ার অস্ট্রেলিয়া সফর শেষ হয়েছিল ওয়ান ডে সিরিজ দিয়ে। প্রথম ম্যাচে কোহলি বাহিনী হারলেও, পরের দু’টি ম্যাচ জিতে মধুরেণ সমাপয়েত ঘটিয়েছিল ভারত। সেই সাফল্য এবারও প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছিল কোহলি বাহিনীকে ঘিরে। গতবার অবশ্য অস্ট্রেলিয়া দলে ছিলেন না ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথের মতো দুই তারকা। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডনের দেশে দাপিয়ে বেড়িয়েছিল টিম ইন্ডিয়া।
স্মিথ, ওয়ার্নারের না থাকাটা অস্ট্রেলিয়া দলকে কতটা দুর্বল করেছিল, তার ফারাক বোঝা গিয়েছে প্রথম দু’টি ওয়ান ডে’তে। স্মিথ পরপর সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁর দুরন্ত ফিল্ডিং বাহবা কুড়িয়েছে গোটা বিশ্বের। আর ওপেনার হিসেবে ওয়ার্নার সত্যিই অনবদ্য। ফিনচের সঙ্গে দুই ম্যাচেই তিনি যোগ করেছেন ১৫৬ ও ১৪২ রান। সেই ভিত কাজে লাগিয়েই রানের ইমারত খাড়া করেন স্মিথ ও অস্ট্রেলিয়ার বাকি ব্যাটসম্যানরা।
টিম ইন্ডিয়ার শোচনীয় ব্যর্থতার সিংহভাগ দায় অবশ্যই বোলারদের। টি-২০’র গন্ধ এখনও যায়নি সামি, বুমরাহ, চাহালদের গা থেকে। তার উপর কোকাবুরা বলের সঙ্গে মানিয়ে নিতেও সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি ক্যাপ্টেন কোহলির একগুঁয়েমি ক্যাপ্টেন্সি, ঘনঘন বোলার পরিবর্তন এবং তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের অক্ষমতা স্পষ্ট হয়েছে। ব্যাটসম্যানরাও দায় এড়াতে পারেন না। রোহিতের বিকল্প হয়ে উঠতে ব্যর্থ মায়াঙ্ক। ওপেনিং জুটিতে ভারত দু’টি ম্যাচে যোগ করেছে যথাক্রমে ৫৮ ও ৫৩ রান। পাওয়ার প্লে’তে বোলাররা যেমন ঝুড়ি ঝুড়ি রান বিলিয়েছেন, তেমনি ব্যাটিংয়ের সময় ধাওয়ান, মায়াঙ্করা খুব বেশি রান যোগ করতে পারেননি। সিডনির উইকেটে গত দু’টি ম্যাচে দেখা গিয়েছে রানোৎসব। কিন্তু ভারতের কোনও ব্যাটসম্যান শতরান পাননি। সর্বাধিক রান হার্দিকের ৯০। আইপিএল খেলেই সিডনি উড়ে গিয়েছিলেন কোহলিরা। কোয়ারেন্টাইন পর্ব কাটিয়ে নেমে পড়েছিলেন ওয়ান ডে সিরিজে। দীর্ঘ আট মাস পর কোহলিরা দেশের জার্সি গায়ে নামলেন। প্রস্তুতি বলতে আরব দেশের আইপিএল। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রস্তুতি ম্যাচ কেন রাখা হয়নি?
রোহিত খেললেও ভারত হারতে পারত। কিন্তু প্রশ্ন হল, সীমিত ওভারের সেরা ব্যাটসম্যানকে এভাবে আড়াল করার কোনও প্রয়োজন ছিল কি? এর জবাব দিতে হবে নির্বাচকদেরই। রোহিত যদি আনফিট হন, তাহলে আইপিএলের ফাইনালে খেললেন কী করে? তাহলে কি দেশের চেয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজির স্বার্থ বড়? বোর্ড কর্তারাই বা কীভাবে রোহিতকে ঝুঁকি নিয়ে আইপিএলে খেলতে দিলেন? সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বিরাটদের সাফল্যের চেয়েও আইপিএলের টিআরপি বাড়িয়ে মুনাফা সুনিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য ছিল বোর্ড কর্তাদের। তাতে সমর্থকদের আবেগের সলিল সমাধি হয় তো হোক!