পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
ফুটবল একটুআধটু যাঁরা খেলেছেন, তাঁরা জানেন কিকিং ফুটের সঙ্গে নন কিকিং ফুটের সম্পর্ক কতটা গভীর। অনেকটা স্বামী-স্ত্রীর মতো। তালমেল না থাকলে ভেঙে যায় সংসার। আর মাঠে যদি নন কিকিং ফুট নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে? তাহলে যে কোনও ফুটবলার ছন্দ হারাতে বাধ্য। স্মৃতির সরণী বেয়ে পৌঁছে যান ১৯৮৬ বিশ্বকাপে মারাদোনার যে কোনও ম্যাচে। বা ইউটিউব। মাঝমাঠে বল ধরে পা এবং কোমরের মোচড়ে বিপক্ষের একের পর এক ফুটবলারকে বোকা বানাচ্ছেন ডিএমটেন। ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ ফুটবল খেলেও তাঁকে সবসময় থামানো যাচ্ছে না। ট্যাকলের পর ট্যাকলে মাটিতে পড়ার আগের মুহূর্তে নিজেকে সামলে নেওয়া... আবার শুরু হচ্ছে ‘ভানুমতির খেল’। ডানদিক দিয়ে আসা যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা রুখে দিয়েছে তাঁর ইস্পাতকঠিন ডান পা। এমন অসাধারণ কভারিং বিশ্ব ফুটবলে খুব কম ফুটবলারের মধ্যেই দেখা গিয়েছে।
বছর তিনেক আগে এই প্রসঙ্গে জর্জ ভালদানোর একটি উক্তি উঁকি দিচ্ছে মনের মণিকোঠায়, ‘ডিয়েগোর ডান পায়ে ছিল দানবের মতো পাওয়ার। মেক্সিকো বিশ্বকাপ চলাকালীন অনুশীলনের একটি সেশনে হোসে লুই ব্রাউনের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ হয়েছিল ক্যাপ্টেনের। মারাদোনা বলেছিল, ডানদিক দিয়ে ট্যাকল করে বল কেড়ে নিতে পারলে ও ব্রাউনকে নৈশভোজ করাবে। মিনিট পনেরোর ওয়ার্ম-আপ ম্যাচে ডিয়েগো ওকে নাস্তানাবুদ করে। একটি মুভে ধৈর্য হারিয়ে ব্রাউন টানা চার-পাঁচবার লাথি মেরেছিল মারাদোনার ডান পায়ে। কিন্তু লক্ষ্যে সফল হয়নি। ওই মুভেও বলকে পোষ্যের মতো বশ মানিয়ে জাল কাঁপায় আমাদের ক্যাপ্টেন। আসলে বাঁ পায়ে ধেয়ে আসা ট্যাকল সামলানোর জন্যই ডিয়েগোর ঢাল ছিল ওর ডান পা। একবার ওর সঙ্গে এই ব্যাপারে কথাও হয়েছিল। ডিয়েগোর বিশ্লেষণ এখনও মনে আছে। বলেছিল, যুদ্ধে নামলে তরোয়ালের পাশাপাশি ঢালও রাখতে হয়। বাঁ পা আমার অসি, আর ঢালের কাজ করে ডান পা।’
বছর চারেক আগে এক সাক্ষাৎকারে চুনী গোস্বামীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম মারাদোনার ডান পা প্রসঙ্গে। কিছুক্ষণ ভেবে তাঁর উত্তর ছিল, ‘বাঁ পায়ের জাদুতে ও মুহূর্তে ভেঙে ফেলত বিপক্ষ রক্ষণ। তাই সকলের নজর ছিল ওই পায়ে। কিন্তু ওর ডান পায়ের কার্যকারিতাকে অস্বীকার করার জায়গা নেই। এই জায়গায় মেসি অনেকটাই পিছিয়ে। আর একটা ব্যাপারও মাথায় রাখতে হবে। সেটা হল বল কন্ট্রোল। এই ব্যাপারে মারাদোনাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন একমাত্র ফুটবল সম্রাট পেলেই।’