পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এবার আসি ডার্বির গুরুত্ব প্রসঙ্গে। আমাদের সময় কলকাতা লিগে দুটো বড় ম্যাচ হতো। আর এই জোড়া ম্যাচ জিততে পারলেই লিগ খেতাব চলে আসত হাতের মুঠোয়। ফলে বড় ম্যাচ ঘিরে শুধু দু’দলের ফুটবলার কিংবা কর্মকর্তা নয়, অগুনতি সভ্য-সমর্থকদের আবেগ, উন্মাদনা জড়িয়ে থাকত। এই ম্যাচের অভিজ্ঞতা আমায় সমৃদ্ধ করেছে। যে ঝাঁপি খুলে দিলে বন্ধ হতে চাইবে না। তবুও তার মধ্যে দু-একটা ম্যাচের কথা না বললেই নয়। ১৯৬১ সালে আমি মোহন বাগান থেকে ইস্ট বেঙ্গলে সই করি। সেবার লিগের দুটো ম্যাচেই আমরা জিতেছিলাম। উভয় ম্যাচেই গোল পেয়েছিল বলরাম। তবে ফিরতি লেগটা ছিল অরুণ ঘোষ বনাম চুনীদা’র দ্বৈরথের ম্যাচ। প্রত্যেকবার চুনীদা তিন-চারজনকে কাটিয়ে গোলের কাছে পৌঁছলেও, বারবার অরুণের কাছেই আটকে যান। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা আমরা ১-০ গোলে জিতি। তবে ম্যাচের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা কেউ জানতাম না, ১০২ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে সেদিন মাঠে নেমেছিল অরুণ। ম্যাচের শেষে মাঠেই সংজ্ঞাহীন হয় ও। হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল। বলতে দ্বিধা নেই যে, তখন ফুটবলাররা এই ম্যাচের জন্য চোখ বন্ধ করে জীবন বাজি রাখতে পারত। ১৯৬৩ সালের কথা না বললে নয়। সেবার প্রথম লেগে আমরা ১-৩ গোলে হেরেছিলাম। তখন বড় ম্যাচের আগে ব্রডওয়ে হোটেলে একত্রিত হতো মোহন বাগান। সেখানে লাঞ্চ সেরে তারপর মাঠে আসত। ইস্ট বেঙ্গলে সেরকম কিছু ছিল না। তবে ৬৩’র ফিরতি ম্যাচের আগে তৎকালীন ক্লাব সভাপতি ডিএন ভট্টাচার্য দলের প্রত্যেক ফুটবলারকে মেট্রোপলিটন বিল্ডিংয়ে আসতে বলেন। সেখানে পৌঁছে আমরা সকলেই অবাক হয়েছিলাম। এক আনকোরা ফুটবলারকে তিনি সেদিন দলে রেখেছিলেন। মূলত প্রতিপক্ষকে চমক দিতে নূরকে মাঠে নামান। যা সত্যিই কাজে দেয়। ম্যাচটা ২-০ গোলে জিতেছিলাম। নূর একটা গোলও করে।
এখন ফুটবলে পেশাদারিত্ব এসেছে। বেড়েছে ফুটবলারদের উপার্জনও। আইএসএলে নাম লিখিয়েছে দুই ক্লাব। তবে সভ্য-সমর্থকদের আবেগে বিন্দুমাত্র ভাঁটা পড়েনি। কারণ বাঙালির রক্তে ফুটবল। এই অনুভূতিকে বাঁচিয়ে রাখাই আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য।