বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
শুরু করা যাক। গুঞ্জন শুনছি, এটিকের সঙ্গে মোহন বাগান মিশে গিয়ে নাকি ভারতীয় ফুটবলের নিখোঁজ গৌরবকে খুঁজে আনবে। ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি না মশাই। জ্যোতিষী নই তো! পদবিটা শাস্ত্রী হলে একঘর হত। যাক গে। যেটা বলতে চাই, একটা ফুটবল টিমের কাছে মোহন বাগানের শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া নিয়ে আপত্তি আছে বস। প্রয়োজনে যে কোনও সংস্থাকে শেয়ার বেচতে পারত। কিন্তু ফুটবল টিম কেন বলতে পারেন? নিজের নাম বদলে, লোগোতে প্রতিষ্ঠার সাল ভুলে পালতোলা নৌকার পালে কোন হাওয়াটা এসে লাগবে তা মা গঙ্গাই জানেন! এ তো আমাদের ভালোবাসার ক্লাবের আত্মগরিমায় আঘাত করা। আইডেন্টিটি ক্রাইসিস হয় শুনেছি। মোহন বাগানের তো সেটাই হারিয়ে গেল।
শুনলাম এটিকে মোহন বাগান ঠিক করেছে, বাংলায় একটা জম্পেশ ফুটবল অ্যাকাডেমি তৈরি করবে। অ্যাকাডেমির ছাকনি বেয়ে কলকাতা ময়দানে নেমে আসবে টগবগে সব ট্যালেন্ট। বলছি, কাকে গ্যাস খাওয়াচ্ছ গুরু! এই এতগুলো বছরে কম অ্যাকাডেমি তো দেখলাম না। এটিকে নয় বাদই দিলাম। তিন প্রধানে ক’টা বাংলার ছেলে খেলে বলুন দেখি। বিশ্বের আনাচকানাচ থেকে আসা খেলোয়াড়রাই তো কর্তাদের চোখের মণি। তবে এটাও মানতে হবে, বিদেশি ট্রেনার, ফুটবলারদের ছোঁয়ায় আমাদের ফুটবলও কিন্তু কিছুটা হলেও পরিণত হয়েছে। যাই হোক, ট্যালেন্ট নয় এল, তারপর? তাকে তৈরি কীভাবে করা হবে? এদেশের ফুটবল পরিকাঠামো নিয়ে নিশ্চয়ই পাঠককে খুলে বলতে হবে না। মাঝেমধ্যেই কাগজে দেখি, ময়দানে নতুন কেউ এসেছে। তাকে নিয়ে কী মাতামাতি। দুটো মরশুম যেতে না যেতেই তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আরে মশাই, আজকে একটা লোকাল ছেলে কলকাতার একটা ক্লাবে খেলে কী পায় বলুন তো! ভবিষ্যৎ কী? কেরিয়ারের শেষে তো লক্ষ্য একটা সরকারি চাকরি। আমরা ওদের কী দিতে পারি! ফাটিয়ে খেলে বাড়ি ফিরে সে কি ধাতব শিল্ডের ঠুংঠাং শুনবে! পরিকাঠামো, সুযোগ সুবিধার এই দৈন্যের মধ্যে বাকতাল্লা শুনতে তাই আর মন চায় না।
এবার আসি ইস্ট বেঙ্গলের ব্যাপারে। ওরাও নাকি আইএসএল খেলার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে শুনলাম। স্পনসরের খোঁজে কর্মকর্তারা নাকি হন্যে। এর মধ্যে আবার লাল-হলুদ সমর্থকরা মোহন বাগান জনতাকে এটিকে নিয়ে টিটকিরি দিচ্ছে। অবোধের গোবধে আনন্দ আর কী! ফুটবল টিমের সঙ্গে না হলেও অন্য কারও সঙ্গে আপস করতেই হবে।
এবার শেষ করি। দেখুন ভাই, যাই হয়ে যাক এই শর্মা দলের থেকে সমর্থন তুলবে না! ভালোবাসার মোহন বাগানের আগে এটিকেকে হজম করতে সমস্যা হবে মানছি, কিন্তু বাঁধনহারা আবেগটা ক্ষোভ-দুঃখকে ড্রিবল করে ঠিক আমাকে দিয়ে সমর্থন আদায় করে নেবেই।