কর্মপ্রার্থীরা বেশ কিছু সুযোগের সংবাদে আনন্দিত হবেন। বিদ্যার্থীরা পরিশ্রমের সুফল নিশ্চয় পাবে। ভুল সিদ্ধান্ত থেকে ... বিশদ
লাহোরের হোটেলের চা
২০০৪। দীর্ঘ ১৫ বছর পর পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল ভারত। অধিনায়ক সৌরভ। ১০ মার্চ লাহোর বিমানবন্দরে পৌঁছয় ভারতীয় দল। সেখান থেকে ১৬ কিমি দূরে পার্ল ইন্টারন্যাশানাল হোটেলে উঠেছিল টিম ইন্ডিয়া। বিমানবন্দর থেকে হোটেলের দূরত্ব ছিল১৬ কিমি। ওই পথ মাত্র ১২ মিনিটে অতিক্রম করেছিলেন সৌরভরা। ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সব পথ। এই ঘটনায় অবাক হন অনেকেই। এরপর আরও বিস্ময় অপেক্ষা করছিল সৌরভদের জন্য। মহারাজের জন্য হোটেলের লবিতে অপেক্ষা করছিলেন ভারতীয় সাংবাদিকরা। চেক-ইন করার মিনিট দশেকের মধ্যে লবিতে নেমে তাঁদের নিয়ে কফি শপে যান ক্যাপ্টেন। দিয়েছিলেন চায়ের অর্ডার। আধ ঘণ্টা পেরলেও চায়ের দেখা নেই। এমন সময়ে এক ওয়েটার এগিয়ে এসে ভারতীয় সাংবাদিকদের মধ্যে যে কোনও একজনকে ডাকেন। তিনি চায়ে চুমুক দেওয়ার পরেই তা সৌরভকে দেওয়া হয়। পরদিন এক বিশ্ববিখ্যাত সংবাদসংস্থার সাংবাদিক রিজওয়ান জোজি এই খবরটি করেছিলেন। চারদিকে হইচই পড়ে গিয়েছিল। ওই খবর প্রকাশ্যে আসার পর গোটা পাকিস্তান সফর চলাকালীন টেনশনে থাকতেন চণ্ডী গাঙ্গুলি। টিম তথা মহারাজের খোঁজ নিতেন কলকাতার সাংবাদিকদের থেকে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ও সৌরভ
২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখটিকে এখনও মনে রেখেছেন মহারাজ। দিনটি তাঁর কিংবা গাঙ্গুলি পরিবারের কারও জন্মদিন নয়। এমনকী নয় বিবাহবার্ষিকীও। কিন্তু এই দিনটি এলে সৌরভ এখনও রোমাঞ্চিত হন। ২০০৯ সালে নাগপুরে শেষ টেস্টের সময়েও তাঁকে কুর্নিশ জানাতে জামতা স্টেডিয়াম থেকে হোটেল পর্যন্ত নিজেই টিম বাস ড্রাইভ করেছিলেন ধোনি। সেদিন রাতে গোটা টিম তাঁর সম্মানে পার্টি দিয়েছিল। সেখানে সৌরভ বলেছিলেন, ‘আমার জীবনে জন্মদিন ৮ জুলাইয়ের মতোই গুরুত্বপূর্ণ ২৬ ফেব্রুয়ারি।’ কারণ, ২০০০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারিই সৌরভকে অধিনায়ক হিসেবে বেছে নিয়েছিল বোর্ড। তখন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ চলছে। শচীন মুম্বইয়ে (প্রথম টেস্টের আগে) ঘোষণা করলেন, টেস্ট সিরিজ শেষ হলেই ছেড়ে দেবেন অধিনায়কত্ব। অজয় জাদেজাকে টপকে সৌরভ যে অধিনায়ক হচ্ছেন সেই খবর শচীনের ঘোষণার সময়েই রটে গিয়েছিল। মুম্বই টেস্টের তৃতীয় দিনের সন্ধ্যায় বোর্ড কর্তা ও নির্বাচকরা সৌরভকে একদিনের সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন মুম্বইয়ের তাজ প্যালেস হোটেলে ম্যাসাজ নিচ্ছিলেন মহারাজ। ঘরে ছিলেন স্ত্রী ডোনা। কলকাতার সাংবাদিকরাই গাঙ্গুলি দম্পতিকে দিয়েছিল সুসংবাদ।
হাম কিসিসে কম নেহি
অধিনায়ক হিসেবে যুবি,কাইফ,ধোনি, বীরু, জাহির,নেহেরার মতো তরুণদের তুলে এনেছিলেন সৌরভ। তাঁর সাফল্যে ইয়ং ব্রিগেডের সাফল্য দারুণ। ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ চলাকালীন মহারাজকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বীরু বলেছিলেন,‘ ম্যাচের আগের দিন রাতে জুনিয়রদের সঙ্গে নিজের ঘর থেকেই আলাদাভাবে কথা বলত দাদি। বাড়াত মনোবল। হাম কিসিসে কম নেহি, এই দর্শন ওই আমাদের মধ্যে ঢুকিয়েছিল।’
ছোটবাবু এবং মহারাজ
শচীনের নাম ছোটবাবু দিয়েছিলেন মহারাজই। কারণ শচীনের ব্যাটিংয়ে থাকত বাবুগিরির ছোঁয়া। কিন্তু চেহারা ছিল ছোটখাট। অনূর্ধ্ব-১৫ ও ১৭ জাতীয় শিবিরে একসঙ্গে ছিলেন দু’জনেই। জুনিয়র শিবিরে শচীন ও যতীন পরাঞ্জপে একদিন সৌরভদের ঘরের মেঝে ভিজিয়ে দিয়েছিলেন দরজার ফাঁক দিয়ে জল ঢেলে। তাঁদের বন্ধুত্ব হয়েছিল এমআরএফ ফাউন্ডেশনের চেন্নাই শিবিরে। সেই সম্পর্ক এখনও অটুট।