কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
৯ জুলাই, ২০১৯। স্থান- ওল্ড ট্রাফোর্ড
মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বদলে গেল ছবিটা। নিউজিল্যান্ডের কাছে সেমি-ফাইনালে হেরে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নভঙ্গের পর থেকে ধোনি ভারতীয় দলে ‘মেঘে ঢাকা তারা’। কেউ জানে না তিনি কী চাইছেন? সকলের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, মাহিকে কি ফের দেশের হয়ে খেলতে দেখা যাবে?
আজ ৭ জুলাই। আরও একটা বসন্ত পেরিয়ে ৩৯-এ পা রাখলেন ধোনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছার স্রোত বইবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এক বছরে বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই। ক্রিকেট থেকে অনেক দূরে এমএসডি। করোনা কালে রাঁচির ফার্ম হাউসে চুটিয়ে সংসার করছেন। আইপিএলে খেলবেন বলে প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাতেও থাবা বসিয়েছে কোভিড। স্বাভাবিকভাবেই ধোনির ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা আরও বেড়েছে। কেউ বলছেন, নীল জার্সি গায়ে ফিরবেন তিনি। কারও মতে, প্রতাবর্তনের পথ সহজ হবে না মাহির কাছে।
ধোনির ছোটবেলার কোচ কেশব ব্যানার্জি অবশ্য এখনও আশাবাদী। রাঁচি থেকে ফোনে বললেন, ‘না না, কম করে আরও দু’বছর খেলবে। ওকে তো সেই ১২-১৩ বছর বয়স থেকে দেখছি। কখনও আমাকে বলতে হয়নি, ফাইট ধোনি ফাইট। কখন কী করতে হয় তা ও জানে। ওর মতো ফিটনেস ভারতীয় দলে ক’জনের আছে? মানছি বয়স বেড়েছে। রিফ্লেক্স কমাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এটা তো মানবেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুল যেমন সাদা হয়, অভিজ্ঞতাও তো বাড়ে। ক্রিকেট বুদ্ধিতে কোহলি এখনও অনেক পিছিয়ে ধোনির থেকে। আর সেই কারণেই মাহিকে ভারতীয় দলে দরকার। ওর ম্যাচ রিডিং পাওয়ার অতুলনীয়। বিরাট, শাস্ত্রী সেটা ভালোই জানে। আমার বিশ্বাস, এত সহজে ওরা ধোনিকে ছেড়ে দিতে চাইবে না। টি-২০ বিশ্বকাপে নিশ্চিয়ই খেলাবে।’
মার্চের মাঝামাঝি চেন্নাই সুপার কিংসের হলুদ জার্সিতে ধোনির হেলিকপ্টার শট দেখে ভক্তরা বলতে শুরু করেন, মাহি মার রাহা হ্যায়। আইপিএলে ধোনির ব্যাটিং দেখার প্রহর গোনা শুরু করে দিয়েছিলেন অনেকেই। ‘চেন্নাইয়ে ওর প্রাকটিসের ফুটেজ দেখেছি। ব্যাটে-বলে দারুণ টাইমিং করছিল মাহি। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটস দেখে মনে হল, ওর ফিটনেস রয়েছে আগের মতোই। এত সহজে ও হাল ছাড়ার পাত্র নয়। কয়েকদিন আগেই ধোনির সঙ্গে ফোনে কথা হল। জিজ্ঞাসা করল, স্যার কেমন আছেন? সাবধানে থাকবেন। বহুবার ওর ফার্ম হাউসে গিয়েছি। কখনও জিজ্ঞাসা করিনি, কেরিয়ার নিয়ে তুমি কী ভাবছ? কারণ, শটের মতো ওর সিদ্ধান্ত নেওয়ার টাইমিংও দারুণ’, এক নিঃশ্বাসে বললেন কেশব ব্যানার্জি।
বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে ধোনি যদি নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দলকে জেতাতে পারতেন, তাহলে এত কিছু আলোচনার প্রয়োজন পড়ত না। নিজের ভাগ্য নিজেই ঠিক করতে পারতেন ‘ক্যাপ্টেন কুল’। তবে ব্যাটসম্যানের চেয়েও উইকেটরক্ষক ধোনিকে ভারতীয় দলের বেশি করে দরকার বলে মনে করছেন তাঁর ছোটবেলার কোচ। কেশববাবুর যুক্তি, ‘ভারতীয় দলে মিডল অর্ডারে অনেক পরিবর্ত খেলোয়াড় তৈরি রয়েছে। বোলিংয়েও সমস্যা নেই। কিন্তু উইকেটরক্ষক ধোনির কোনও বিকল্প নেই। বিশ্বকাপের পর থেকে প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হল। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। লোকেশ রাহুল পার্টটাইম হিসেবে কাজ চালাচ্ছে। উইকেটকিপিংয়ের পর ওপেন করতে নামার ধকল কী ও বড় টুর্নামেন্টে সামলাতে পারবে? আরও সময় দিতে হবে ঋষভকেও। তাই ধোনিকে দুম করে ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না। ও যদি আরও দু’বছর দলের সঙ্গে থাকে তাহলে তরুণ উইকেটরক্ষকরাই লাভবান হবে।’