জুরিখ, ৭ এপ্রিল: করোনা ভাইরাসের জন্য ফুটবল বিশ্বে এসেছে এক অভাবিত আর্থিক মন্দা। এই সময় ক্লাব ও ফুটবলারদের একজোট হয়ে কাজ করার আহ্বান জানাল বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা ফিফা। সোমবার ফিফার তরফ থেকে আবেদন করা হয়, ক্লাব ও ফুটবলার দুই পক্ষই যেন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বেতন সংক্রান্ত সমস্যা নিরসন করে নেয়। সোমবার ফিফার পক্ষ থেকে নথিভুক্ত ফুটবলাদের এজেন্টদের একই অনুরোধ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত শনিবারই প্রিমিয়ার লিগ ক্লাবগুলো বেতন কমানোর ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছিল। যেখানে ফুটবলার, কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফদের বেতন হ্রাসের প্রস্তাব নেওয়া হয়। লিভারপুল, টটেনহ্যামের এই উদ্যোগ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ব্রিটিশ সরকার দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রচণ্ড বেকাদায়। এই রকম পরিস্থিতির মধ্যে ক্লাবগুলিকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি ইতিালির আটটি বড় ক্লাব নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় যে কোচ, ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফদের বেতন হ্রাস করা হবে এই আর্থিক মন্দা মোকাবিলা করার জন্য। স্পেনের বার্সেলোনার মতো ক্লাব ইতালির ওই আটটি বড় ক্লাবের প্রস্তাব সমর্থন করে। এরপরই ফিফা আসরে নামে। ফিফার তরফ বলা হয়েছে, বিশ্বের পরিচিত ক্লাবগুলি আর্থিক ভিত্তি দৃঢ় হলে ভবিয্যতে ফুটবলাররা লাভবান হবেন। আমরা চাই না কোনও পেশাদার ফুটবলার না খেতে পেয়ে মারা যান। সেই জন্য দুই পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে একটা জায়গায় আসতে অনুরোধ করছি।’ পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে তিরিশ শতাংশ বেতন হ্রাসের দিকে এগচ্ছে গোটা ফুটবল বিশ্ব।
মঙ্গলবার ফিফা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছে। ইউরোপের সেরা ১২টি লিগ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্রগিত আছে। লিগ শেষ না হলে স্পনসররা পুরো অর্থ দেবে না। চ্যানেল পার্টনাররা তো বছরের প্রথম কিস্তির (জানুয়ারি-মার্চ) পেমেন্ট আটকে দিয়েছে। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বের খেলা বাকি। তাই এই সব লিগ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফিফা নতুন করে ট্রান্সফার উইন্ডো খুলতে নাও পারে। এমনিতে ফিফার রীতি অনুসারে ২০১৯-২০ মরশুমে শেষ হওয়ার কথা ৩০ জুন। ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে নতুন মরশুমের (২০২০-২১) প্রথম পর্বের ট্রান্সফার উইন্ডো। এখন যা বলা হচ্ছে তাতে ১ জুলাই দ্বিতীয় ট্রান্সফার উইন্ডো খোলার সম্ভবনা বেশ কম। ফিফা বিভিন্ন দেশের লিগগুলিকে শেষ করার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ দিতে চাইছে জাতীয় ফেডারেশন এবং ক্লাবগুলিকে। যাতে দেরিতে হলেও লিগ শেষ করে ক্লাব কিংবা সংস্থাগুলি স্পনসর ও চ্যানেল পার্টনারের কাছ থেকে বকেয়া অর্থ পায়। তবে এখানেও আছে জটিলতা। ম্যাঞ্চেস্টার সিটির দাভিদ সিলভা, চেলসির উইলিয়ান, প্যারি সাঁজাঁ’র থিয়াগো সিলভা ও এডিনসন কাভানির চুক্তি ৩০ জুন শেষ হচ্ছে। তবে ওঁরা কী করবেন? ফিফার তরফে বলা হয়েছে, ৩০ জুন চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়া ফুটবলাররা চাইলে ক্লাবের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য পৃথক চুক্তি করতে পারেন। সেখানে একটি ক্লজ থাকবে, ২০১৯-২০ মরশুম শেষ হলেই তিনি ‘ফ্রি প্লেয়ার’ হিসেবে গণ্য হবেন।