বিদ্যার্থীদের মানসিক স্থিরতা রাখা দরকার। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। তবে নতুন বন্ধু লাভ হবে। সাবধানে পদক্ষেপ ... বিশদ
ওয়েলিংটন, ২২ ফেব্রুয়ারি: অন্তিম সেশনে ইশান্ত-সামি-অশ্বিনরা যেভাবে লড়াইয়ে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন, তা ভারতের পক্ষে খুবই ইতিবাচক। বাইশ গজে দারুণ জমে যাওয়া কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলরকে পর পর ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচে ফেরার আশা জাগালেন ভারতীয় বোলাররা। দ্বিতীয় দিনের শেষে কিউয়িদের স্কোর ৫ উইকেটে ২১৬।
প্রথম ইনিংসে ভারতের ১৬৫ রানের জবাবে শুরুতেই টম লাথামের (১১) উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছিল কিউয়িরা। নবাগত টম ব্লান্ডেলও (৩০) খুব বেশি দূর এগতে পারেননি। তবে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে তৃতীয় উইকেটে উইলিয়ামসন ও টেলর ৯৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। যা পাল্টা চাপে ফেলে দেয় ক্যাপ্টেন কোহলিকে। ঠিক তখনই ইশান্তের গুড লেংথ ডেলিভারি টেলরের শরীরের দিকে ধেয়ে আসে। কিউয়ি ব্যাটসম্যানটি কোনওরকমে তা খেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু বল তাঁর গ্লাভস ছুঁয়ে শর্ট লেগে চেতেশ্বর পূজারার হাতে জমা পড়ে। ৭১ বলে ৪৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন টেলর। তবে কেন উইলিয়ামসনের ব্যাটিং মন জয় করে নিয়েছে বেসিন রিজার্ভের দর্শকদের। একটা সময় মনে হচ্ছিল, সেঞ্চুরি না করে তিনি মাঠ ছাড়বেন না। আচমকাই সামির বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ফাঁদে পড়েন কিউয়ি ক্যাপ্টেন। পরিবর্ত হিসাবে কভারে ফিল্ডিং করতে নেমে ঝাঁপিয়ে উইলিয়ামসনের ক্যাচটি তালুবন্দি করেন জাদেজা। ১৫৩ বলে ১১টি বাউন্ডারির সাহায্যে উইলিয়ামসনের সংগ্রহ ৮৯ রান। নিউজিল্যান্ডের পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটান স্পিনার অশ্বিন। ১৭ রানে তাঁর বলে হেনরি নিকোলস ক্যাচ দেন কোহলির হাতে।
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ইশান্ত শর্মা। ৩১ রান দিয়ে এখনও অবধি তিনটি উইকেট পেয়েছেন তিনি। চোটের কারণে তাঁর এই সিরিজে খেলা নিয়ে সংশয় ছিল। এনসিএ’তে রিহ্যাবের পর সুস্থ হয়ে মাত্র বাহাত্তর ঘণ্টা আগে নিউজিল্যান্ড উড়ে আসেন তিনি। জেটল্যাগ কাটাতে যতটা সময় দরকার, সেটা পাননি দিল্লির পেসারটি। তবে মাঠে নেমে সেরাটা মেলে ধরার ক্ষেত্রে কোনও কাপর্ণ্য করেননি ইশান্ত। প্রথম দু’টি উইকেট এসেছে তাঁর হাত ধরেই। তাঁর সঙ্গে যদি যশপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ সামিরা আর একটু ভালো বোলিং করতেন, তাহলে স্কোরবোর্ড অন্য রকম হতে পারত। কিন্তু বুমরাহ একেবারেই ফর্মে নেই। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ান সিরিজে তাঁর ঝুলি ছিল শূন্য। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে এখনও অবধি ভারতীয় স্পিডস্টারটি নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। বুমরাহ অফ-ফর্ম টিম ইন্ডিয়ার বোলিংয়ের ভারসাম্য নষ্ট করছে। আর সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন কিউয়ি ব্যাটসম্যানরা।
মন্দ আলোর জন্য এদিনও পূর্ণ সময় খেলা হল না। ওয়াটলিং ১৪ ও কলিন ডি’গ্র্যান্ডহোম ৪ রানে ক্রিজে আছেন। প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ড এগিয়ে ৫১ রানে। রবিবার, ম্যাচের তৃতীয় দিন। ভারতীয় বোলাররা যদি এই ছন্দ ধরে রেখে প্রতিপক্ষকে ২৫০ রানের মধ্যে অল-আউট করতে পারেন, তাহলে ম্যাচে ফেরার পথ খোলা থাকবে কোহলি বাহিনীর সামনে।
দিনের শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি ‘টিম ইন্ডিয়া’র। গতকাল দলের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ১২২। এদিন ৪৩ রানেই বাকি পাঁচটি উইকেট পড়ে যায়। ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে অজিঙ্কা রাহানে (৪৬) ও ঋষভ পন্থ (১৯) মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাঁদের চোয়াল চাপা লড়াই আশার সঞ্চার ঘটিয়েছিল ‘টিম ইন্ডিয়া’র সমর্থকদের মনে। কিন্তু ঋষভ ১৯ করে এদিন রান আউট হয়ে যান। মূলত ভুল বোঝাবুঝির শিকার হন ভারতীয় উইকেটরক্ষকটি। রাহানে পয়েন্টে খেলে সিঙ্গলস নিতে চেয়েছিলেন। তাঁর ডাকে সাড়াও দেন ঋষভ। কিন্তু আচমকা মত বদলে ফের তিনি রাহানেকে ফিরে যেতে বলেন। কিন্তু ভারতের সহ-অধিনায়কের পক্ষে আর ফেরার সুযোগ ছিল না। রাহানেকে বাঁচাতেই ঋষভ ‘আত্মত্যাগ’ করতে বাধ্য হন। পরের বলেই অশ্বিনকে (০) বোল্ড করেন টিম সাউদি। কিছুক্ষণের মধ্যে ফের তাঁর বলেই রাহানে ৪৬ রান করে কট বিহাইন্ড হন। মহম্মদ সামি ২১ বলে ২০ রানের ঝোড়ো ইনিংস না খেললে ভারতের অবস্থা আরও খারাপ হত।