রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
(সাউল নিগুয়েজ)
মাদ্রিদ, ১৯ ফেব্রুয়ারি: চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অন্যতম অঘটন ঘটাল আতলেতিকো মাদ্রিদ। মঙ্গলবার ঘরের মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোয় রাউন্ড অব সিক্সটিনের প্রথম দফার ম্যাচে তারা হারাল লিভারপুলকে। গতবারের চ্যাম্পিয়নরা এবারও দুরন্ত ফর্মে আছে। এই ম্যাচের আগে ২০১৯-২০ মরশুমে মাত্র একটি ম্যাচে হারের স্বাদ পেয়েছিল জুরগেন ক্লপের দল (সিনিয়র)। মঙ্গলবার মাদ্রিদে আয়োজিত ম্যাচে তারাই ছিল অবিসংবাদিত ফেভারিট। কারণ, আতলেতিকো মাদ্রিদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স যথেষ্ট বিবর্ণ। এদিনের আগে গত সাতটি ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয়ের মুখ দেখেছিল ডিয়েগো সিমোনে-ব্রিগেড। কিন্তু পরিচিত দর্শকদের সামনে মঙ্গলবার পরিকল্পিত ফুটবল মেলে ধরে লিভারপুলকে বশ মানাল মাদ্রিদের ক্লাবটি।
গোটা ম্যাচে ৭৩ শতাংশ বল পজেশন। মোট পাসের সংখ্যা ৭২৬। তা সত্ত্বেও কেন হারল লিভারপুল? উত্তরটা খুবই সহজ। মহম্মদ সালাহ, রবার্তো ফারমিনো, সাদিও মানেদের সুযোগ নষ্টের খেসারত দিতে হল তাদের। দ্বিতীয়ার্ধে মানের পরিবর্তে মাঠে নেমে কাজের কাজ করতে ব্যর্থ ডিভক ওরিগিও। পাশাপাশি প্রশংসা করতে হবে আতলেতিকো মাদ্রিদের ডিফেন্ডারদেরও। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাঁরা দুর্গ অটুট রাখার লক্ষ্যে সফল হয়েছেন। তবে প্রথম পর্বের ম্যাচ জিতলেও কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠার ব্যাপারে আতলেতিকো মাদ্রিদ মোটেই এগিয়ে নেই। কারণ, আগামী ১১ মার্চ অ্যানফিল্ডে এই হারের বদলা নিতে মুখিয়ে থাকবে লিভারপুল। ঘরের মাঠে ক্লপের দলকে হারানো যে সহজ নয় তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত।
ফেরা যাক মঙ্গলবারের ম্যাচে। চতুর্থ মিনিটেই কাঙ্ক্ষিত লিড নেয় আতলেতিকো মাদ্রিদ। ডানদিক থেকে কোকের ভাসানো কর্নার লিভারপুলের ফাবিনহোর পায়ে লেগে চলে আসে অরক্ষিত সাউল নিগুয়েজের কাছে। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে জাল কাঁপাতে ভুল হয়নি তাঁর (১-০)। প্রারম্ভিক পর্বে গোল হজম করে খোঁচা খাওয়া বাঘের মতো ঝাঁপায় লিভারপুল। একের পর এক আক্রমণ আছড়ে পড়তে থাকে আতলেতিকো মাদ্রিদ বক্সে। কিন্তু শেষ কুড়ি গজে ব্যর্থতাই সঙ্গী হয় মো সালাহ-ফারমিনোদের। এই পর্বে রক্ষণ মজবুত রেখে প্রতি-আক্রমণে ব্যবধান বাড়ানোই ছিল আতলেতিকো মাদ্রিদের লক্ষ্য। ২৫ মিনিটে ফন ডিকের ভুলে বল পেয়ে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন আলভারো মোরাতা। কিন্তু তাঁর শট তৎপরতার সঙ্গে রুখে দেন লিভারপুল গোলরক্ষক আলিসন। প্রথমার্ধে মো সালাহ ও হেন্ডারসন সুবিধাজনক অবস্থায় বল পেয়েও লক্ষ্যভেদে ব্যর্থ হন। বিরতির মিনিট তিনেক আগে সাদিও মানে হলুদ কার্ড দেখেন। এরপর আবার তিনি সংঘর্ষে জড়ান বিপক্ষের ভ্রালকোর সঙ্গে। তাই ঝুঁকি না নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে সেনেগালের তারকাটিতে তুলে নেন কোচ ক্লপ।
বিরতির পরেও লিভারপুলের প্রাধান্য ছিল সংশয়াতীত। কিন্তু আতলেতিকো মাদ্রিদ বক্সে পৌঁছে বারবার খেই হারিয়ে ফেলেছেন সালাহরা। ৫৩ মিনিটে তাঁর হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ব্যবধান বাড়ানোর সোনার সুযোগ হাতছাড়া করেন মোরাতা। মোক্ষম সময়ে পা হড়কে পড়ে যান তিনি। ৭৩ মিনিটে সালাহর পরিবর্তে মাঠে নামেন অ্যালেক্স অক্সলেড চেম্বারলিন। গোটা ম্যাচে বিপক্ষের গোল লক্ষ্য করে ৬টি শট নিয়েছে লিভারপুল। যার মধ্যে একটিও তিনকাঠির মধ্যে ছিল না। শেষ পর্বে রেফারির দাক্ষিণ্যে সময় চুরি করেছেন আতলেতিকো মাদ্রিদ ফুটবলাররা। যা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ লিভারপুল কোচ জুরগেন ক্লপ। হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেছেন, ‘অ্যানফিল্ডে আতলেতিকো মাদ্রিদের আমন্ত্রণ রইল। শেষ আটে যাওয়ার সম্ভাবনা এখনও আমাদের শেষ হয়নি। ঘরের মাঠে দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচ বাকি আছে। এদিনের ভুলত্রুটি ছেলেরা নিশ্চয়ই দ্রুত শুধরে নেবে।’