কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
প্র: খেলোয়াড় হিসাবে রনজি ট্রফি জিতেছিলেন। কোচ হিসাবে সেই সাফল্য স্পর্শ করার সুযোগ। কীভাবে দেখছেন?
অরুণ লাল: সবে তো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলাম। এখনও অনেক পথ বাকি। এখনও অবধি আমরা সত্তর শতাংশ খেলেছি। পুরো একশো শতাংশ দিতে পারলে এই বাংলা দল ফের রনজি ট্রফি জিততে পারে।
প্র: ক্রিকেটাররা বলছেন, সব কিছুই সম্ভব হয়েছে লাল স্যারের জন্য। আপনি কী বলবেন?
অরুণ লাল: না না। এটা ছেলেদের পরিশ্রমের ফল। আমি তো ওদের শুধু পথ দেখিয়েছি। খেলেছে তো ওরাই। আমি যখন বলতাম, এই দলটা অনেক দূর যাবে, তখন সবাই হাসাহাসি করতেন। ভাবতেন, পাগলের প্রলাপ বকছি। বিশ্বাস করুন, এই ছেলেগুলো হারতে চায় না। দু’টো অ্যাওয়ে ম্যাচ (রাজস্থান, পাঞ্জাব) জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা মুখের কথা নয়। মনোজ কী দুর্দান্ত ব্যাটিং করল দেখলেন? শাহবাজ আহমেদ অসাধারণ। ও অনেক দূর যাবে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে যে কোনও দলের সম্পদ হতে পারে ছেলেটা। আইপিএলে ওকে খেলানো উচিত। অর্ণব নন্দী ইউটিলিটি প্লেয়ার। কেরল ম্যাচে ভালো খেলার পরেও ওকে বাদ দিতে হয়েছিল। কিন্তু সেটা ও দলের স্বার্থে মেনে নিয়েছিল। একেই বলে টিম স্পিরিট। আকাশ দীপ তো মরশুমের সেরা আবিষ্কার। কোচ হিসাবে এটাই আমার কাছে বড় প্রাপ্তি।
প্র: বিদর্ভের কাছে ৯ উইকেটে হারার পরেও কি ভেবেছিলেন ছেলেরা পারবে?
অরুণ লাল: কখনওই আশা ছাড়িনি। আমরা তো আগেই শেষ আটে পৌঁছে যেতাম। আট ম্যাচে ৩২ নয়, ৪০ পয়েন্ট হতে পারত। কিন্তু বৃষ্টির কারণে অনেক পয়েন্ট নষ্ট হয়েছে। সেটা মেনে নেওয়া ছাড়া কিছু করার ছিল না। এই জয় ছেলেদের মনোবল বাড়িয়ে দিল। যা নক-আউটে কাজে দেবে।
প্র: এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন, অশোক দিন্দাকে বাদ দেওয়াটাই ঠিক ছিল?
অরুণ লাল: আমি তো বাদ দিইনি। নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত। অশোক দিন্দার সঙ্গে আমার কোনও ব্যক্তিগত লড়াই নেই। ও ড্রেসিংরুমে যা করেছিল, সেটাও মেনে নেওয়া যায় না। তাই ওকে শাস্তি পেতে হয়েছে। এর বাইরে আর কিছু নেই। একটা পচা আলু বাস্কেটের সব আলুকে খারাপ করে দেয়। আমি যখন বাংলার হয়ে খেলতাম, তখনও দলের মধ্যে অনেক সমস্যা হতো। কিন্তু সেটা খেলায় কখনও প্রভাব ফেলেনি। কোচ হিসাবে সেটাই মেনে চলার চেষ্টা করেছি। কারও সঙ্গে কারও ব্যক্তিগত সম্পর্ক খারাপ থাকতেই পারে। কিন্তু তার জন্য দলকে ভুগতে হবে কেন?
প্র: আপনার দলে নাকি সিনিয়রদের স্থান সুরক্ষিত নয়?
অরুণ লাল: কে বলল? সব বাজে কথা। মনোজকেই জিজ্ঞাসা করুন, ওর কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না। শ্রীবৎস, অনুষ্টুপরাও তো ম্যাচের পর ম্যাচ খেলছে। আমার কাছে ফিটনেস, আর পারফরম্যান্সই শেষ কথা। সুপারিশ মেনে কাউকে দলে নিই না। ভবিষ্যতেও নেব না। তাতে যদি আমাকে কোচের পদ ছেড়ে দিতে হয়, দেব। ঘরোয়া ক্রিকেটে যারা ভালো খেলছে, তারাই বাংলার জার্সি পরে খেলবে। রমেশ প্রসাদকে কে চিনত? নীলকণ্ঠ দাস বাংলার হয়ে খেলতে পাবে কখনও ভেবেছিল? ওদের সুযোগ দিয়েছি। পারফর্মও করেছে। রাজকুমার পাল, গীত পুরীকেও খেলাতাম। কিন্তু নিয়মের বেড়াজালে ওদের ফিরে যেতে হয়েছিল। আগামী মরশুমেও যদি দায়িত্বে থাকি, তাহলে একই পথে দলকে চালাব।
প্র: ক্যাপ্টেন হিসাবে অভিমন্যুকে দশে কত দেবেন?
অরুণ লাল: দশে দশ। এত অল্প বয়স। কিন্তু সুন্দর নেতৃত্ব দিচ্ছে দলকে। মনোজের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারদের ও সম্মান করে। অভিষেক রামন, কৌশিক ঘোষদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশে যেতে পারে। বছর দু’য়েকের মধ্যে অধিনায়ক হিসাবে আরও সাফল্য পাবে অভিমন্যু। ও আরও উন্নতি করবে।
প্র: সৌরভ গাঙ্গুলির স্বপ্নের প্রকল্প ভিশন টোয়েন্টি-২০ নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। এই উদ্যোগকে কীভাবে দেখছেন?
অরুণ লাল: খুবই ভালো উদ্যোগ। আমাদের সময় তো এমন সুযোগ ছিল না। ওয়াকার ইউনিস, মুত্তাইয়া মুরলীধরন, ভি ভি এস লক্ষ্মণের মতো তারকাদের থেকে ট্রেনিং পাচ্ছে বাংলার ছেলেরা। এর থেকে ভালো আর কী-ই বা হতে পারে। সিএবি’র এটা চালিয়ে যাওয়া উচিত।