রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
অকল্যান্ড, ২৪ জানুয়ারি: নিউজিল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ২০৩ রান তোলার পর অনেকেই হয়তো ভেবেছিলেন, বিরাট কোহলিরা ইডেন পার্কে প্রথম টি-২০ ম্যাচ জিততে পারবেন না। কিন্তু শ্রেয়াস আয়ার যখন বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দিলেন, তখনও এক ওভার খেলা বাকি। হাতে রয়েছে ৬টি উইকেট। ২৯ বলে ৫৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরাও হয়েছেন শ্রেয়াস।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাজটা মোটেও সহজ ছিল না। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড বরাবরই কঠিন প্রতিপক্ষ। তার উপর কেন উইলিয়ামসনরা রানের পাহাড় খাড়া করে কোহলি বাহিনীকে আরও চাপে ফেলে দিয়েছিলেন। এমনিতেই চোটের কারণে এই সিরিজে নেই শিখর ধাওয়ান। তাই রোহিত শর্মার সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন লোকেশ রাহুল। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজের অন্তিম ম্যাচে রোহিত সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। ফলে তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশা একটু বেশিই ছিল। কিন্তু তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৭ রানে রস টেলরের হাতে ধরা পড়েন রোহিত।
প্রাথমিক ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় উইকেটে ৯৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলি। কিউয়িদের ফিল্ডিং এদিন প্রত্যাশামতো না হওয়ার সুবিধা পেয়েছে ভারত। বিরাট রান আউট হতে পারতেন। ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে লোকেশ রাহুলকে সিঙ্গলস নেওয়ার জন্য নন স্ট্রাইকার এন্ড থেকে কল করেন কোহলি। তিনি অনেকটা দৌড়েও যান। কিন্তু লোকেশ ক্রিজ থেকে বেরোননি। টিম সাউদির থ্রো উইকেটে না লাগায় বেঁচে যান ভারত অধিনায়ক। বল তখন মিড অনে। হুড়োহুড়ি করে লোকেশ রাহুল রান নেওয়ার জ্যন দৌড়ান। তবে থ্রো উইকেটে লাগলে তিনিও রান আউট হতেন। এরপর আরও একবার জীবন পান কোহলি। ৩৩ রানে ডিপ থার্ডম্যানে তাঁর ক্যাচ ফেলেন ইশ সোধি।
ছক্কা হাঁকিয়ে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লোকেশ। তাঁর সামনে আরও বড় ইনিংস খেলার সুযোগ ছিল। কিন্তু চালিয়ে খেলতে গিয়ে ৫৬ রানে আউট হন তিনি। লোকেশ চারটি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন।
একটা সময় জয়ের জ্যন ভারতের দরকার ছিল ৫৪ বলে ৮৩ রান। ঠিক তখনই কোহলি ৪৫ রানে আউট হয়ে যান। উইকেটে তখনও ভালোভাবে সেট হননি শ্রেয়াস। পাঁচ নম্বরে নামিয়ে দেওয়া হয় হার্ড হিটার শিবম দুবেকে। তবে সেই ফাটকা কাজে লাগেনি। দুবে ১৩ রানে আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন। শেষ ছ’ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৬০রান। ১৫তম ওভারে সাত রানেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় ভারতকে। স্নায়ুর চাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে শ্রেয়াসের উপর। এই পরিস্থিতিতে প্রতি-আক্রমণের পথ বেছে নেন শ্রেয়াস। চার-ছক্কার বন্যায় তিনি জয়ের মিনার খাড়া করেন। ২৬ বলেই তিনি অর্ধশতরানের গণ্ডি টপকে যান। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন মণীশ পাণ্ডেও (অপরাজিত ১৩)। শ্রেয়াসের ইনিংসে রয়েছে পাঁচটি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি। মুম্বইয়ের ব্যাটসম্যানটি ফের বুঝিয়ে দিলেন, সাদা বলের ক্রিকেটে চার নম্বরে খেলার জন্য তিনি তৈরি। ধারাবাহিকতা দেখাতে পারলে আগামী দিনে শ্রেয়াস ভারতীয় দলের সম্পদ হয়ে উঠতে পারেন।
টসে জিতে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি প্রথমে ফিল্ডিং নেন। তবে মহম্মদ সামি, শার্দুল ঠাকুরদের দুর্বল বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে দ্রুত গতিতে রান তোলেন কিউয়ি ব্যাটসম্যানরা। ওপেনিং জুটিতে ৮০ রান যোগ করেন মার্টিন গাপটিল ও কলিন মুনরো। ‘টিম ইন্ডিয়া’কে প্রথম সাফল্যটি এনে দেন শিবম দুবে। তাঁর বলে বাউন্ডারি লাইনে দুরন্ত প্রয়াসে গাপটিলের (৩০) ক্যাচ ধরেন রোহিত। ৫৯ রানে আউট হন মুনরো। ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে প্রবল চাপে ছিলেন কেন উইলিয়ামসন। দল হারলেও তিনি কিন্তু ব্যাট হাতে সফল। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২৬ বলে ৫১ রান করেন কিউয়ি অধিনায়ক। তাঁর দুরন্ত ক্যাচ ধরেন কোহলি। খাতা খুলতে পারেননি গ্র্যান্ডহোম (০)। রস টেলর দেখিয়ে দিলেন, বয়স শুধু মাত্র সংখ্যা। অভিজ্ঞতাকে পুঁকি করে তিনি ২৭ বলে ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলায় নিউজিল্যান্ড সহজেই দু’শোর গণ্ডি টপকে যায়। তবে ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে জেতার জন্য সেই রানও যে নিরাপদ নয়, তা ম্যাচের পর টের পেয়েছে কিউয়িরা।