বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বড় ম্যাচ ঘিরে এর আগে দুই প্রধানের প্রাক্তন ও বর্তমান বিদেশি ফুটবলারদের এমন আবেগ আগে দেখা যায়নি! রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের গ্যালারিতেও আবেগ, উত্তেজনার পারদ চড়েছে পরতে পরতে। সরকারিভাবে মোহন বাগানের আয়োজনে রবিবারই শেষ আই লিগের ডার্বি হয়ে গেল। গ্যালারিতে ছিলেন ৬৩ হাজারেরও বেশি দর্শক। এদিন ম্যাচের প্রায় তিন ঘণ্টা আগে থেকেই ই এম বাইপাসের দু’দিক থেকে মোহন বাগান জনতার ঢল নেমেছে। ইস্ট বেঙ্গল সেদিক যেন অনেকটাই সংখ্যালঘু। পরে তাদের সংখ্যা অবশ্য বেড়েছে। লাল-হলুদ, সবুজ-মেরুন পতাকায় স্টেডিয়াম ঢেকে যায়। ইস্ট বেঙ্গল গ্যালারিতে বাড়তি সংযোজন ভারতের ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা। খেলা দেখতে আসার পথে যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে তার জন্য সকাল সাতটা চল্লিশের খড়গপুর লোকাল ধরে প্রথমে হাওড়া, তারপর সরাসরি সল্টলেক স্টেডিয়ামে হাজির দেবু মল্লিক। তাঁর সঙ্গী বাগনানের নয়নমণি মুখার্জি। নয়নবাবুর তিন মাস আগে গোড়ালিতে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাতে কী? মোহন বাগান প্রেমে কোনও বাধাই বাধা নয়। জামাই দেবু ইস্ট বেঙ্গল সমর্থক। পার্ক সার্কাস থেকে হুইল চেয়ারে করে ডার্বি দেখতে হাজির মতিউর রহমান। জন্ম থেকে তাঁর দুটি পা অসাড়। কিন্তু গ্যালারি থেকে প্রিয় দলের খেলা দেখার মজাই আলাদা।
সুইজারল্যান্ড থেকে আগত এক সাংবাদিক স্টেডিয়ামের বাইরে ঘোরাঘুরি করছিলেন। এফসি বাসেল ও চেন্নাই সিটি ক্লাবের গাঁটছড়ার খবর করতে এসেছেন তিনি। কলকাতার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে প্রেসবক্সে চলে এলেন। চুটিয়ে উপভোগ করলেন বড় ম্যাচ। ডার্বি দেখতে উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি দুই প্রধানের মহিলা দর্শকদেরও। ঐতিহ্য-প্রথা টপকে এটিকে-মোহন বাগান এখন কর্পোরেট হওয়ার পথে। ইস্ট বেঙ্গলও এখন সেই রাস্তায় হাঁটছে। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই চোখ চলে যায় গ্যালারিতে। ইস্ট বেঙ্গলের ব্যানারে লেখা, ‘রক্ত দিয়ে কেনা মাটি কাগজ দিয়ে নয়।’ এনআরসি বিষয়ে বক্তব্য, নাগরিকত্ব তাঁরা কাগজ দিয়ে প্রমাণ করতে রাজি নন। মোহন বাগান গ্যালারির আপার থেকে প্রায় লোয়ার টিয়ারে নেমে আসা টিফোতে ইস্ট বেঙ্গলকে খোঁচা দিয়ে লেখা ‘পলাশীর প্রান্তরে চোখে চোখ রেখে লড়াই শিখেয়েছি আমরাই।’