শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্ত শত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত ... বিশদ
সমর্থকদের খুব একটা দোষ দেওয়া যায় না। কারণ চলতি মরশুমে প্রথম তিনটি ট্রফিতে মোহন বাগান ব্যর্থ। পাহাড়ে দুই বিদেশি সমন্বিত আইজলকেই হারাতে পারেনি। এখানে সুসংহত চার্চিলের বিরুদ্ধে মোহন বাগান কী রকম পারফরম্যান্স করবে তা নিয়ে সমর্থকরাও কি সন্দিহান?
মেরিনার্সদের প্র্যাকটিসেও কোনও রকম বৈচিত্র্য দেখা গেল না। তবে কলিনাস ও ড্যানিয়েল সাইরাসের গতি বাড়াতে স্প্রিন্ট ট্রেনিংও চোখে পড়ল। আসলে এই মোহন বাগান দলে ধারাবাহিকতার প্রচণ্ড অভাব। আপাতত মরশুমে ২১টি ম্যাচ খেলে মোহন বাগান জিতেছে ১২টি ম্যাচে। পাঁচটিতে হার। চারটিতে ড্র। চাপের ম্যাচগুলিতে (ডুরান্ড ফাইনাল, কলকাতা লিগের ডার্বি, শেখ কামাল কাপের সেমি-ফাইনাল, আই লিগের প্রথম ম্যাচ) কিবু ভিকুনার আনা স্প্যানিশ গ্রুপ সুপার ফ্লপ। ২১ ম্যাচে ৩১টি গোল করলেও হজম করেছে ২০টি। এই দলে ভারতীয় গ্রুপের একটি ছেলেও চোখ টানতে পারছেন না।
আই লিগের প্রথম হোম ম্যাচে খেলতে নামার আগে কিবু ভিকুনাকে তাই শনিবার দুপুরে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনার আনা স্প্যানিশ গ্রুপ পাঁচ মাস পর কেন চাপ নিতে পারছে না? ভারতীয় গ্রুপই বা কেন বিবর্ণ? এই বেসুরো, অপ্রিয় প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে প্রশ্নকর্তার সঙ্গে পাল্টা তর্ক জুড়ে দেন তিনি। মেজাজ হারান। আসলে চার্চিলের পাঁচ ক্যারিবিয়ান ব্রিগেডের মুখোমুখি হওয়ার আগে অতি সাদামাটা স্প্যানিশ গ্রুপকে নিয়ে প্রচণ্ড উদ্বেগে আছেন তিনি। এমনিতে নিরামিষ প্রশ্ন করলেই তিনি খুশি হন। বাউন্সার ধেয়ে আসাটা তিনি যে পছন্দ করেন না সেটা ডার্বির আগে রাগবি কেন্দ্রিক ফিজিক্যাল ট্রেনার আনা নিয়ে প্রশ্ন করার সময়েও বোঝা গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ক্লাব ম্যানেজমেন্ট ওই রাগবি কেন্দ্রিক ট্রেনারকে তাড়িয়ে দিয়েছে। রবিবার চার্চিলের বিরুদ্ধে ভালো ফল করতে না পারলে কোচ হিসাবে বেশ চাপে পড়ে যাবেন কিবু ভিকুনা।
কিবু এদিন বলেন,‘কল্যাণীতে যেতে দেড় ঘণ্টা লাগে। ম্যাচের দিন গিয়ে খেলতে কোনও অসুবিধা হবে না। প্রথম ম্যাচে আইজল অচেনা প্রতিপক্ষ ছিল। চার্চিল- পাঞ্জাব এফসি ম্যাচের ভিডিও দেখে আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। ছেলেদের সব বলা আছে। শনিবারও হয়েছে টিম মিটিং। আমরা ট্যাকটিক্যাল গেম খেলব। স্ট্র্যাটেজিতে থাকবে নতুনত্ব।’
প্রশ্ন হল, মোহন বাগান গত এক মাসে উত্তরপাড়া নেতাজি ব্রিগেড, পুলিস এফসি, অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে। ইস্ট বেঙ্গল, রিয়াল কাশ্মীর, চার্চিল, চেন্নাই সিটি এফসি, গোকুলাম এই সময়ে আইএসএলের রিজার্ভ টিমের বিরুদ্ধে খেলে নিজেদের মূল্যায়নের চেষ্টা করেছে। নিজের আনা স্প্যানিশদের মূল্যায়ন করতে আগ্রহী দেখাননি কিবু।
তাই রবিবার ছুটির সন্ধ্যায় চার্চিলের সিসে-প্লাজা-মাপুইয়ার ‘ত্রিফলা’ আক্রমণের মোকাবিলা করা মোহন বাগানের মতো ভঙ্গুর রক্ষণভাগের পক্ষে রীতিমতো সমস্যার হবে। চার্চিল কোচ বার্নাডো তাভাজ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন,‘অ্যাওয়ে ম্যাচ বলে আমরা রক্ষণাত্মক খেলব না। প্রথম থেকেই আক্রমণে যাব। কল্যাণীর মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা দলের চার ফুটবলারের আছে। তাই ওখানে প্র্যাকটিস না করাটা কোনও ফ্যাক্টর নয়। আর আমরা শনিবার বিকেলেই পৌঁছে গিয়েছি কল্যাণীতে। মাঠ নিয়ে মোটামুটি ধারণা আছে দলের।’ মোহন বাগানের মাঝমাঠে বেইতিয়াকে নিষ্ক্রিয় করতে খালিফ আল হাসান তৈরি। প্রতিপক্ষর বক্স পর্যন্ত পাসিং ফুটবল খেললেও শেষ পর্যন্ত বক্সে বল ভাসিয়ে দেন মোহন বাগানীরা। রবিবার এই স্ট্র্যাটেজিতে খুব সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ চার্চিলের রক্ষণে আছেন আবু বক্কর এবং রবার্টের মতো দুই আফ্রিকান স্টপার।
চার্চিলের গোলরক্ষক জাফর এম মণ্ডল একটু অনভিজ্ঞ। তিনি ২০১৫-১৬ মরশুমে ত্রিজিৎ দাসের প্রশিক্ষণাধীন সাব জুনিয়র বাংলা দলের ছিলেন। পরে মোহন বাগান অ্যাকাডেমি, বিএফসি’র যুব উন্নয়ন দলে ঘুরে এবার চার্চিলে। তাঁর সঙ্গে অপর গোলরক্ষক হলেন জেমস। চার্চিলের গোলরক্ষকদের অনভিজ্ঞতা মোহন বাগান কাজে লাগাতে না পারলে একটি পয়েন্ট পাওয়াই যথেষ্ট। মোহন বাগান দল প্রায় অপরিবর্তিত থাকছে।