বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
অভিজিৎ সরকার, কল্যাণী : একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট। তার নিট ফল, আই লিগের শুরুতেই রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করল ইস্ট বেঙ্গল। বুধবার ঘরের মাঠে এক পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল আলেজান্দ্রোর দলকে। লাল-হলুদ শিবিরে ‘স্ট্রাইকার অপশন’ কম। স্প্যানিশ স্ট্রাইকার মার্কোসকে দিয়ে পুরো আই লিগ টানা সম্ভব নয়। বরং মন্দের ভালো স্প্যানিশ উইং হাফ হুয়ান মেরা। তাঁর দৌলতেই এদিন অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে ইস্ট বেঙ্গল। প্রথমার্ধে নিষ্প্রভ ইস্ট বেঙ্গল বিরতির পর ম্যাচে ফিরেছে মূলত ম্যাচের সেরা হুয়ান মেরা গঞ্জালেজের ম্যাজিকেই। গতবারও সল্টলেক স্টেডিয়ামে রিয়াল কাশ্মীরের সঙ্গে ড্র করেছিল ইস্ট বেঙ্গল।
বুধবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে ইস্ট বেঙ্গল সমর্থকরা প্রিয় ক্লাবের স্মরণীয় অধ্যায় তুলে ধরলেন ‘টিফো’র মাধ্যমে। ঠিক একের পর এক পাতা উল্টানোর মতো। টেকস্যাভি যুগে সমর্থকদের ভাবনাতেও তো অভিনবত্ব থাকবেই! কিন্তু দলের খেলায় সেই ছাপ কোথায়?
প্রায় দীর্ঘদিন পর কল্যাণী স্টেডিয়ামে আই লিগের ম্যাচ দেখতে বুধবার প্রায় হাজার দশেক লাল-হলুদ সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন। কাশ্মীরে প্রায় মাইনাস ডিগ্রি ঠান্ডায় প্র্যাকটিস করে কল্যাণীতে কালাম-ক্রিজোরা যেভাবে মাঠ দাপালেন, তা দেখে মনে হচ্ছিল এটাই তাদের হোম ম্যাচ! দলটার গড় উচ্চতা প্রায় ছ’ফুটের কাছাকাছি। তাঁদের কাছে প্রায় ‘লিলিপুট’সম কোলাডোরা বেশি লং-বলে খেলতে গিয়েই ডুবলেন। অ্যাওয়ে ম্যাচের কৌশলে রিয়াল কাশ্মীর নিজেদের রক্ষণ ভাগে প্রায় আট জনকে নামিয়ে খেললেও সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। ৩২ মিনিটে প্রায় হাফচান্স থেকে গোল করলেন অনূর্ধ্ব-২২ ফুটবলার ক্রিজো। একটা লংবল ধরে কাসিম আইদারাকে বোকা বানিয়ে টপবক্সের মাথা থেকে দ্বিতীয় পোস্টে দেখেশুনে প্লেসিং করলেন আইভরি কোস্টের ফুটবলারটি (১-০)। রালতে বাঁ-দিকে শরীর ছুঁড়েও বলের নাগাল পাননি। তখন ইস্ট বেঙ্গলের দুই স্টপার ক্রেসপি ও মেহতাব জায়গায় ছিলেন না।
বল পজেশন বেশি রেখেও এদিন পেনিট্রেশনই ঠিকঠাক করতে পারেনি ইস্ট বেঙ্গল। লাল-হলুদের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার কোলাডোকে জোনাল মার্কিং করলেন বাজি আর্মান্ড। প্র্যাকটিসে ইস্ট বেঙ্গল কোচ আলেজান্দ্রোর ‘প্ল্যান বি, সি’ তৈরি থাকে। ম্যাচে তেমন প্রতিফলন দেখা যায়নি। প্রথমার্ধে ইস্ট বেঙ্গলের উইং প্লে একেবারেই হয়নি। তবুও ৩৭ মিনিটে কাসিমের হেড গোললাইন সেভ করেন রিয়াল কাশ্মীরের স্টপার কালাম। বিরতির ঠিক আগে বক্সে কাসিম হেড করে নামিয়ে দিলে মার্কোস ওপেন সিটার তুলে দেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক ফুর্বা টেম্পার হাতে।
বিরতির পর ইস্ট বেঙ্গল প্রতিপক্ষ বক্সে চাপ বাড়ায় অ্যাটাকিং থার্ডে ফুটবলার বাড়িয়ে। উইং স্ট্রেচ করতে শুরু করে। এই সময় রীতিমতো সুযোগ নষ্টের প্রদর্শনী দেখায় ইস্ট বেঙ্গল! মার্কোস হেড করে বক্সে নামিয়ে দিলে হুয়ান মেরা ওপেন সিটার মিস করেন। ৫৫ মিনিটে অভিষেক আম্বেকরের ক্রসে হেড করেও বল গোলে রাখতে পারেননি মার্কোস। তার তিন মিনিট পরেই রিয়াল কাশ্মীর গোলরক্ষকের হাত থেকে বল ছিটকে বেরিয়ে এলে তা গোলে ঠেলতে পারেননি মার্কোস। ৬০ মিনিটে হুয়ান মেরার ফ্রি-কিক থেকে মেহতাবের হেড ক্রসপিসের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ক্রমাগত চাপ সামলাতে গিয়ে শেষমেস ভেঙে পড়ে রিয়াল কাশ্মীরের রক্ষণ। ৭৭ মিনিটে বাঁ-দিক থেকে হুয়ান মেরার গড়ানো মাইনাস ফ্লিকে দারুণ ফিনিশ করেন মার্কোস (১-১)। ৮২ মিনিটে মেহতাবের হেড রিয়াল কাশ্মীরের গোলরক্ষক দারুণ তৎপরতার সঙ্গে সেভ না করলে পুরো তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত লাল-হলুদ ব্রিগেড।
ইস্ট বেঙ্গল: রালতে, কমলপ্রীত (অভিজিৎ), মেহতাব, মার্তি ক্রেসপি, অভিষেক আম্বেকর, পিন্টু মাহাতা (সামাদ), কাসিম আইদারা, টনডোম্বা নাওরেম, হুয়ান মেরা, কোলাডো, মার্কোস।