উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
প্রচণ্ড ব্যস্ত। এই দুটো শব্দও যেন আজ বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের মহাযজ্ঞকে বর্ণনা করার জন্য যথেষ্ট ক্লিশে। মঙ্গলবার রাতে মুম্বই থেকে ফিরেছেন বেহালার বাড়িতে। আর বুধবার বেলা গড়ানোর আগেই ক্রিকেটের নন্দনকাননে। আবেগের ইডেন গার্ডেন্স। ১৩ বছর বয়সে বাবা চণ্ডী গাঙ্গুলির হাত ধরে প্রথমবার পা রেখেছিলেন এখানে। এই মাঠ তাঁকে দু’হাত ভরে দিয়েছে। সম্মান। অগনিত ভক্ত। যাঁরা বলেন, সৌরভ-স্পর্শে রুক্ষ মাটিতেও সোনা ফলবে। শুনে মুচকি হেসে বললেন, ‘সোনা ফলাতে পারি কি না জানি না, তবে গোলাপি বলে দিন-রাতের টেস্ট কিন্তু সফল। প্রথম তিন দিনের একটাও টিকিট পড়ে নেই। টেস্ট ম্যাচে যেখানে মেরেকেটে হাজার দশেক দর্শকও মাঠে আসেন না, সেখানে শুক্রবার থেকে ৬৭ হাজার দর্শক ইডেনের গ্যালারিতে বসে খেলা দেখবেন। এখনও লোকে টিকিট চাইছে। কেউ কি ভেবেছিলেন, ভারত-বাংলাদেশ টেস্ট ম্যাচের জন্য ইডেনের সামনে এত মানুষ ভিড় করবে? গোটা শহর সেজে উঠেছে গোলাপি আলোয়। জানেন কত খরচ? এক-একদিন আলো জ্বালতে ১৫ লক্ষ টাকা লাগছে। ইচ্ছা থাকলেও অনেক আগে থেকে তাই গোলাপি আলো জ্বালতে পারিনি আমরা। তবে হ্যাঁ, টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা ফেরাতে হলে নতুন কিছু করতেই হবে। বোর্ড সভাপতি হওয়ার আগে বারবার সেটা বলেওছি। খেলাটা ভালোবাসি। ক্রিকেট আমাকে অনেক দিয়েছে। এখন ফিরিয়ে দেওয়ার পালা। গোলাপি টেস্টের এই আয়োজনে আমি দারুণ তৃপ্ত।’
ক্লাব হাউসের বাইরে গাড়ি থেকে নেমেই সোজা চলে গিয়েছিলেন মাঠের মাঝখানে। পিচের কাছে। সেই চেনা ভঙ্গিতে নিচু হয়ে বুড়ো আঙুল দিয়ে পিচ টিপে দেখা... কতটা তৈরি? খোঁজ নিলেন কিউরেটরের কাছে। দিলেন নির্দেশও। অফিসে ঢুকেই ডেকে নিলেন সিএবি কর্তাদের। চলল রুদ্ধদ্বার বৈঠক। অতিথি তালিকায় তারকাদের ছড়াছড়ি। দেশের প্রাক্তন অধিনায়কদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে সিএবি। শচীন তেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড়, ভি ভি এস লক্ষ্মণ, অনিল কুম্বলেও গোলাপি টেস্টের শোভা বাড়াবেন। ২০০০ সালে আয়োজিত ভারত-বাংলাদেশ প্রথম টেস্টে খেলা দুই দলের ক্রিকেটাররাও আসছেন। তবে বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি বেশি টেনশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা ও আপ্যায়ন নিয়ে। আসার কথা থাকলেও বাতিল হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কলকাতা সফর। ‘ওই সময় উজবেকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আসছেন। তাই উনি আসতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।’ কীভাবে সামলাচ্ছেন এত কিছু? ‘ইডেনের নাড়ি নক্ষত্র আমার জানা। তাই ভুলত্রুটি চোখে পড়লে ধরিয়ে দিচ্ছি। সিএবিতে তো আমি আর নেই। তবে দায়িত্ব তো আমারই।’
গাড়িতে বারবার বাজছে মোবাইল। চোখ বুলিয়ে কখনও রেখে দিচ্ছেন। দরকারি ফোন হলে ধরছেন। রাজনীতি? শত যোজন দূরে তিনি। বললেন, ‘ওসবের মধ্যে আমি নেই। আমার আছে বলতে শুধু ক্রিকেট।’ খেলোয়াড় সৌরভ। প্রশাসক সৌরভ। হঠাৎ চোখ পড়ল পার্ক স্ট্রিটের ৪২তলা বিল্ডিংয়ের দিকে। বলে উঠলেন, ‘দেখুন, গোলাপি আলো জ্বলছে। টাটা সেন্টারেও বৃহস্পতিবার থেকে থ্রিডি ম্যাপিং হবে। গোটা শহর সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মমতাদি পাশে না থাকলে কিন্তু এত সহজে কাজগুলো হতো না।’