কর্মপ্রার্থীদের কর্মলাভ কিছু বিলম্ব হবে। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য লাভ ঘটবে। বিবাহযোগ আছে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে ... বিশদ
দুই ওপেনার মহম্মদ কায়েস ও শাদমান ইসলাম ৬ রান করে ফিরে যান। উমেশ যাদবের বলে ব্যাক্তিগত ৬ রানে বোল্ড হয়ে গেলেন মহম্মদ কায়েক। অন্যদিকে শাদমান ইসলামও ফিরলেন ৬ রান করে। তিনি ইশান্তের বলে বোল্ড হন। এর পরের দুটো উইকেট মহম্মদ শামির। মধ্যাহ্ন ভোজনের বিরতিতে বাংলাদেশ চার উইকেটের বিনিময়ে তোলে ৬০ রান। সে সময় ক্রিজে ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ।
বিরতির পর বাংলাদেশ ইনিংসে আবারও ধাক্কা। এবার বল হাতে সেই ধাক্কা দিলেন মহম্মদ শামি। ইতিমধ্যেই পাঁচ উইকেট পড়ে গিয়েছে বাংলাদেশের। ৩০ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৮৮-৫। ভারতের থেকে ২৫৫ রানে পিছিয়ে। ক্রিজে ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। বল করতে এসেই উইকেট পেলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ৩৫ রানে অশ্বিনের বলে অশ্বিনকে ক্যাচ দিয়েই আউট হলেন লিটন। ৩৯.২ ওভারে বাংলাদেশ ১৩৫-৬। তবে এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও ক্রিজে টিকে থেকে হাফ-সেঞ্চুরি করে ফেললেন মুশফিকুর রহিম।
কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারলেন না তিনি। ব্যক্তিগত ৬৪ রান করে মুশফিকুর আউট হন। তাঁকে ফেরালেন অশ্বিন। এর আগে অবশ্য ফিরে গিইয়েছেন তাইজুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান। মহম্মদ শামি এই টেস্টে চারটি উইকেট তুলে নিয়েছেন। অবশেষে ইবাদত হোসেনকে এক রানে ফিরিয়ে তিন দিনেই টেস্ট ম্যাচটির ইতি টানেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
এর আগে গতকাল বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দেড়শো রান পূর্ণ করে দলকে চালকের আসনে বসিয়ে মায়াঙ্ক আগরওয়াল ‘থামস আপ’ দেখালেন ড্রেসিংরুমের দিকে। তিনি যেন বলতে চাইছিলেন, ক্যাপ্টেন তুমি যে দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলে, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। কিন্তু ক্যাপ্টেন কোহলি তাতেও সন্তুষ্ট নন। মায়াঙ্ককে ইশারায় তিনি বললেন, ‘খেলে যাও, ডাবল সেঞ্চুরি চাই।’ কথা রেখেছেন ভারতীয় দলের ওপেনারটি। ছক্কা হাঁকিয়ে ৩০৩ বলে তিনি টেস্ট কেরিয়ারের দ্বিতীয় দ্বিশতরান পূর্ণ করার পর আঙুলের ইশারায় ফের কোহলিকে বলার চেষ্টা করেন, ‘দ্বিশতরানও তোমাকে দিলাম...।’ কোহলি তখন হেসে ত্রিশতরানের আবদার করেন বসলেন। না, ক্যাপ্টেনের সেই আশা পূর্ণ হয়নি। মায়াঙ্ক ৩৩০ বলে ২৮টি বাউন্ডারি ও ৮টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ২৪৩ রানে মেহেদি হাসানের বলে আবু জায়েদের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন। তবে তাঁর ব্যাটে ভর করেই প্রথম ইনিংসে রানের পাহাড়ে ভারত। দ্বিতীয় দিনের শেষে ‘টিম ইন্ডিয়া’র স্কোর ৬ উইকেটে ৪৯৩। রবীন্দ্র জাদেজা ৬০ ও উমেশ যাদব ২৫ রানে ক্রিজে আছেন। ভারত এগিয়ে ৩৪৩ রানে।
দিনের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। মায়াঙ্ক (৩৭) ও পূজারা (৪৩) নিয়ে ব্যাট করতে নামেন। গতকাল ভারতের স্কোর ছিল ১ উইকেটে ৮৬। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের দেড়শো রান যে ভারত সহজেই টপকে যাবে, সেটা প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু প্রথম সেশনের প্রারম্ভে পর পর দুই তারকার পতনে বড় ঝটকা লেগেছিল ভারতীয় শিবিরে। পূজারা ৫৪ রান করে আবু জায়েদের বলে সায়িফ হাসানের হাতে ধরা পড়েন। তবে বাংলাদেশের কাছে দিনের সেরা প্রাপ্তি অবশ্যই বিরাট কোহলির শূন্য হাতে সাজঘরে ফেরা। মাত্র দু’টি বল খেলেছেন ক্যাপ্টেন কোহলি। আবু জায়েদের বল তাঁর পায়ে লাগার পর এলবিডব্লুর জোরালো আবেদন ওঠে। আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। বাংলাদেশের অধিনায়ক রিভিউ নেন। রিপ্লেতে দেখা যায়, বলটি বিরাটের প্যাডে না লাগলে স্টাম্প ভেঙে দিত। আম্পায়ার ভুল শুধরে কোহলিকে আউট দিতেই হোলকার স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে স্বজন হারানোর শোকের ছায়া নেমে আসে। তবে সেটা ছিল ক্ষণস্থায়ী। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে মায়াঙ্ক আগরওয়াল ও অজিঙ্কা রাহানে চতুর্থ উইকেটে ১৯০ রান যোগ করে বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে বসেন। লাঞ্চের আগেই লিড পেয়ে গিয়েছিল ‘টিম ইন্ডিয়া’। মায়াঙ্ক ১৮৩ বলে শতরান পূর্ণ করেন। দ্বিতীয় সেশনে কোনও উইকেট হারায়নি ভারত। তখনই বোঝা গিয়েছিল, বাংলাদেশের পক্ষে আর ম্যাচে ফেরা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে আবু জায়েদ ব্যতিক্রমী। একমাত্র তিনিই ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মনে আতঙ্ক ছড়াতে সফল। এখনও অবধি ভারতের ৬ উইকেটের মধ্যে জায়েদ একাই নিয়েছেন চারটি। তাঁর চতুর্থ শিকার অজিঙ্কা রাহানে (৮৬)।
রানের গতি সচল রাখতে জাদেজাকে আগে ব্যাট করতে পাঠান কোহলি। তার সুফলও মিলেছে। মায়াঙ্ক ও জাড্ডু যোগ করেছে ১২৩ রান। গত বছর ডিসেম্বরে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল মায়াঙ্কের। সেরা পারফরম্যান্স মেলে ধরে অল্প সময়েই তিনি ভারতীয় দলে জায়গা মজবুত করতে সফল। ঘরের মাঠে এটা ছিল মায়াঙ্কের চতুর্থ টেস্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে গত সিরিজে তিনি প্রথম দ্বিশতরানের (২১৫) স্বাদ পেয়েছিলেন। তবে ৩২ রানে জীবন ফিরে পান মায়াঙ্ক। স্লিপে তাঁর ক্যাচ ফেলেন ইমরুল কায়েস। ৮২ রানে লেগ বিফোর দিয়ে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ২৮ বছরের ওপেনারটি। দু’টি ব্যতিক্রমী ঘটনা ছাড়া দিনটা ছিল শুধুই মায়াঙ্কের। ১২টি ইনিংসে দু’টি ডাবল-সেঞ্চুরি করে ডন ব্র্যাডম্যানকে টপকে গেলেন তিনি । এই রেকর্ড গড়তে ব্র্যাডম্যানের লেগেছিল ১৩টি ইনিংস। এই তালিকার সবার আগে রয়েছেন বিনোদ কাম্বলি। মাত্র পাঁচটি ইনিংসেই তিনি দু’টি দ্বিশতরান উপহার দিয়েছিলেন ক্রিকেট দুনিয়াকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ১৫০। ভারত ৪৯৩/৬ (মায়াঙ্ক ২৪৩, রাহানে ৮৬, জাদেজা ব্যাটিং ৬০, পূজারা ৫৪, আবু জায়েদ ১০৮/৪)।