পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বায়ুসেনার চাকরি নিয়ে উত্তর প্রদেশের আগ্রা ছেড়ে তাঁকে ঘাঁটি গাড়তে হয়েছিল রাজস্থানের গঙ্গানগরে। কিন্তু ছেলের ক্রিকেট প্রেম দেখে মাঝপথেই তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। দীপক চাহারের ছোটবেলার কোচ তাঁর বাবাই। অনুশীলনের সময় ছেলের হাতে নতুন বল তুলে দিতেন লোকেন্দ্রসিং। বলটা একটু পরানো হলেই পাল্টে দিতেন। যাতে স্যুইং করানোর ক্ষমতা সহজে আয়ত্তে আনতে পারেন দীপক। বাবার প্রশিক্ষণেই জুনিয়র চাহার দু’দিকেই বল স্যুইং করানোর কৌশল খুব দ্রুত রপ্ত করে ফেলেন।
বাবা লোকেন্দ্রসিং জানান, ‘চাকরি ছাড়ার সময় অনেকেই অনেক কথা বলেছিলেন। কারও কথায় কান ১২ বছর বয়সে ছেলেকে দেখে মনে হয়েছিল ওর মধ্যে প্রতিভার কোনও অভাব নেই। একটু ঘষা-মাজা করলেই ছেলে বড় ক্রিকেটার হতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস ছিল। তাই চাকরি ছেড়ে ছেলেকে কোচিং করানো শুরু করি। ছেলের মধ্যে দিয়েই নিজের স্বপ্ন পূরণের প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। একই স্বপ্ন দেখাতাম ছেলেকেও। অবশেষে দু’জনের দীর্ঘদিনের পরিশ্রম ও স্বপ্ন সফল হল।’
প্রথাগত কোনও ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে ছেলেকে গাইড করতেন? হাসতে হাসতে লোকেন্দ্রসিং চাহারের জবাব, ‘ম্যালকম মার্শাল আমার সব সময়ের ফেভারিট। ডেল স্টেইনের খেলাও ভালো লাগে। এই দু’জন বোলারের ভিডিও দেখতাম। আউট স্যুইংয়ের সময় ওদের কব্জির অবস্থান লক্ষ্য করতাম। পরিশ্রমের কোনও বিকল্প হয় না। তাই ওকে আমি বলতাম, নেটে এক লক্ষ ডেলিভারি করার পর ম্যাচ খেলার জন্য।’
শুধু টি-২০ নয়, ছেলেকে এবার টেস্টেও খেলতে দেখতে চান সিনিয়র চাহার। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক সহ টি-২০’র সেরা বোলিং (৩.২-০-৭-৬) মেলে ধরে ঘরে-বাইরে বন্দিত হচ্ছেন দীপক চাহার। কিংবদন্তি শচীন তেন্ডুলকর থেকে বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলিও ভূয়সী প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন তাঁকে। ২৭ বছর বয়সি পেসারটির ক্রিকেট জীবন অবশ্য সরল পথে এগোয়নি। ১৬ বছর বয়সে তাঁকে প্রত্যাখান করেছিলেন রাজস্থান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাকাডেমির তৎকালীন ডিরেক্টর গ্রেগ চ্যাপেল। সেই ঘটনা প্রভাব ফেলেছিল দীপকের জীবনে। বেড়ে গিয়েছিল তরুণ পেসারটির জেদ। বাবার কাছে তালিম নিয়ে নিজেকে তিল তিল করে গড়ে তোলেন দীপক। প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ১৮ বছর বয়সেই রনজিতে তাঁর চমকপ্রদ অভিষেক ঘটে। এই সাফল্যই রাতারাতি খবরের শিরোনামে তুলে এনেছিল জুনিয়র চাহারকে। তাঁর উত্থানের নেপথ্যে মহেন্দ্র সিং ধোনির বড় ভূমিকা রয়েছে। রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টসে খেলার সময় ধোনির সংস্পর্শে আসেন দীপক চাহার। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দীপককে নিয়েই চেন্নাই সুপার কিংসে ফিরে যান ধোনি। আইপিএলের অধিকাংশ ম্যাচে মাহি নতুন বল তুলে দিয়েছেন দীপকের হাতেই। পাওয়ার-প্লে’তে বিপক্ষ দলের রানের গতি মন্থর করে দেওয়ার দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করে খুব দ্রুত মাহির আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন দীপক। গত বছর জুলাইয়ে ব্রিস্টলে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলেন তিনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাঁর রেকর্ড গড়া বোলিং তাঁকে শুধু ভারতীয় দলেই নয়, বিশ্বকাপের টিকিটও এনে দিতে পারে।