বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
ভারতের মাটিতে এটাই বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ সফর। অতীতে আটবার টি-২০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই প্রতিবেশী দেশ। প্রতিটি ম্যাচই জিতেছিল ভারত। মাহমুদুল্লাহরা অবশ্য জয়ের খরা কাটাতে সফল হয়েছেন চলতি সিরিজেই। সেই সাফল্য তাঁরা রাজকোটে ধরে রাখতে না পারলেও নির্ণায়ক ম্যাচে ফের চমক দিতে পারে টাইগার্সরা। ভারতের বিরুদ্ধে প্রথমবার টি-২০ সিরিজ জিতে ইতিহাসের হাতছানি বাংলাদেশের সামনে। তাই লিটন, মুস্তাফিজুররা মরিয়া হয়েই মাঠে নামবেন।
রহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল আহত বাঘের মতো। দিল্লির হারের ধাক্কা সামলে সিরিজে দারুণ কামব্যাক করেছে ‘মেন ইন ব্লু’। রাজকোটে রহিত-ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল টাইগার্সরা। নাগপুরেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই পারে। রহিতের শৈশবের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই শহরের সঙ্গে। তাই এই ম্যাচকে আরও স্মরণীয় করে রাখতে মরিয়া ‘হিটম্যান’।
দল অপরিবর্তিত রেখেই মাঠে নামতে পারে ভারত। তবে খলিল আহমেদ দু’টি ম্যাচেই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। দিল্লিতে ১৯তম ওভারে খলিল পর পর চারটি বাউন্ডারি হজম করেছিলেন। ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছিল ভারতের হাত থেকে। তার পরেও টিম ম্যানেজমেন্ট রাজকোটে তাঁর উপর আস্থা দেখিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতের এই বাঁ-হাতি পেসারটি সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। চার ওভারে ৪৪ রান দিয়েছিলেন। পেয়েছিলেন মাত্র একটি উইকেট। তাই খলিলকে বসিয়ে এই ম্যাচে শার্দুল ঠাকুরকে খেলানো হতে পারে।
নাগপুরের পিচ বরাবরই স্পিন সহায়ক। উইকেট দেখে বাংলাদেশের কোচ বলেছেন, ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেবে স্পিনাররাই। সেটাই যদি সত্যি হয়, তাহলে যুজবেন্দ্র চাহাল ও ওয়াশিংটন সুন্দরের ভূমিকা হবে গুরুত্বপূর্ণ। রাজকোটে দু’জনেই অসাধারণ বোলিং করায় বাংলাদেশকে ১৫৩ রানে আটকে রাখতে পেরেছিল ভারত। চাহাল অভিজ্ঞ। নবাগত ওয়াশিংটনও দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বল যদি ভালো টার্ন করে, তাহলে চাহাল-সুন্দর জুটি ধস নামাতে পারেন বিপক্ষের ব্যাটিংয়ে।
স্পিন অলরাউন্ডার হিসাবে ক্রুনাল পান্ডিয়ার উপরও নজর থাকবে। মিডল অর্ডারে বিপক্ষ দলের রানের গতিতে লাগাম টানার কাজটা খুবই দক্ষতার সঙ্গে করতে পারেন ক্রুনাল। সঙ্গে ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলতে পারেন তিনি। তার নমুনা পাওয়া গিয়েছে আইপিএলের মঞ্চে। দীপক চাহার ভুল শুধরে দারুণ প্রত্যাবর্তন করেছেন। নতুন বলে ভালো স্যুইং করাতে পারেন তিনি। সেই সঙ্গে শিবম দুবেও পেস অলরাউন্ডার হিসাবে কয়েক ওভার হাত ঘোরাতে পারেন।
বিরাট কোহলির অনুপস্থিতি প্রথম ম্যাচে কিছুটা বোঝা গেলেও, রহিত ফর্মে ফেরায় দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতীয় ব্যাটিংয়ে বেশ জমাট লেগেছে। ওপেনিং জুটিতে শিখর ধাওয়ানকে নিয়ে ১১৮ রান যোগ করেছিলেন ‘হিটম্যান’। চোট সারিয়ে ফিরে শিখরের এটাই প্রথম সিরিজ। প্রথম ম্যাচ থেকেই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলছেন তিনি। তাই ধরেই নেওয়া যায়, সিরিজের নির্ণায়ক ম্যাচে ব্যাট হাতে তিনি ঝলসে উঠবেন। তবে এটা ঠিক, রহিতের রানে ফেরাটা ভারতীয় দলের মনোবল অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। কোহলির অবর্তমানে এখনও অবধি যতবার তিনি ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাতে সাফল্যের শতকরা হার খুবই ঈর্ষণীয়। নিধাস ট্রফির ফাইনালে এই বাংলাদেশকে হারিয়েই রহিতের নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ‘টিম ইন্ডিয়া’। তাই আরও একটা পালক মুকুটে যোগ করতে বাইশগজে ফের ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালাতে পারেন ‘হিটম্যান’। তিন নম্বরে লোকেশ রাহুল ও চার নম্বরে ব্যাট করবেন শ্রেয়াস আয়ার। দু’জনেই এখনও সেভাবে পরীক্ষিত নন চলতি সিরিজে। পাঁচে নামবেন ঋষভ পন্থ। এই ম্যাচটি তাঁর কাছে বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। উইকেটের পিছনে একের পর এক ভুল করে কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। ব্যাটে বড় রানও নেই। সমালোচনা বন্ধ করার জন্য ঋষভকে এই ম্যাচে দারুণ পারফর্ম করতেই হবে। শিবম দুবের মতো তরুণ অলরাউন্ডারকে নিয়ে আশাবাদী টিম ম্যানেজমেন্ট। অনেকেই তাঁর মধ্যে যুবরাজ সিংকে খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে দু’টি ম্যাচে দুবের ব্যাটিং ও বোলিং কিন্তু নজর কাড়তে পারেনি। ঘরোয়া ক্রিকেটের বিপুল সাফল্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে পুনরাবৃত্তি ঘটানোর আরও একটা সুযোগ হয়তো তিনি পাবেন।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশ অতীতে অনেক চমক দিয়েছে। তাই টাইগার্সরা সিরিজ জিতলে, অঘটন বলা যাবে না। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম ও ক্যাপ্টেন মাহমুদুল্লাহ। ওপেনার হিসাবে ঝোড়ো ব্যাটিং করছেন মহম্মদ নায়িম। তবে মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা ফুটে উঠেছিল গত ম্যাচে। বোলিংয়ে সেভাবে এখনও পর্যন্ত কিছু করে দেখাতে পারেননি কাটার স্পেশালিস্ট মুস্তাফিজুর রহমান। সেই তুলনায় আমিনুল ইসলাম, সইফুল ইসলামদের বল খেলতে সমস্যায় পড়তে পারেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা।
ম্যাচ শুরু ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায়।