নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মোহন বাগান ফুটবল টিম প্রাইভেট লিমিটেডের অন্যতম ডিরেক্টর তথা প্রাক্তন সচিব অঞ্জন মিত্র (৭৩) শুক্রবার ভোররাতে দীর্ঘ রোগভোগের পর প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা বর্তমান। হাসপাতাল থেকে ট্যাংরায় তাঁর বাড়ি হয়ে বেলা বারোটা নাগাদ অঞ্জন মিত্রর মরদেহ পৌঁছায় মোহন বাগান তাঁবুতে। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সমর্থকদের ঢল নামে। সেখানেই প্রয়াত অঞ্জন মিত্রকে শেষ শ্রদ্ধা জানান পঞ্চায়েতমন্ত্রী তথা ক্লাবের সহ-সভাপতি সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, মেয়র পরিষদ (ক্রীড়া) দেবাশিস কুমার, সিপিএম নেতা বিমান বসু ও রবীন দেব প্রমুখ। প্রাক্তন ফুটবলারদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য, প্রশান্ত ব্যানার্জি, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, ব্যারেটো, শ্যামল ব্যানার্জি, মিহির বসু, শিশির ঘোষ, সত্যজিৎ চ্যাটার্জি, সঞ্জয় সেন, অলোক মুখার্জি, জহর দাসরা। ইস্ট বেঙ্গলের পক্ষ থেকে লাল- হলুদ পতাকা দিয়ে অঞ্জন মিত্রকে শেষ সম্মান প্রদর্শন করেন মুখ্য কর্তা দেবব্রত সরকার। এআইএফএএফ ও আইএফএ’র পক্ষ থেকে প্রয়াত কর্তার মরদেহে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন সুব্রত দত্ত এবং জয়দীপ মুখার্জি। কেওড়াতলা শ্মশানেও ছিল প্রচুর ভিড়। মুখাগ্নি করেন অঞ্জন কন্যা সোহিনী মিত্র চৌবে। তখন অনেকের চোখেই জল। বাগানের প্রয়াত কর্তা অধিকাংশ সময়েই কোর্ট-টাই পরতেন। শেষযাত্রায় সেইভাবেই তাঁকে সাজানো হয়েছিল।
ক্লাবের প্রাক শতবার্ষিকীর আগে ধীরেন দে’র বিরোধীরা মেম্বার্স ফোরাম নামে একটি মঞ্চ গঠন করেন। ধীরেন দে তখন অশক্ত। ওই মেম্বার্স ফোরামকে কাউন্টার করার জন্য ধীরেন দে গোষ্ঠীর দুই কর্তা গজু বসু ও দীপঙ্কর হাজরা ১৯৮৮ সালে অঞ্জন মিত্র ও টুটু বসুকে নিয়ে আসেন। ১৯৯০ সালে জুলাইয়ে নির্বাচনে অঞ্জন হিসাবরক্ষক পদে নির্বাচিত হন। টুটু বসু ১৯৯৫ সালে সচিব পদ ছেড়ে দিয়ে সভাপতি হন। তখন চার মাসের জন্য সচিব হন চুনী গোস্বামী। ওই পর্বে অঞ্জন ছিলেন সহ-সচিব। ১৯৯৫ সালে টিম গড়তে ব্যর্থ হওয়ায় চুনী সচিব পদে ইস্তফা দিয়ে সহ-সভাপতি হন। সচিব হন অঞ্জন। সেই ১৯৯৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ছিলেন সেই ভূমিকাই পালন করে গিয়েছেন তিনি। ১৯৯২ সাল থেকে ঘেরা মাঠে ক্রিকেট পিচ তুলে দেওয়া এবং মোহন বাগানে বিদেশি ফুটবলার খেলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অঞ্জন মিত্রকে ফুটবলপ্রেমীরা মনে রাখবেন। দুসিত, ইগর স্কিভরিন এবং ডুরান্ড কাপে খেলা দেখতে গিয়ে এজেন্ট মারফত ব্যারেটোকে আনার নেপথ্য কারিগর ছিলেন প্রয়াত এই সবুজ-মেরুন কর্তা।