পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ
ঘরের মাঠে সিরিজের প্রথম দুই টেস্টে ব্যাটে-বলে ভারতের পারফরম্যান্স ছিল এক কথায় দুর্দান্ত। কোহলিদের ‘ক্লিনিক্যাল’ ক্রিকেটের সামনে মাথা তুলতে পারেনি অনভিজ্ঞ দক্ষিণ আফ্রিকা শিবির। বিশাখাপত্তনমে প্রথম টেস্ট ২০৩ রানে এবং পুনেতে দ্বিতীয় ম্যাচ ইনিংস ও ১৩৭ রানে জিতে নেয় ভারত। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলে টিম ইন্ডিয়া। সেই সুবাদে দেশের মাটিতে টানা ১১টি টেস্ট সিরিজ জয়ের বিশ্বরেকর্ডও গড়ে ফেলে ভারত। ভেঙে যায় অস্ট্রেলিয়ার টানা ১০টি টেস্ট সিরিজ জয়ের রেকর্ড। তবু আত্মতুষ্টির শিকার হতে নারাজ ক্যাপ্টেন কোহলি। প্রথম দুই ম্যাচের দাপট বজায় রেখে রাঁচি টেস্টেও জিততে মরিয়া গোটা দল। কোহলি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের লক্ষ্যটা আসলে এই সিরিজে সীমাবদ্ধ নয়। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কথা মাথায় রেখেই এগতে চান তাঁরা। আর সে কারণেই সিরিজ পকেটে পুরে ফেলার পরও ভারতীয় শিবিরের তাগিদে এতটুকু ভাটা পড়েনি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চালু হওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে এখনও পর্যন্ত সবকটি ম্যাচ জিতে টেবলের শীর্ষে রয়েছে ভারত। ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা কাজে লাগিয়ে পয়েন্টটা আরও বাড়িয়ে নেওয়াই এখন কোহলিদের বড় প্রেরণা। ভারত অধিনায়ক সে কথা পরিষ্কার জানিয়েও দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘টানা ১১টি সিরিজ জয়, যেকোনও দলের কাছেই অসাধারণ গর্বের বিষয়। তবে আমরা এই রেকর্ড নিয়ে খুব বেশি আবেগে ভাসছি না। বরং আমাদের লক্ষ্য এখন সিরিজের শেষ ম্যাচেও আধিপত্য বজায় রেখে জিতে মাঠ ছাড়া। কারণ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি, সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে শেষ করতে সক্ষম হব আমরা।’ অধিনায়কের বক্তব্যের সারবত্তা বজায় রেখে শুক্রবার জেএসসিএ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জোরকদমে অনুশীলন করল টিম ইন্ডিয়া।
এই সিরিজে বল হাতে সব থেকে বেশি সফল রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা। দুই ম্যাচে অশ্বিনের উইকেট ১৪। জাডেজা নিয়েছেন ১০টি উইকেট। তাঁদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পেসাররাও দারুণ দাপট দেখাচ্ছেন। মহম্মদ সামি ও উমেশ যাদব বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁদের হালকাভাবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। যশপ্রীত বুমরাহর অনুপস্থিতিতে ভারতের পেস আক্রমণকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামি। তিনি নিয়েছেন আটটি উইকেট। উমেশের ঝুলিতে এসেছে ছয় উইকেট। ইশান্ত যদিও তেমন সাফল্য পাননি এই সিরিজে। নিয়েছেন মাত্র দুই উইকেট। রাঁচির পিচে স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন। সে কথা মাথায় রেখে তিন স্পিনার খেলাতে পারে ভারত। তবে তৃতীয় স্পিনার খেলালে ভাঙতে হবে উইনিং কম্বিনেশন। সেক্ষেত্রে ইশান্তের জায়গায় দলে আসতে পারেন চলতি সিরিজে এখনও পর্যন্ত সুযোগ না পাওয়া চায়নাম্যান স্পিনার কুলদীপ যাদব।
বোলিং বাদ দিলে ভারতের ব্যাটিংও দারুণ আলো ছড়িয়েছে এই সিরিজে। ভারতের হয়ে প্রথম টেস্ট ক্রিকেটে ওপেন করতে নেমেই আস্থার মর্যাদা রেখেছেন রহিত শর্মা। আর এক ওপেনার মায়াঙ্ক আগরওয়াল এই সিরিজের সব থেকে বড় আবিষ্কার। মায়াঙ্কের দখলেই রয়েছে এই সিরিজের সর্বাধিক ৩৩০ রান। এর পর রয়েছেন রহিত শর্মা (৩১৭)। পুনে টেস্ট অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরির সৌজন্যে অধিনায়ক কোহলির ঝুলিতে আপাতত ৩০৫ রান। চেতেশ্বর পূজারা জোড়া হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকালেও এখনও সেঞ্চুরির মুখ দেখেননি। শেষ টেস্টে তাঁর সামনে সেই সুযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামার আগে ফুরফুরে মেজাজেই রয়েছে ভারতীয় শিবির।
অন্যদিকে, হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াইয়ে নামার প্রাক্কালে রীতিমতো সমস্যায় জর্জরিত দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় টেস্টে ডান হাতের কব্জিতে চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছেন ওপেনার এইডেন মার্করাম। একই কারণে রাঁচি টেস্টে খেলতে পারবেন না বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজও। চোট আঘাত সমস্যার সঙ্গে রয়েছে ফর্ম নিয়ে দুশ্চিন্তাও। ভারতীয় বোলারদের সামনে নিজেদের পুরোপুরি মেলে ধরতে পারছে না প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন ওপেনার ডিন এলগার ও উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি’কক। কিন্তু তারপর থেকেই রান-খরায় ভুগছেন তাঁরা। সফরকারী দলের সেরা স্ট্রাইক বোলার কাগিসো রাবাডাকে নিয়ে অনেক প্রত্যাশা ছিল তাদের সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু খ্যাতির বিন্দুমাত্র মর্যাদা রাখতে পারেননি তিনি। বড়সড় প্রশ্নের মুখে রাবাডার ফর্ম। দুই টেস্টে মাত্র চার উইকেটই নিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ভারতের বিরুদ্ধে শেষ টেস্টে জিতে সম্মান উদ্ধারের স্বপ্ন প্রোটিয়াদের কাছে স্বপ্নই থেকে যেতে পারে।