নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত মঙ্গলবার আইএফএ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ সুচারুভাবে সম্পন্ন করলেও আগামী ২৬ মার্চ ভারত-কাতার ম্যাচটি কলকাতায় হওয়া বেশ কঠিন। ভারতের কোচ স্টিম্যাচ অবশ্য ৬২ হাজারের যুবভারতী দেখে মুগ্ধ। ম্যাচের দিন রাতে তিনি বলেছিলেন,‘খেলার রেজাল্ট যাই হোক না কেন এই ম্যাচটি আমি কোনও দিন ভুলতে পারব না। অনেক বড় মঞ্চে কোচ কিংবা ফুটবলার হিসেবে থেকেছি। এই ম্যাচটি আমার হৃদয়ে থাকবে। দল মাঠে নামার মুহূর্তে স্টেডিয়ামে যে দৃশ্য দেখলাম, তা সারা জীবন মনে রাখব।’ স্টিম্যাচের হৃদয়ে কলকাতা থাকায় কাতার ম্যাচ ফুটবলের শহরে আয়োজন করতে আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখার্জি ঝাঁপিয়েছেন। তবে আইএফএ’র পক্ষে কাতার ম্যাচ পাওয়া বেশ কঠিন। শুক্রবার সন্ধ্যায় এআইএফএফ সচিব কুশল দাস দিল্লির ফুটবল হাউস থেকে জানান,‘আগামী ২৬ মার্চ ভারত-কাতার ম্যাচটি আয়োজনের দায়িত্ব ইতিমধ্যেই ওড়িশা ফুটবল সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। ওড়িশা ফুটবল সংস্থা কখনই বলেনি যে, ম্যাচটি আমরা করতে চাই না। ওড়িশা সরকারের সঙ্গে ফেডারেশনের টাই-আপ আছে। দেশের রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে ফেডারেশনের সঙ্গে ওড়িশা সরকারের সম্পর্ক সবথেকে ভালো। ওরা আমাদের বিবিধভাবে সহযোগিতা করে। আই লিগের অ্যারোজ দলটি ওড়িশা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সারা বছর প্র্যাকটিস করে ভুবনেশ্বরে। কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে আই লিগের ম্যাচ খেলে ওড়িশা সরকারের সহযোগিতায়। সেদিন সল্টলেক স্টেডিয়ামের পরিবেশ দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ। গত সাত বছর আমি ফেডারেশনের সচিব। আমার আমলে ভারতীয় দলের কোনও ম্যাচ এই রকম চমৎকারভাবে সম্পন্ন হয়নি। কাতার এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন। ভারত-কাতার ম্যাচটি যুবভারতীতে হলে আমিও ব্যক্তিগতভাবে আনন্দিত হতাম। কিন্তু আমাদেরও বাধ্যবাধকতা আছে। কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের মাঠের অবস্থাও বেশ ভালো। একমাত্র ওড়িশা ফুটবল সংস্থা সরে দাঁড়ালেই বিকল্প ভেন্যু হিসাবে কোনও কেন্দ্রের নাম ভাবতে পারি। আমাকে দেশের ফুটবলের স্বার্থও ভাবতে হবে। শুধু কলকাতার স্বার্থ ভাবলে চলবে না। আইএফএ তো প্রথমে কাতার ম্যাচ চায়নি।’
উল্লেখ্য, ভুবনেশ্বর ম্যাচটি পাওয়ার সময়ে তামিলনাডু আর কোচিও ওই ম্যাচটি চেয়েছিল। ওড়িশা সরকারের সঙ্গে ফেডারেশনের চুক্তির জন্যই ভুবনেশ্বর ম্যাচটি পেয়ে যায়। গত দু’বছর ওড়িশা সরকারের সৌজন্যে সুপার কাপ হচ্ছে ভুবনেশ্বরে। কটক- ভুবনেশ্বরের অগ্রণী কর্তা আশীর্বাদ বেহরা নিজের থেকে সরে না দাঁড়ালে কলকাতায় ম্যাচ হওয়া তাই কঠিন। আইএফএ চেয়ারম্যান সুব্রত দত্তর সঙ্গে আশীর্বাদ বেহরার সম্পর্ক বেশ মধুর। ব্যবসার সূত্রে প্রায়ই তিনি ভুবনেশ্বর যান। এই ক্ষেত্রে আইএফএ চেয়ারম্যানের ভূমিকা অর্থবহ হতে পারে। আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখার্জি অবশ্য আশীর্বাদের সঙ্গে ভুবনেশ্বরে গিয়ে কথা বলতে পারেন।
এই সব কারণেই কুশল দাস বললেন,‘আইএফএ’র প্রস্তাব আর কোচ স্টিম্যাচের ইচ্ছার কথা নিয়ে আমরা পরবর্তীকালে ওড়িশা ফুটবল সংস্থা এবং ওড়িশা সরকারের সঙ্গে কথা বলব। আগে দেখে নিতে চাই নভেম্বরে দু’টি অ্যাওয়ে ম্যাচে ভারত কীরকম পারফরম্যান্স করে। ২৬ মার্চ ম্যাচের আগে যদি দেখা যায় ভারতের বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা আছে, তখন জনসমর্থনের ব্যাপারটিকে সামনে এনে কিছু উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।’ এদিকে, জয়দীপবাবু অবশ্য ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকেও এই ইস্যুতে মাঠে নামাতে চান।