কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
(আদিল খান) (সাদ উদ্দিন)
দোহায় বাছাই পর্বের ম্যাচে কাতারের বিরুদ্ধে ড্র করে বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন উস্কে দিয়েছিল ভারতীয় ফুটবল দল। কিন্তু মঙ্গলবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে র্যাঙ্কিংয়ে প্রায় একশো ধাপ পিছনে থাকা বাংলাদেশের কাছে আটকে গিয়ে সেই স্বপ্নের সমাধি ঘটল। তিন ম্যাচে মাত্র দু’পয়েন্ট সংগ্রহ করে গ্রুপ-ই’র চতুর্থ স্থানে ভারত। ম্যাচ শেষে স্টেডিয়াম ছাড়ার সময় সমর্থকদের আফশোসের রিংটোনেই কেটে গেল উৎসবের আবহ। ম্যাচের ৪২ মিনিটে গোলরক্ষক গুরপ্রীতের অমার্জনীয় ভুলে গোল হজম করে ভারত। জামালের ফ্রি-কিকের ফ্লাইট মিস করেন তিনি। অরক্ষিত সাদ উদ্দিনের হেড জালে জড়ায় (১-০)। বিরতির পরও স্টিম্যাচ-ব্রিগেডের পারফরম্যান্সে তেমন উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি। ৮৮ মিনিটে ব্রেন্ডনের কর্নার থেকে আদিল খানের হেডে মানরক্ষা হয় ভারতের (১-১)।
এতদিন দুই প্রধানের সমর্থকদের দাপাদাপি দেখেছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। সবুজ-মেরুন কিংবা লাল-হলুদ পতাকা নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের হুল্লোড়ের সাক্ষী থাকতে হয়েছে ইএম বাইপাসকে। সেই প্রাদেশিকতার বেড়া চুরমার করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিলোত্তমা দেখিয়েছিল তার জাতীয়তাবোধ। পরাধীন ভারতে বিপ্লবের বীজ বোনা হয়েছিল অবিভক্ত বাংলাদেশে। দেশভাগের পর সেই দুই বাংলাই ছিল একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী।
কোনও সন্দেহ নেই, ভারতীয় দলকে ঘিরে এই উচ্ছ্বাসের কারণ সুনীল ছেত্রী-গুরপ্রীত সিং সান্ধুদের লড়াকু পারফরম্যান্স। বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ওমানের কাছে ১-২ গোলে হারলেও পরের ম্যাচে কাতারকে রুখে দিয়েছিল ভারত। সেই লড়াইয়ের মূল্য সুদে-আসলে চোকাতে তৈরি ছিল মহানগরী। ম্যাচ শুরুর মিনিট পনেরো আগে গ্যালারি জুড়ে বিভিন্ন টিফো। তিন প্রধানের জার্সিতে দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে সমর্থকদের গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে একটিতে। এছাড়া ত্রিবর্ণরঞ্জিত বিশাল জাতীয় পতাকাও শোভা পেয়েছে। সঙ্গে মুঠোফোনের টর্চের আলোয় উদ্ভাসিত দর্শকাসন। গুরপ্রীত-অনিরুদ্ধরা টানেল পেরিয়ে মাঠে পা রাখতেই ষাট হাজারি শব্দব্রহ্ম। জাতীয় পতাকা শরীরে মুড়ে, কণ্ঠে ‘ভারতমাতা কি জয়’ ধ্বনি তুলে সমর্থকদের স্টেডিয়ামে ঢোকার দৃশ্য সত্যিই রঙিন। সেই রং রামধনুর আকার নেবে, এই প্রত্যাশাতেই ম্যাচ শুরু করেছিল যুবভারতী। সাদ উদ্দিনের হেড জালে জড়িয়ে যাওয়ার মুহূর্তে সেই আকাঙ্ক্ষা বদলে যায় আশঙ্কায়। যা বজায় ছিল ম্যাচের শেষ লগ্ন পর্যন্ত।
তবুও এদিন বাঙালি ফিরল এক অন্য আবেগ নিয়ে। ফুটবল খেলায় দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতেও যে ছিল কবিগুরুর স্পর্শ। ‘জনগণমন অধিনায়ক’ ও ‘আমার সোনার বাংলা’ বাজার সময় উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শনে ব্যস্ত বাঙালি। সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচকে স্মরণীয় করে তোলার জন্য ফুল মার্কস দিতেই হবে কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের। ভারতীয় ফুটবলারদের হতশ্রী পারফরম্যান্সও যে উদ্দীপনায় চোনা ফেলতে দেয়নি।