পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
প্র: সিএবি সভাপতি হিসাবে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই বোর্ড সভাপতি পদে। কেমন লাগছে?
সৌরভ: ভালো, খুব ভালো। তৃপ্তিদায়ক। নতুন দায়িত্ব। আশা করি, যতদিন সময় পাবো, ভালো কাজ করব।
প্র: ম্যাচটা কঠিন ছিল বলে কি একটু ক্লান্ত দেখাচ্ছে?
সৌরভ: তিন রাত ঘুমোতে পারিনি। ফোনের পর ফোন। বৈঠকের পর বৈঠক করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। ক্রিকেট প্রশাসকের কাজটা বেশ কঠিন । বোর্ড সভাপতি হওয়ার কথা ভেবে তো শহর ছাড়িনি। হঠাৎ সব কিছু হয়ে গেল। আপাতত কয়েকদিন নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারব।
প্র: লর্ডসে সেঞ্চুরি করে শহরের ফেরার স্মৃতি কি উস্কে দিল?
সৌরভ: ওটা পুরোপুরি আলাদা। ৯৬’র আবেগ ও উন্মা ছিল অনেক বেশি বর্ণময়। ওটা আমার ক্রিকেট জীবনের সেরা অধ্যায়। কারণ, প্রথমবার আমি দেশের হয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলাম। ওটার সঙ্গে কোনও কিছুরই তুলনা চলে না।
প্র: ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন হিসাবে যে চ্যালেঞ্জটা ছিল, তার থেকে কি এটা আরও বেশি কঠিন?
সৌরভ: দু’টো একেবারেই আলাদা। একটা মাঠের ভিতরে। আর একটা মাঠের বাইরে। খেলোয়াড় জীবনে সমালোচনা অনেক বেশি হয়। আমি যখন ভারতীয় দলের অধিনায়ক হয়েছিলাম, তখন কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল ভারতীয় ক্রিকেট। সেই সময় দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছিল। তা সফলভাবে পালন করেছি। গত তিন বছর ধরে ভারতীয় ক্রিকেটে এমার্জেন্সি চলছে। সুদিন ফিরিয়ে আনতে হবে।
প্র: শোনা যাচ্ছে, আপনি কিছু দিন পরেই রাজনীতিতে পা রাখবেন?
সৌরভ: না, সেই সম্ভাবনা নেই। আমি গতকাল অমিত শাহজির ট্যুইট দেখেছি। উনি একেবারে ঠিক কথাই বলেছেন। আগেও আমাকে রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আমি মমতাদির সঙ্গেও দেখা করেছি অতীতে। তারপর আপনারা কী হয়েছে দেখেছেন। আমি অমিত শাহর সঙ্গে প্রথমবার সাক্ষাৎ করেছি। খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। তবে আমি একবারের জন্য অমিতজির কাছে জানতে চাইনি, বিসিসিআইয়ের কোনও পদ পাব কি না। রাজনীতিতে যোগ দান নিয়েও কোনও কথা হয়নি আমাদের মধ্যে।
প্র: বিদেশের মাটিতে টেস্টে দলের পারফরম্যান্সে কি খুশি?
সৌরভ: অবশ্যই খুশি। বিরাট কোহলিরা খুব ভালো খেলছে। তবে আমাদের বড় ট্রফির খরা চলছে। গত সাতটি বড় টুর্নামেন্টে খেলে একটাও জিততে পারিনি। তার মানে আমি বলছি না, যে সব ট্রফিই জিততে হবে। সেটা সম্ভবও নয়। আমাদের দলে প্রতিভার কোনও অভাব নেই। মানসিকতার পরিবর্তন দরকার রয়েছে। এই বিষয়ে বিরাটকে নজর দিতে হবে।
প্র: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তুলে দিয়ে আইসিসি প্রত্যেক বছর টি-২০ বিশ্বকাপ করতে চাইছে। কি বলবেন?
সৌরভ: টি-২০ ক্রিকেট খুবই জনপ্রিয়। সেটা আইসিসি’ও বুঝতে পারছে। সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন দরকার। আমি দু’টো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেছিলাম। একবার যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়নও হয়েছিলাম। তখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিই ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় টুর্নামেন্ট। কিন্তু টি-২০ ক্রিকেট আসার পর দর্শকরা আরও বেশি করে মাঠে আসছেন। আমার মনে হয়ে সেই কারণেই আইসিসি পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে।
প্র: ধোনির সঙ্গে কি অবসর নিয়ে কথা বলবেন?
সৌরভ: এই তো সবে দায়িত্ব পেয়েছি। প্রয়োজন পড়লে নিশ্চয়ই কথা বলব।
প্র: বারবার আঘাত পেয়ে ফিরে আসা যেন আপনার রক্তে মিশে। প্রতিক্রিয়া কী?
সৌরভ: ভারত বর্ষের ইতিহাসে তিন জন প্লেয়ার তিনশো ওয়ান ডে ও একশো টেস্ট খেলেছে। শচীন তেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড় ও আমি। আমার মনে হয় বিরাট কোহলি খেলবে। শীর্ষে থাকলে চলার পথে গোলাপ বিছানো থাকে না। পদে পদে কাঁটা ছড়ানো থাকে। প্রত্যেকে জীবনেই ওঠা-পড়া থাকে। আমার ক্ষেত্রেও সেটা ঘটেছে। সেটা আমি মানিয়ে নিয়ে এগিয়ে চলেছি।
প্র: ঋদ্ধিমান সাহাকে নিয়ে কি বলবেন?
সৌরভ: আমি খুশি ঋদ্ধি দেশের হয়ে খেলছে। উইকেট কিপিং নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। তবে ওকে একশো টেস্ট খেলতে হলে রান করতে হবে। এই সিরিজটা ঋদ্ধির কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্র: জগমোহন ডালমিয়া দেখানো পথেই হাঁটবেন?
সৌরভ: উনি যেটা করবেন মনে করতেন, সেটা করে দেখাতেন। অনেক সাফল্য অর্জন করেছেন। জগমোহন ডালমিয়া অনেক বড় প্রশাসক। আমি সবে দু’ধাপ এগিয়েছি।
প্র: কোচ রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে?
সৌরভ: রবি শাস্ত্রী কি করল আবার? পাঁচ বছর ধরে অনেক করেছি। যে ভালো খেলবে সে জাতীয় দলে ডাক পাবে। মহম্মদ সামি, ঋদ্ধিমান সাহা দেশের হয়ে খেলছে। অভিমন্যু ঈশ্বরণ যে কোনও দিন সুযোগ পেতে পারে। একটা রাজ্য থেকে তিনজন নকিং। দু’জন খেলছে, একজন সুযোগের অপেক্ষায়। আমি যখন খেলতাম, তখন কেউ ছিল না। আমি একাই খেলতাম। কোনও ম্যানুপুলেশন হবে না। যোগ্য ক্রিকেটার জাতীয় দলে সুযোগ পাবে।
প্র: গোলাপি বলে টেস্ট ক্রিকেটে জন্য বার বার সওয়াল করেছেন। এবার কি ভারতীয় দল পিঙ্ক বলে টেস্ট খেলবে?
সৌরভ: টেস্ট ক্রিকেট দেখতে মাঠে লোক আসে না। তাই খেলাটার জনপ্রিয়তা ফেরাতে কিছু করা দরকার। গোলাপি বলে ফ্লাড লাইটে খেলা হলে দর্শকদের আগ্রহ বাড়বে। ভারতীয় দলের সঙ্গে আলোচনার আগে কথা বলতে হবে মেম্বার্সদের সঙ্গে।