কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
সৌরভ গাঙ্গুলিকে ঘিরে তিলোত্তমা কলকাতার বাঁধ ভাঙা আবেগ-উন্মাদনা নতুন নয়। খেলোয়াড় জীবনে তিনি ছিলেন ক্রিকেটজনতার কাছে হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা। ১৯৯৬ সালে লর্ডসে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করে তিনি যখন শহরে পা রেখেছিলেন, কয়েক মুহূর্তের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল উত্তর কলকাতা। ২০০৭ সালে আইসিসি বিশ্বকাপের ফাইনালে জোবার্গে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেও বাংলার মাটিতে বীরের সংবর্ধনা পেয়েছিলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক।
মঙ্গলবার বিকেল ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরে এলে সেই স্মৃতি। যুদ্ধ জয়ের তৃপ্তি সৌরভের চোখে-মুখে। এন শ্রীনিবাসন, ব্রিজেশ প্যাটেলদের যাবতীয় চক্রান্ত ভেস্তে দিয়ে তিনি যেন অভিমন্যু। অসাধ্যকে সাধন করাই তাঁর নেশা। তিনি সৌরভ গাঙ্গুলি।
বিমানবন্দর থেকে বি সি রায় ক্লাব হাউস, সৌরভ যেখানেই পা রেখেছেন আবেগের বিস্ফোরণ ঘটেছে প্রতিটি মুহূর্তে। ঘড়িতে তখন বিকেল ৫-১৩ মিনিট। নীল ট্রাইজার, সাদা রংয়ের স্ট্রাইপ শার্ট পরে সৌরভ যখন লিফটে চড়ে নীচে নেমে আসছেন, তখন দাদা-দাদা গর্জনে ফেটে পড়ছে বিমানবন্দরের টারম্যাক। বিমানবন্দরের কর্মী ও নিরাপত্তারক্ষী, সহযাত্রীদের উন্মাদনা দেখে বার বার থমকে দাঁড়িয়েছেন নতুন বোর্ড সভাপতি। জনতার উজাড় করে দেওয়া ভালোবাসায় বলতে চেয়েছেন, ‘মহারাজা তোমারে সেলাম...।’
বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় দেখে পুলিশ উলটো পথে সৌরভকে বের করে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু মহারাজ রাজি হননি। তিন নম্বর গেট দিয়ে নিরাপত্তার বেষ্টনী পেরিয়ে সৌরভ যখন বাইরে বেরোলেন, তখন তিল ধারণের জায়গা নেই। কে আগে মালা পরাবেন, তা নিয়ে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল সিএবি কর্তাদের মধ্যে। প্রচণ্ড ঠেলাঠেলিতে একটু বিরক্ত হন ‘প্রিন্স অব ক্যালকাটা’। তবে যাবতীয় বিড়ম্বনা ভেসে গিয়েছে আবেগের জোয়ারে।
বোর্ড সভাপতি হয়ে সৌরভ আসছেন বলে সেজে উঠেছিল সিএবি। প্রবেশদ্বারে বসেছিল তোরণ। দেওয়াল জুড়ে ছিল মহারাজের বড় বড় কাট-আউট। সিএবি কর্তা, অসংখ্য ক্রিকেটপ্রেমী ও মিডিয়ার ভিড়ে সৌরভের কনভয় ঢুকতে পারেনি ক্লাব হাউসের মূল ফটকে। বাধ্য হয়েই গাড়ি থেকে নেমে পড়েন মহারাজ। লাল কার্পেটে পুষ্প বৃষ্টিতে স্বাগত জানানো হয় নবনির্বাচিত বোর্ড সভাপতিকে। সৌরভ গাড়ি থেকে নামতেই হাজার ওয়াটের আলো জ্বলে ঝলসে ওঠে সিএবি’র সামনে। আতসবাজির রোশনাইয়ে রঙিন তখন ইডেন চত্ত্বর।
সিএবি’তে ঢুকেই সিনিয়র মেম্বার্সদের সঙ্গে করমর্দন সারেন মহারাজ। লবিতেই সৌরভকে বরণ করে নেন সিএবি সচিব অভিষেক ডালমিয়া। পরে তিন তলায় কাটা হয় বিশাল কেক। নতুনরূপে সেজে উঠছে সিএবি। আগামী দশ মাস বেসরকারিভাবে বিসিরায় ক্লাব হাউসই যে হতে যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেটের হেডকোয়ার্টার!