পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৮৫/৮
বিশাখাপত্তনম, ৪ অক্টোবর: ডিন এলগার, কুইন্টন ডি’ককের সেঞ্চুরির সুবাদে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৯ রানে তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পর অনেকেই হয়তো ভেবেছিলেন, তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং। দিনের শুরুটা অবশ্য খারাপ হয়. ‘টিম ইন্ডিয়া’র জন্য। টেম্বা বাভুমাকে ১৮ রানেই সাজঘরে ফেরত পাঠিয়েছিলেন ইশান্ত শর্মা। কিন্তু সেই সুযোগ দলের বাকি বোলাররা কাজে লাগাতে ব্যর্থ।
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের সাহসী ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করতেই হবে। বিশেষ করে ওপেনার ডিন এলগারের। তিনি এক প্রান্তে কুম্ভের মতো দলের পতন রোধের চেষ্টা করেছেন প্রারম্ভিক পর্বে। এলগারের চোয়াল চাপা লড়াই ও ক্যাপ্টেন ফাফ ডু’প্লেসির অভিজ্ঞতার মিশ্রণে ভারতীয় বোলারদের সামনে প্রতিরোধের প্রাচীর খাড়া করতে সফল হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। পঞ্চম উইকেটে এলগার ও ডু’প্লেসি ১১৫ রান যোগ করে পাল্টা চাপে ফেলে দেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে। একটা সময় মনে হয়েছিল, চার স্পেশালিস্ট বোলার নিয়েই ভারত ম্যাচটা সহজেই জিতবে। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে পঞ্চম স্পেশালিস্ট বোলারের গুরুত্ব কতটা, তা নিশ্চয়ই এদিন হাড়েহাড়ে টের পেল ভারতীয় ‘টিম ম্যানেজমেন্ট’। ইশান্ত শর্মা ১৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে পেয়েছেন মাত্র ১টি উইকেট। মহম্মদ সামি ১৫ ওভার বল করে ৪০ রান দিয়েছেন। তাঁর ঝুলি শূন্য। ‘টিম ইন্ডিয়া’র দুই তারকা স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা দ্বিতীয় দিনের শেষবেলায় যেভাবে স্পিনের ভেলকিতে দক্ষিণ আফ্রিকার তিনটি উইকেটের পতন ঘটিয়েছিলেন, তা দেখে মনে হয়েছিল অতিথিদের ফলো-অন করানোর সুযোগ পাবে কোহলি বাহিনী। কিন্তু গতকালের সাফল্যের রেশ ধরে রাখতে পারেননি অশ্বিন-জাড্ডু জুটি। তাঁরা যখন স্বমহিমায় ফিরেছেন, ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। ফাফ ডু’প্লেসি ৫৫ রানে অশ্বিনের বলে পূজারার হাতে ধরা পড়েন। তবে এলগারকে থামানো যায়নি। প্রতি-আক্রমণেই ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কৌশল নেন দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনারটি। ৭৪ রানে জাদেজার বলে এলগারের ক্যাচ ফেলেন ঋদ্ধিমান। আর পিছন ফিরে তাকাননি তিনি। অশ্বিনের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে এলগার শতরান পূর্ণ করেন। ষষ্ঠ উইকেটে কুইন্টন ডি’ককের সঙ্গে জুটি বেঁধে এলগার ১৬৫ রান তোলায় দক্ষিণ আফ্রিকা ফলো-অনের খাঁড়া সহজেই কাটিয়ে ওঠে। তবে ভারতের ফিল্ডিং ছিল খুবই নিম্নমানের। সাত রানে রহিত শর্মা যদি কুইন্টন ডি’ককের ক্যাচটি না ফেলতেন, তাহলে এভাবে আপসোস করতে হত না কোহলিকে। অবশেষে জাদেজার বলে এলগারের ক্যাচ বাউন্ডারি লাইন থেকে অনেকটা দৌড়ে ধরেন পূজারা। দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনারটির ইনিংসে রয়েছে ১৮টি বাউন্ডারি ও চারটি ওভার বাউন্ডারি। এলগারের মতো ডি’ককও ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তাঁর লেগেছে ১৪৯টি বল। ততক্ষণে অবশ্য রানের ব্যবধান অনেকটাই কমিয়ে আনতে সফল হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। কুইন্টন ডি’কককে ১১১ রানে আউট করেন অশ্বিন। ডি’ককের ইনিংস সাজানো রয়েছে ১৬টি বাউন্ডারি ও দু’টি ওভার বাউন্ডারি দিয়ে। ফিলান্ডার (০) খাতা খোলার আগেই অশ্বিনের বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন। সেই সঙ্গে টেস্টে ২৭বার ইনিংসে পাঁচটি ও তার বেশি উইকেট নেওয়ার নজির গড়লেন অশ্বিন। তৃতীয় দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৮৫ রান তুলেছে। সেনুরান মুথুস্বামী ১২ ও কেশব মহারাজ ৩ রানে ক্রিজে আছেন। ভারত এগিয়ে এখনও ১১৭ রানে। শনিবার ম্যাচের চতুর্থ দিন। যত বেশি রানের লিড পাওয়া যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে অশ্বিন- জাদেজাদের। কারণ, চতুর্থ ইনিংসে এই পিচে ব্যাট করা সহজ হবে না। তাই ভারত যদি সাড়ে তিনশোর উপর টার্গেট দিতে পারে, তাহলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে তৃতীয় ম্যাচে জয় পেতে সুবিধা হবে কোহলি ব্রিগেডের।
তৃতীয় দিনের স্কোর: প্রথম ইনিংসে ভারত ৫০২/৭ (ডিক্লেয়ার্ড)
দক্ষিণ আফ্রিকা (৩ উইকেটে ৩৯ থেকে) এলগার কট পূজারা বোল্ড জাদেজা ১৬০, বাভুমা এলবিডব্লু বোল্ড ইশান্ত ১৮, ডু’প্লেসি কট পূজারা বোল্ড অশ্বিন ৫৫, ডি’কক বোল্ড অশ্বিন ১১১, মুথুস্বামী ব্যাটিং ১২, ফিল্যান্ডার বোল্ড অশ্বিন ০, মহারাজ ব্যাটিং ৩, অতিরিক্ত ১৭, মোট ১১৮ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৮৫। উইকেট পতন: ৬৩/৪, ১৭৮/৫, ৩৪২/৬, ৩৭০/৭, ৩৭৬/৮
বোলিং- ইশান্ত: ১৪-২-৪৪-১, সামি: ১৫-৩-৪০-০, অশ্বিন: ৪১-১১-১২৮-৫, জাদেজা: ৩৭-৪-১১৬-২, বিহারি: ৯-১-৩৮-০, রহিত: ২-১-৭-০।