কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট। দূর ভ্রমণের সুযোগ। অর্থ প্রাপ্তির যোগ। যে কোনও ... বিশদ
প্রথমবার দেশের মাটিতে টেস্ট খেলার চাপ কাটিয়ে শতরান হাঁকানোর পর মায়াঙ্ককে বুকে টেনে নেন রহিত। এর আগে চারটি টেস্টে তিনটি অর্ধশতরান করলেও সেঞ্চুরি ছিল অধরা। তবে শতরানেই আটকে থাকেননি মায়াঙ্ক। অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরিকে তিনি রূপান্তরিত করেছেন ডাবল-সেঞ্চুরিতে। অতীতে এই নজির গড়েছিলেন দিলীপ সরদেশাই, বিনোদ কাম্বলি, করুণ নায়ার।
রহিত শর্মার সঙ্গে জুটি বেঁধে ৩১৭ রান যোগ করেন মায়াঙ্ক। ভারতীয়দের মধ্যে ওপেনিং জুটিতে এটাই তৃতীয় সর্বাধিক রান। ১৯৫৬ সালে বিনু মানকড়-পঙ্কজ রায় চেন্নাইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪১৩ রান করেছিলেন। ২০০৬ সালে রাহুল দ্রাবিড়-বীরেন্দ্র সেওয়াগ ওপেন করতে নেমে লাহোরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তুলেছিলেন ৪১০ রান। ২০০৮ সালে চেন্নাই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় উইকেটে দ্রাবিড়-সেওয়াগ জুটি ২৬৮ রান করেছিলেন। এতদিন এটাই ছিল প্রোটিয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে যে কোনও পার্টনারশিপে ভারতের সর্বাধিক রান। সেই রেকর্ডও ভেঙে দিলেন রহিত-মায়াঙ্ক জুটি।
মোট ৮২ ওভারে ক্রিজে ছিলেন ভারতের দুই ওপেনার। ১১৫ রান নিয়ে খেলতে নামেন ‘হিটম্যান’। শুরু থেকেই তিনি ছিলেন স্বকীয় মেজাজে। একটা সময় মনে হয়েছিল, রহিত ডাবল-সেঞ্চুরি করবেন। কিন্তু ১৭৬ রানে কেশব মহারাজের বলে স্টাম্প হন ‘হিটম্যান’। টেস্টে প্রথম শতরান পূর্ণ করতে মায়াঙ্কের লেগেছে ২০৪টি বল। একটা সময় ভারতের রান রেট ছিল ৪.২৩। তখনই বোঝা গিয়েছিল, রানের পাহাড় খাড়া করবে ‘টিম ইন্ডিয়া’। তবে চেতেশ্বর পূজারার অফ ফর্ম ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টেকে চিন্তায় রাখবে। পূজারা মাত্র ৬ রান করেন। ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলিও ব্যর্থ। ২০ রান করে তিনি মুথুস্বামীর বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন। তবে মায়াঙ্ককে টলাতে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। টেস্টে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করতে ভারতীয় ওপেনারটির লেগেছে ৩৫৮টি বল। শেষ পর্যন্ত তিনি ৩৭১ বলে ২১৫ রানে আউট হন। মায়াঙ্কের ইনিংসে রয়েছে ২৩টি বাউন্ডারি ও ৬টি ওভার বাউন্ডারি।
ভারতের মিডল অর্ডারও ব্যর্থ। অজিঙ্কা রাহানে (১৫), হনুমা বিহারি (১০) তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দেন। তবে রবীন্দ্র জাদেজা ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন। ঋদ্ধিমান সাহা দ্রুত গতিতে ১৬ বলে করেন ২১ রান। অশ্বিন ১ রানে অপরাজিত থাকেন। ৭ উইকেটে ৫০২ রান তুলে প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেয় ভারত।
বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম দিনে একটি উইকেট পড়েনি। তবে দ্বিতীয় দিনে ছবিটা পুরো পাল্টে গিয়েছে। দুই দলের মোট দশটি উইকেটের পতন ঘটেছে। তার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা ইতিমধ্যেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছে। আসলে প্রত্যাশার তুলনায় বল অনেক বেশি টার্ন করছে। সেক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় দিনের শেষে প্রোটিয়া বাহিনী ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩৯ রান তুলেছে। তারা পিছিয়ে রয়েছে ৪৬৩ রানে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন যেভাবে বল ঘোরাচ্ছেন, তাতে প্রতিপক্ষকে ফলো-অন করানোর সুযোগ পেতে পারেন কোহলিরা। দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার আইদেন মার্করামকে ৫ রানে বোল্ড করেন অশ্বিন। তাঁর দ্বিতীয় শিকার বাভুমা (৪)। আর এক স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা খাতাই খুলতে দেননি ডেন পিয়েটকে। অনেকদিন পর টেস্টে ফের অশ্বিন-জাদেজা জুটির ভেলকি দেখা যাচ্ছে।