শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
(পিন্টু, বোরহা) (কামো, জগন্নাথ)
নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা: সোমবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে ভবানীপুরের বিরুদ্ধে খেতাবি লড়াইয়ের অতি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দু’বার এগিয়ে গিয়েও জিততে পারল না ইস্ট বেঙ্গল। স্প্যানিশ কোচ আলেজান্দ্রোর ইস্ট বেঙ্গল ম্যাচ শুরুর মাত্র সাত মিনিটের মধ্যে এগিয়ে গিয়েছিল। সূচনায় গোল পাওয়ার পর সমর্থকরা ভেবেছিলেন, দুরন্ত খেলে প্রতিপক্ষকে দুরমুশ করবে তাঁদের প্রিয় দল। কিন্তু বিধি বাম। শেষ পর্যন্ত দু’পয়েন্ট খোয়ানোর হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হল ক্লাব অন্ত প্রাণ সমর্থকদের।
কল্যাণীতে সোমবার ম্যাচের প্রথম ১৫ মিনিটে খেলার নিয়ন্ত্রণ ছিল লাল- হলুদের হাতেই। তারপর মাঝমাঠে লালরিনডিকার মিস পাসে ছন্দ হারায় ইস্ট বেঙ্গল। ভবানীপুরের কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে শেষ ম্যাচে ভালো খেলা হুয়ানকে আটকে দেন রাইট হাফ ডুডোজকে কিছুটা নামিয়ে খেলানোর জন্য। এর ফলে ডুজোজ সাহায্য করেন দলের রাইট হাফ ইমানুয়েল হককে। পায়ের মাংস পেশিতে টান ধরে কামো বেরিয়ে যাওয়ার পর ইস্ট বেঙ্গল ম্যাচে ফিরেছিল। ৭৭ এবং ৭৯ মিনিটে দু’টি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন কোলাডো ও মার্কোস। শেষ পর্যন্ত ৮১ মিনিটে এগিয়ে গিয়েও সেই লিড দু’মিনিটও ধরে রাখতে পারেনি লাল- হলুদ। ইস্ট বেঙ্গলের এই ড্রয়ে লিগের খেতাবি লড়াইয়ে অঙ্কের বিচারে তো বটেই, বাস্তবেব নিরিখে ফিরে এল মোহন বাগান। তবে সবথেকে বেশি লাভবান হল পিয়ারলেস। সাত ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট পেয়ে তারাই এখন লিগ শীর্ষে। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা ভবানীপুর, ইস্ট বেঙ্গল ও মোহন বাগান আট ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে।
প্রতিটি ম্যাচে দল পরিবর্তন আলেজান্দ্রোর বদভ্যাস। এদিনও তিনি দলে চারটি চেঞ্জ করেন। সামাদকে না খেলিয়ে তিনি পিয়ারলেসকে পেনাল্টি উপহার দেওয়ার খলনায়ক কমলপ্রীতকে ব্যবহার করেন। কামোর গোলের সময়ে কমলপ্রীত ছিলেন দর্শক। অন্যদিকে ভবানীপুরে তিন আফ্রিকান আছেন জেনেও কাসিম আইদারার মতো কার্যকরী মিডল হাফকে জার্সিই দিলেন না আলেজান্দ্রো! বিরতিতে তাঁকে দেখা গেল, এই ভালো মাঠে খেলার সুযোগ না পাওয়ার জন্য আক্ষেপ করতে। লালরিনডিকা এদিন ২০ মিনিটের পর থেকে শুধুই মিস পাস করলেন। কামোর চমৎকার গোলের নেপথ্যে লালরিনডিকার মিস পাস। ডিকার মিস পাসের কারণেই ইস্ট বেঙ্গলের মিডল করিডর ‘হাঁ’ হয়ে যাচ্ছে। সেই ফাঁক পূরণ করতে পারছেন না বোরহা। গতবারের ফর্মের ধারেকাছেও নেই তিনি। জনি অ্যাকোস্টার অনুপস্থিতি ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। রক্ষণে প্রতিদিন ‘খেলোয়াড় বদল’ খেতাবি দৌড়ে ইস্ট বেঙ্গলকে পিছিয়ে দিচ্ছে।
প্রথম পাঁচ মিনিটের মধ্যে দু’টি ফ্রি-কিক পেয়েছিল ইস্ট বেঙ্গল। এই সময়ে পিন্টু মাহাতা ডান প্রান্ত থেকে দু’টি বিপজ্জনক আক্রমণ তুলে আনেন। দু’বারই ভিক্টর বল ক্লিয়ার করেন কর্নারের বিনিময়ে। এই সময়ে ভবানীপুর ডিফেন্ডাররা হঠাৎ গুটিয়ে যান। দুই স্টপার ভিক্টর ও কিংশুক দেবনাথের মাঝখান দিয়ে নাওরেমের দেওয়া বল থেকে চকিত শটে ইস্ট বেঙ্গলকে এগিয়ে দেন পিন্টু মাহাতা। ভবানীপুর গোলরক্ষক অভিজিৎ দত্তর হাতে লেগে বলটি গোলে ঢুকে যায় (১-০)। এরপর মাঝমাঠে কোলাডোদের ব্যর্থতায় ভবানীপুর ম্যাচে ফেরে।
২৩ মিনিটে কামো মাঝখান দিয়ে তিনজনকে কাটিয়ে বক্সে বল দেন অরক্ষিত শরণ সিংকে। তিনি আগুয়ান ইস্ট বেঙ্গল গোলরক্ষক লালথুয়ামা রালতেকে পরাস্ত করতে পারেননি। তিন মিনিট পর ফ্রান্সিস জেভিয়ারের সেন্টারে ফাঁকায় থাকা কিংশুক মাথা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন। ৫৮ মিনিটে ডিকার মিস পাস ধরে ডান পায়ের দুরন্ত কার্লিং শটে ১-১ করেন কামো।
খেলার ৬০ মিনিট থেকে ৭৫ মিনিট পর্যন্ত কামো-ডুডোজ- ফ্রান্সিসের ত্রিমুখী আক্রমণ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয় ইস্ট বেঙ্গল রক্ষণ। গোল মিস করেন কামো ও জেভিয়ার। ডেঞ্জার জোনে নেওয়া ডুডোজের ফ্রি-কিক অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৮২ মিনিটে বক্সের বাইরে ডানদিক কর্নার ফ্ল্যাগের কাছে পিন্টুকে আটকাতে গিয়ে হ্যান্ডবল করেন কিংশুক। কোলাডোর কর্নারে পিছন থেকে এসে হেড করে ২-১ করেন বোরহা। দুই মিনিটের মধ্যেই পরিবর্ত জগন্নাথ সানা ডান দিক থেকে বল নিয়ে ঢুকে ২-২ করেন। ৫৭ মিনিটে হুয়ানের পরিবর্তে নামা স্ট্রাইকার মার্কোস গোটা ম্যাচে কার্যত ঘুরে বেড়ালেন। তাঁকে নিয়ে হতাশা বাড়ছে টিম ম্যানেজমেন্টের।