বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
খানজেমবাম বিদ্যাসাগর সিং ইস্ট বেঙ্গলের ইউথ সিস্টেমের ফসল। ২০১৬ সাল থেকে ইস্ট বেঙ্গল জুনিয়র দলে তৈরি হয়েছেন বিদ্যাসাগর। গতবছর তাঁকে সিনিয়র দলে নিয়ে আসা হয়। মণিপুরের এই ফরোয়ার্ড ডুরান্ড কাপে ইস্ট বেঙ্গলের ত্রাতা। তিন ম্যাচ মিলিয়ে মোট পাঁচ গোল তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে। যাঁকে এই প্রজন্মের অনেকেই দেখেননি সেই মজিদ বাসকারকে দেখতে গত দু’দিন ইস্ট বেঙ্গলপ্রেমীদের রাস্তায় ঢল নেমেছিল, অথচ প্রিয় দলের ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে মেরেকেটে পাঁচশোর মতো দর্শক! ম্যাচ শেষ হওয়ার পর তাঁদের মুখে অবশ্য বিদ্যাসাগরকে নিয়ে জোর আলোচনা। অনেকেই বলছিলেন, ‘জবি জাস্টিনের পরিবর্ত বোধহয় আমরা পেয়ে গেলাম।’
ম্যাচের শুরু থেকেই ঝড়ের গতিতে আক্রমণ তুলে আনে নৌশাদ মুসার কোচিংয়ে বেঙ্গালুরু এফসি’র ‘বি’ দল। দলটির গোটা সাতেক প্লেয়ার আইএসএলের ম্যাচে খেলেছেন। ফলে পেশাদার বেঙ্গালুরু এফসি ম্যানেজমেন্ট বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে জুনিয়রদের তৈরি করছেন। ১৮ মিনিটে এডমুন্ড লালরিনডিকার শট ক্রসপিসে ধাক্কা খেয়ে ফিরে এলে ফিরতি বলে দারুণভাবে চোখ রেখে দ্বিতীয় পোস্টে প্লেসিং করে গোল করেন অজয় ছেত্রী (১-০)। পিছিয়ে থেকে গোল শোধ করতে একটা সময় ইস্ট বেঙ্গলের প্রায় নাভিঃশ্বাস উঠে যায়। ম্যাচের ৯ মিনিটে নিজেদের বক্সে কোলাডোকে ফাউল করেন বিএফসি পরাগ সতীশ শ্রীভাস। ইনডাইরেক্ট ফ্রি-কিক পায় ইস্ট বেঙ্গলের। কোলাডোর টোকা থেকে লালরিনডিকা রালতের দুর্বল শটে ইস্ট বেঙ্গলের গোলের সুযোগ নষ্ট হয়। গতি ও প্রেসিং ফুটবলে বিএফসি ফুটবলারদের আক্রমণে একসময় ত্রাহি ত্রাহি রব ওঠে ইস্ট বেঙ্গল রক্ষণে। আসলে ইস্ট বেঙ্গলের অ্যাটাকে বিষ না থাকায় সহজেই প্রতিআক্রমণে উঠে আসেন বিএফসি’র উদ্যমী তরুণ ফুটবলাররা। বিএফসি ডিফেন্ডাররা কয়েকবার মোক্ষম ভুল করলেও তার ফায়দা নিতে পারেনি ইস্ট বেঙ্গল মূলত আক্রমণে তীক্ষ্ণতা ও ভেদশক্তির অভাবে। কারণ আপফ্রন্টে কোলাডোর পাশে বইথাং হাওকিপ একেবারেই ম্রিয়মান ছিলেন।
বিরতির পর সেটা বুঝেই ইস্ট বেঙ্গল কোচ আলেজান্দ্রো পরিবর্তন করেন। বইথাংয়ের বদলে বিদ্যাসাগর। তিনি নামতেই আক্রমণ কিছুটা সচল হয় ইস্ট বেঙ্গলের। ৪৭ মিনিটে বিদ্যাসাগরের জোরালো শট সরাসরি সেভ করেন বেঙ্গালুরুর গোলরক্ষক আদিত্য পাত্র। এরপরেই বেঙ্গালুরুর অগাস্টিন বক্সে ফাউল করলে ফ্রি-কিক হেলায় নষ্ট করেন কোলাডো। ৫৯ মিনিটে ব্র্যান্ডনকে বিএফসি ডিফেন্ডার ব্লক করার চেষ্টা করলে তৈরি হওয়া লুজ বলে ১৮ গজের বক্সের মাথায় দাঁড়িয়ে বাঁ-পায়ের দুরন্ত ভলিতে গোল করে সমতা ফেরান বিদ্যাসাগর (১-১)। ৭৩ মিনিটে কোলাডোর থেকে বল রিসিভ করে একটা দুরন্ত সোলো রানে ডান পায়ের শটে জয়সূচক গোল করেন বিদ্যাসাগর (২-১)। ইনজুরি টাইমে তিনি হলুদ কার্ড দেখেছেন।
ইস্ট বেঙ্গল: রালতে, কমলপ্রীত সিং (সামাদ আলি মল্লিক), আশির আখতার, বোরহা গোমেজ, অভিষেক আম্বেকর, কাসিম আইদারা, লালরিনডিকা রালতে (টনডোম্বা সিং নাওরেম), পিন্টু মাহাতা, ব্র্যান্ডন, বইথাং হাওকিপ (বিদ্যাসাগর সিং), হাইমে স্যান্টোস কোলাডো।