আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
ভারতীয় নির্বাচকমণ্ডলীর প্রধান এমএসকে প্রসাদ যাঁকে থ্রি ডায়মেনশনাল ক্রিকেটার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন সেই বিজয় শঙ্কর বেশ কয়েকটি ম্যাচে সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগাতে না পেরে চোটগ্রস্ত হয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেন। যখন বারবার সব পরীক্ষানিরীক্ষা ব্যর্থ হচ্ছে তখন রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচে রবীন্দ্র জাদেজাকে যেন ক্ষমাঘেন্না করে প্রথম একাদশে রাখা হয়। আর জাড্ডু প্রথম সুযোগটাই দারুণভাবে কাজে লাগালেন। তিনি এই ভারতীয় স্কোয়াডে সন্দেহাতীত ভাবে ক্ষিপ্রতম ফিল্ডার। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে অন্যুন ২০টি রান তিনি বাঁচিয়ে দেন। আর বল হাতে নির্ধারিত ১০ ওভারে মাত্র ৪০ রান দিয়ে একটি উইকেট দখল করেন। অতঃপর সেমি-ফাইনালে জাড্ডুর অল-রাউন্ড পারফরম্যান্স দেখে ক্রিকেট দুনিয়া। অনেক বিশেষজ্ঞকেও ম্যাচের পর বলতে শোনা গেল, ‘ইন্ডিয়ান টিম ম্যানেজমেন্টের কী এমন দুর্মতি হয়েছিল যে রবীন্দ্র জাদেজাকে দিনের পর দিন বসিয়ে রাখতে হয়?’ এই ম্যাচেও দুর্দান্ত ফিল্ডিং করে তিনি বাঁচিয়েছেন ২১টি রান। ডাইরেক্ট থ্রোয়ে উইকেট ভেঙে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান নিউজিল্যান্ডের সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী রস টেলরকে। তারপর টম লাথাম যখন মারমুখী হয়ে উঠছেন তখন ভুবির বলে বাউন্ডারি লাইনের কিছুটা আগে সঠিক জায়গায় না থেকেও লাফিয়ে শূন্যে উড়ে আসা ক্যাচটি তালুবন্দি করে নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের স্কোর ২৫০ রানে নীচে নামিয়ে রাখতে বড় ভূমিকা নেন জাড্ডু। বল হাতে তিনি ছিলেন অতিশয় কৃপণ। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কম রান তিনি দিয়েছেন। তাঁর বোলিং গড়, ১০-০-৩৪-১। এরপর ব্যাট হাতে দলের চূড়ান্ত দুঃসময়ে এই গুজরাট তনয় ৫৯ বলে ঝকঝকে ৭৭ রানের একটি মারমুখী ইনিংস খেলে ভারতকে প্রায় জয়ের কাছাকাছি এনে দিয়েছিলেন। তাঁর ইনিংসে ছিল চারটি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি। মাত্র দু’টি ম্যাচে প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়ে এবং কয়েকটি ম্যাচে পরিবর্ত ফিল্ডার রূপে নেমে জাদেজা বাঁচিয়েছেন ৪১ রান। এরপর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল। তিনি ৯টি ম্যাচ খেলে বাঁচিয়েছেন ৩৩ রান। তাগলেই বোঝা যাচ্ছে, ভারতীয় দলে সীমিত ওভারের ফরম্যাটে রবীন্দ্র জাদেজার অপরিহার্যতা কতখানি। একমাত্র ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টই এটা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে।
স্কোরবোর্ড
নিউজিল্যান্ড: গাপটিল ক কোহলি বো বুমরাহ ১, নিকোলস বো জাদেজা ২৮, উইলিয়ামস ক জাদেজা বো চাহাল ৬৭, টেলর রান আউট ৭৪, নিশাম ক কার্তিক বো হার্দিক ১২, গ্র্যান্ডহোম ক ধোনি বো ভুবনেশ্বর ১৬, লাথাম ক জাদেজা বো ভুবনেশ্বর ১০, স্যান্টনার অপরাজিত ৯, হেনরি ক কোহলি বো ভুবনেশ্বর ১, বোল্ট অপরাজিত ৩, অতিরিক্ত ১৮। মোট (৫০ ওভারে ৮ উইকেটে) ২৩৯। উইকেট পতন: ১-১, ২-৬৯, ৩-১৩৪, ৪-১৬২, ৫-২০০, ৬-২২৫, ৭-২২৫, ৮-২৩২। বোলিং: ভুবনেশ্বর ১০-১-৪৩-৩, বুমরাহ ১০-১-৩৯-১, হার্দিক ১০-০-৫৫-১, জাদেজা ১০-০-৩৪-১, চাহাল ১০-০-৬৩-১।
ভারত: রাহুল ক লাথাম বো হেনরি ১, রহিত ক লাথাম বো হেনরি ১, বিরাট এলবিডব্লু বো বোল্ট ১, ঋষভ ক গ্র্যান্ডহোম বো স্যান্টনার ৩২, কার্তিক ক নিশাম বো হেনরি ৬, হার্দিক ক উইলিয়ামসন বো স্যান্টনার ৩২, ধোনি রান আউট ৫০, জাদেজা ক উইলিয়ামসন বো বোল্ট ৭৭, ভুবনেশ্বর বো ফার্গুসন ০, চাহাল ক লাথাম বো নিশাম ৫, বুমরাহ অপরাজিত ০, অতিরিক্ত: ১৬। মোট ৪৯.৩ ওভারে ২২১। উইকেট পতন: ১-৪, ২-৫, ৩-৫, ৪-২৪, ৫-৭১, ৬-৯২, ৭-২০৮, ৮-২১৬, ৯-২১৭, ১০-২২১। বোলিং: বোল্ট ১০-২-৪২-২, হেনরি ১০-১-৩৭-৩, ফার্গুসন ১০-০-৪৩-১, গ্র্যান্ডহোম ২-০-১৩-০, নিশাম ৭.৩-০-৪৯-১, স্যান্টনার ১০-২-৩৪-২।
নিউজিল্যান্ড ১৮ রানে জয়ী।
ম্যাচের সেরা- ম্যাট হেনরি।