উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
আসলে দুই দলের ক্রিকেট সমর্থকদের কাছে এটা শুধু একটা ক্রিকেট ম্যাচ নয়। বাইশগজের যুদ্ধ। এই ম্যাচের সাফল্য বিশ্বকাপ জিততে না পারার দুঃখ ঘুচিয়ে দেয়। তাই দুই দলের ক্রিকেটারদের কাছেই সমর্থকদের আকুল প্রার্থনা—জেতা চাই! বিশ্বকাপে আজ পর্যন্ত পাকিস্তানের কছে হারেনি ভারত। এই পরিসংখ্যানে বিরাট কোহলিদের পাল্লা অবশ্যই ভারী। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, দু’বছর আগে এই ইংল্যান্ডের মাটিতেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। সেই ম্যাচে নজরের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন দুই পেসার পাকিস্তানে মহম্মদ আমির ও ভারতের যশপ্রীত বুমরাহ। প্রথম জন টেক্কা দিয়েছিলেন দ্বিতীয়জনকে। আমিরি পেসের আগুনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের টপ অর্ডার ব্যাটিং তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছিল। ৬ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১৬ রানের বিনিময়ে আমির তুলে নিয়েছিলেন রহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, শিখর ধাওয়ানের উইকেট। কিন্তু বুমরাহ প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ফখর জামানকে তিনি আউট করেছিলেন। কিন্তু সেটা বাতিল হয়ে গিয়েছিল তিনি নো বল করায়। সেই সুযোগে ফখর জামান সেঞ্চুরি করে পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়ন হতে সাহায্য করেছিলেন। বুমরাহ দেশবাসীর কাছে হয়ে গিয়েছিলেন ‘খলনায়ক’।
এবারও ওল্ড ট্রাফোর্ডে নায়ক হয়ে ওঠার হাতছানি আমির ও বুমরাহর সামনে। দারুণ ছন্দে আছে আমির। যে ইংল্যান্ডে স্পট ফিক্সিংয়ের কারণে তাঁর ক্রিকেট জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। সেখানেই প্রথম বিশ্বকাপেই আশানুরূপ পারফরম্যান্স করছেন পাক পেসারটি। এখনও অবধি দশটি উইকেট নিয়ে শীর্ষে আমির। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাছে নিঃসন্দেহে তিনি বড় চ্যালেঞ্জ। আর সেটা বুঝেই বিরাট কোহলিদের পরামর্শ দিয়ে কিংবদন্তি শচীন তেন্ডুলকর বলেছেন, ‘আমিরের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলতে হবে। অতিরিক্ত সতর্ক হলেই ও মাথা চাড়া দেব। ডট বল খেললে চলবে না। আমাদের ব্যাটিংয়ের বড় স্তম্ভ অবশ্যই কোহলি ও রহিত। শুরুতে ওদের দু’জনকে টার্গেট করবে আমির ও ওয়াহাব রিয়াজ। ওদের ট্র্যাপে পা না দিয়ে স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে হবে।’
ক্রিকেট হল ‘টিম গেম’। সেদিক থেকে ভারত অনেকটাই এগিয়ে। শিখর ধাওয়ানের অনুপস্থিতি ভারতীয় ব্যাটিংকে কিছুটা দুর্বল করলেও তা ভরাট করার মতো ক্রিকেটার রয়েছে কোহলির হাতে। তবে আমির হুংকার থামিয়ে বিশ্বকাপে ভারতের সাফল্যের ধারা এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে কোহলি-রহিত জুটিকেই কিন্তু সেরাটা দিতে হবে। এই ম্যাচে স্নায়ুর চাপ যারা নিতে পারবে, তারাই বাজিমাত করার সুযোগ পাবে। তাই শরীরী ভাষাও ম্যাচের রাশ নিয়ন্ত্রণে মুখ্য ভূমিকা নেবে বলে মত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের।
এবারের বিশ্বকাপে পাকিস্তান কিন্তু বেশ চাপেই আছে। তারা চারটি খেলে জিতেছে মাত্র একটিতে। শ্রীলঙ্কা ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ায় তারা পেয়েছে এক পয়েন্ট। ভারতের কাছে হারলে সরফরাজদের সেমি-ফাইনালে ওঠা আরও কঠিন হবে। সেদিক থেকে অপরাজিত কোহলি বাহিনী। পর পর দু’টি ম্যাচে তারা হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়াকে। গতকাল মিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ায় এক পয়েন্ট পেয়েছে ভারত। তবে পাকিস্তান ম্যাচের আগে অতিরিক্ত বিশ্রাম পেয়ে কিছুটা হলেও খুশি কোহলিরা। শুক্রবার ভারতীয় দল নটিংহ্যাম থেকে ম্যাঞ্চেস্টারে পৌঁছেছে। শনিবার বৃষ্টি না হলে পুরোদমে অনুশীলন করবেন কোহলিরা। আশার কথা, শুক্রবার দুপুরে রোদ ওঠে টানা এক সপ্তাহ বৃষ্টির পর।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ইতিহাস বলছে, এখানে পেসাররা বরাবর সুবিধা পেয়েছেন। সেই পরম্পরা বজায় থাকলে ভারত হয়তো তিন স্পেশালিস্ট পেস বোলার খেলাতে পারে। যশপ্রীত বুমরাহ দারুণ ছন্দে আছেন। ফর্মে ফিরছেন ভুবনেশ্বর কুমার। তাঁদের সঙ্গে খেলতে দেখা যেতে পারে মহম্মদ সামিকেও। সেক্ষেত্রে দুই স্পিনারের মধ্যে একজনকে বসাতে হবে। তাছাড়া পাক ব্যাটসম্যানরা স্পিনটা বেশ ভালোই খেলেন। তাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশ চয়নে যথেষ্ট মুন্সিয়ানার পরিচয় দিতে হবে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে।