নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ময়দানের অপ্রধান দলগুলি নিজেদের মধ্যে জোট বেঁধে আইএফএ’র প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিতেই সচিব উৎপল গাঙ্গুলি চতুর্থবার সচিব পদে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে তিনি এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন। প্রথম আট বছর আইএফএ’কে মোটামুটি টানলেও তাঁর আমলে শেষ চার বছর আইএফএ প্রশাসন মুখ থুবড়ে পড়ে। ১৯৯৫-এর পর আইএফএ’তে সচিব পদে কোনও নির্বাচন হয়নি। ২৪ বছর পর আইএফএ’তে নির্বাচনের হাওয়া ওঠে গত সপ্তাহে। এমনিতে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কুরেশি- গাঙ্গুলি কমিটির রিপোর্ট এখনও পেশ না হওয়ায় উৎপল গাঙ্গুলির টানা চারটি টার্মে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে কোনও অসুবিধা ছিল না। কিন্তু ঘটনা হল, গত চার বছর আইএফএ প্রত্যাশিতভাবে চলছে না। ২০১২-১৩ সাল থেকে ক্লাবগুলি টিফিন খরচ বাবদ অনুদান পেয়েছে মাত্র একবার। ইলিয়ট শিল্ড- বঙ্কিম কাপ দীর্ঘদিন বন্ধ। নার্সারি লিগও নিয়মিত হয়না। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনেক দিন উঠে গিয়েছে। তিন প্রধানসহ বিভিন্ন ডিভিসনের চ্যাম্পিয়ন বা রানার্স দল পুরস্কার পায় না। মোটা অর্থ পাওনা রেফারিদের। তাঁদের বকেয়া প্রতিটি মরশুমে বাড়ছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের ফুটবলকে বাঁচাতে সচিব নির্বাচনের আগে বেশ কিছু ছোট ক্লাবের কর্তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনায় আইএফএ’তে ‘পরিবর্তনের ডাক’ দিয়েছিলেন। সেই পরিবর্তনের হাওয়া দখিনা বাতাসে পরিণত হওয়ার আগেই তিনি সচিব পদে দায়িত্ব ছেড়ে দিলেন বয়সের কারণ দেখিয়ে। যদিও বয়সের তুলনায় তিনি যথেষ্ট ফিট এবং সক্রিয়। আসলে কর্পোরেট জগতে তাঁর বিশাল পরিচিতি আছে। মেঠো রাজনীতির পাঁকে নেমে নির্বাচনে লড়াই করার কোনও ঝুঁকি তাই উৎপলবাবু নিলেন না। গত বছর তিনি অজিত ব্যানার্জিকে সভাপতি করেছিলেন উদ্যোগ নিয়ে। তিনিও অপ্রধান ক্লাবের অকাট্য যুক্তি মেনে নিয়ে ‘নিরপেক্ষ’ থাকার কথা বলেন। গত রবিবার অজিত ব্যানার্জি বর্তমান’কে বলেছিলেন, ‘আমি ফুটবলের পক্ষে।’ তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ার মধ্যে যা বার্তা তা পেয়ে গিয়েছিলেন বিদায়ী সচিব। একদিক থেকে তাঁর আইএফএ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ‘গ্রেসফুল এক্সিট।’ উল্লেখ্য, উৎপল গাঙ্গুলির বয়স এখন ৭৪। চার বছর পর তাঁর বয়স হত ৭৮।
এদিন তিনি বলেন, ‘সভাপতি, চেয়ারম্যান, প্রধান পৃষ্ঠপোষক কোনও পদেই থাকব না।’ উৎপলবাবু জানান, ‘লিও মেসির ম্যাচ আয়োজন সচিব হিসাবে আমার সেরা কাজ। ২০১১ সালে দীর্ঘদিন পর সন্তোষ ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা আমার কাছে সবথেকে তৃপ্তির। তবে আমার আমলে আইএফএ আকাদেমি উঠে যাওয়াটা দুঃখজনক।’ আইএফএ’র এই নয়া নাটকে সংস্থার চেয়ারম্যানের ভূমিকা অনেকটা মেঘনাদের মতো। নতুন গভর্নিং বডিতে চেয়ারম্যানের অনুগামী সংখ্যা প্রায় ৬৫ শতাংশ।