বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের আগে বিরাট কোহলিদের এমন দুর্দশা দেখে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। গত ম্যাচে অ্যাস্টন টার্নার ভারতীয় বোলিংকে নিয়ে কার্যত ছেলেখেলা করেছিলেন। কিন্তু কিছুদিন আগেও এই ভারতীয় বোলিংয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। কেউ কেউ তো আবার এক ধাপ এগিয়ে বলেছিলেন, এটাই নাকি এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা পেস আক্রমণ। সেটাই যদি হয়, তাহলে ৩৫৮ রানের বিশাল স্কোর খাড়া করেও ভারত গত ম্যাচে জিততে পারল না কেন?
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে বিপুল সাফল্যের পর বিশ্বকাপে ভারতীয় দলকে অনেকেই ফেভারিট বলছিলেন। এখন তাঁরাই বলছেন, ভারতকে কিন্তু কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়া। ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলিও বেশ চিন্তিত। গত দু’টি ম্যাচে যেভাবে তাঁদের হারতে হয়েছে, তাতে মোটেও খুশি নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। মহেন্দ্র সিং ধোনির অবর্তমানে বিরাট কোহলির নেতৃত্বে অনেক ফাঁক ফোঁকর চোখে পড়ছে। চাপের মুখে তিনি কার্যকরী সিদ্ধান্ত নিতে অপারগ। পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও যথেষ্ট উন্নতির অবকাশ রয়েছে। তাই বিশ্বকাপের আগে ভারতীয় দল পুরো তৈরি, সেটা দাবি করা উচিত হবে না। তবে ফিরোজ শাহ কোটলায় অস্ট্রেলিয়াকে পঞ্চম ম্যাচে হারিয়ে সিরিজ জিততে পারলে, কোহলিরা অনেকটাই চাপমুক্ত হবেন। আর সেই লক্ষ্যেই রণকৌশল সাজিয়েছে ভারত। তবে গত ম্যাচে ওপেনিং জুটির সাফল্য কোহলির চিন্তা অনেকটাই কমিয়েছে। সেঞ্চুরি হাতছাড়া করলেও রহিত শর্মা অনবদ্য ব্যাটিং করেছিলেন। শিখর ধাওয়ানও এশিয়া কাপের পর প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন গত ম্যাচে। তবে সমস্যার বীজ লুকিয়ে অন্য জায়গায়। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ধারাবাহিকতার বড় অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ধারাবাহিকতার নিরিখে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অনেকটাই এগিয়ে বিরাট কোহলি। তিনি ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা পাবেন। প্রবল চাপ নিয়েও কোহলি সেরাটা মেলে ধরতে পারেন। গত ম্যাচে বড় রান পাননি ঠিকই, তবে সিরিজের নির্ণায়ক লড়াইয়ে কোহলিই কিন্তু ভারতের তুরুপের তাস। অম্বাতি রায়াডুর জায়গায় লোকেশ রাহুল সুযোগ পেলেও তা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেননি। এই ম্যাচে হয়তো ফের রায়াডুকে ফেরানো হতে পারে রাহুলের জায়গায়।
একটা ব্যাপারে জোর গলায় দাবি করা যায় যে, মহেন্দ্র সিং ধোনির বিকল্প কখনই নন ঋষভ পন্থ। শুধু ব্যাটিংয়ে নয়, উইকেটের পিছনেও কিনি ব্যর্থ। মোহালিতে খান দু’য়েক স্টাম্পিংয়ের সুযোগ নষ্ট করেছিলেন তিনি। ক্যাচও পড়েছিল তাঁর হাত থেকে। বেশ নার্ভাস দেখাচ্ছিল ঋষভকে। এই ম্যাচে ফের ব্যর্থ হলে ঋষভের বিশ্বকাপ দলে থাকা কঠিন হবে। সেক্ষেত্রে হয়তো দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক হিসাবে দীনেশ কার্তিককেই বেছে নিতে বাধ্য হবেন জাতীয় নির্বাচকরা। কেদার যাদব, বিজয় শঙ্করের মতো অলরাউন্ডাররা ভারতের লোয়ার মিডল অর্ডারকে শক্তিশালী করেছে ঠিকই। তবে বিজয়কে চার নম্বরে খেলিয়ে দেখে নিতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট।
এই ম্যাচেও ভারত দুই পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে মাঠে নামতে পারে। সেক্ষেত্রে যশপ্রীত বুমরাহ ও ভুবনেশ্বর কুমারের খেলার সম্ভাবনাই বেশি। দুই রিস্ট স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহাল হতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারানোর কিছু নেই। পর পর দু’টি ম্যাচ হেরেও সিরিজে যেভাবে তারা ফিরে এসেছে তা যথেষ্ট ইতিবাচক ও আশাব্যাঞ্জক সাফল্য। উসমান খাওয়াজা দারুণ ছন্দে আছেন। ক্যাপ্টেন অ্যারন ফিনচ ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন। একমাত্র শন মার্শ এখনও অবধি তেমন সুবিধা করতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা পিটার হ্যান্ডসকম্ব। টপ অর্ডারের সঙ্গে মিডল অর্ডারের সেতুবন্ধনের কাজটা সুনিপুণভাবে করছেন তিনি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল টি-২০ সিরিজে যতটা সফল ছিলেন, সেটা একদিনের সিরিজে দেখাতে পারেননি। সেদিক থেকে দেখলে অ্যাস্টন টার্নার, অ্যালেক্স কেরির মতো লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। গত ম্যাচে টার্নার ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল ভারতের যাবতীয় প্রতিরোধ। এই ম্যাচেও টার্নারের দিকে বাড়তি নজর থাকবে। কেরি খেলাটা ধরতে পারেন। প্যাট কামিন্স ও নাথান লিয়ঁ ভালো বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও দলকে সাহায্য করছেন। তবে অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ে সবচেয়ে বড় চমক স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট নিয়ে তিনি দলকে সাহায্য করছেন। ফিরোজ শাহ কোটলায় হাইস্কোরিং ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা কম। স্পিনাররা সুবিধা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে লিয়ঁ-জাম্পা জুটি ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারেন।
ম্যাচ শুরু ভারতীয় সময় দুপুর ১-৩০ মিনিটে।